Homeসব খবরজেলার খবরসোনালী আঁশে নয়, পাটকাঠিতে হাসি ফুটেছে চাষিদের!

সোনালী আঁশে নয়, পাটকাঠিতে হাসি ফুটেছে চাষিদের!

পাটে লোকসান হলেও কৃষকের মুখে হাসি ফুটেয়েছে পাটকাঠি। ফরিদপুরে একাধিক কার্বন ফ্যাক্টরি গড়ে ওঠায় পাটকাঠির ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকরা। ফরিদপুরে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলন হওয়ার পারেও খুশি নন কৃষকরা। পাটের রঙের কারণে কম দাম পাওয়ায় লোকসানের মুখে কৃষকরা। দিন দিন পাটকাঠি বা পাটখড়ির কদর বাড়ছে। আগে শুধু জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার হলেও এখন স্থানীয় কিছু ছাই উৎপাদনের কারখানা হওয়ায় পাটকাঠির কদর বেড়েছে। এ ছাই চারকোল নামে পরিচিত। ফরিদপুরে ডজন খানেক চারকোল কারখানা গড়ে উঠেছে।

এইসব কারখানায় পাটকাঠি পুড়িয়ে তৈরী করা হয় পাউডার বা কার্বন। এই কার্বন থেকে তৈরি হয় কার্বন পেপার, কম্পিউটার ও ফটোকপিয়ারের কালি, আতশবাজি, মোবাইলের ব্যাটারি, প্রসাধনী পণ্য ইত্যাদি। উৎপাদিত কার্বন রপ্তানি করা হচ্ছে চীনে। তাই কৃষকরা পাটকাঠিকে ভালোভাবে শুকিয়ে রক্ষণাবেক্ষন করে ভালো দামে বিক্রি করছে। এতে পাটের লোকসান পাটকাঠি দিয়ে পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

বোয়ালমারী উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের টোংরাইল গ্রামের পাট চাষি কালি কুমার বালা বলেন, আগে পাটখড়ির তেমন চাহিদা ছিলনা। এখন পাইকাররা এসে পাটখড়ি কিনে নিয়ে যাচ্ছে। ১০০ আটি পাটখড়ি ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি করতে পারছি। এখন শুধু পাট বিক্রিতে নয়, পাটখড়ি বিক্রিতেও লাভবান হচ্ছি।

সালথা উপজেলার বাসিন্দা বিধান চন্দ্র মণ্ডল জানান, আগে পাটকাঠি শুধু রান্নার জ্বালানী, ঘরের বেড়া ও ছাউনির হিসেবে ব্যবহার হতো। বর্তমানে পাটকাঠি পানের বরজে ও কার্বন ফ্যাক্টরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে আমরা এখন আমরা পাটের পাশাপাশি পাটকাঠি বিক্রি করেও লাভবান হচ্ছি।

মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ব্যাসদি গ্রামের শাহজাহান হেলাল বলেন, পাট চাষে আমাদের ভালো লাভ হতো। এবছর পাটের রং না আসার কারণে ভালো দাম পাওয়া যায়নি। বর্তমানে কিছু কারখানা গড়ে উঠায় পাটকাঠি ভালো দামে বিক্রি করা যাচ্ছে। আমরা পাটের পাশাপাশি পাটকাঠি বিক্রি করে লাভবান হতে পারছি। আগামীতে আরো বেশি জমিতে পাটের আবাদ করবো।

যশোর, সাতক্ষীরা এলাকা থেকে আসা পাটকাঠি ব্যবসায়ী কাদের সেখ, সিদ্দিকুর রহমান জানান, বিগত ৮-১০ বছর যাবত তারা পাটকঠির ব্যবসা করছেন। আগে অল্প কিছু কারখানা থাকলেও বর্তমানে অনেক কারখানা গড়ে উঠায় পাটকাঠির ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। এখন এই অঞ্চলের পাটকাঠি দিয়ে কারখানার চাহিদা মেটানো কষ্টসাধ্য। তাই বিভিন্ন জেলা থেকে পাটকাঠি সংগ্রহের চেষ্টা করছি। পাটকাঠির দাম ও চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই এখন পাটকাঠির ব্যবসা করে জীবকা নির্বাহ করছেন।

ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জিয়াউল হক বলেন, এবছর জেলায় ৮৭ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। পাটের রং না আসায় ভালো দাম পায়নি চাষিরা। তবে কিছু কারখানা গড়ে উঠায় কৃষকরা পাটকাটির ভালো দাম পাচ্ছেন। ফলে তারা পাটের লোকসান পাটকাঠি দিয়ে পুষিয়ে নিচ্ছেন।

Advertisement