সূর্য ও পৃথিবীর মধ্যকার কক্ষপথে চাঁদ এসে পড়লে চাঁদের ছায়ায় পৃথিবীর একটা অংশ সম্পূর্ণ ঢেকে যায়। এতে সেখানে দিনের বেলায় নেমে আসে অন্ধকার। মহাজাগতিক এ ঘটনাকে বলে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ। ৮ এপ্রিল সোমবার এমনই পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ হবে বলে জানিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
বছরের প্রথম এই পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে মেক্সিকো, আমেরিকার কয়েকটি রাজ্য ও কানাডার নির্দিষ্ট কিছু স্থান থেকে। এছাড়া স্পেন, যুক্তরাজ্য, পর্তুগালসহ কয়েকটি দেশ থেকে আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। তবে সূর্যগ্রহণটি বাংলাদেশ থেকে দেখা যাবে না। মহাজাগতিক এ ঘটনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন বিশ্ববাসী।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার তথ্যমতে, মেক্সিকো, আমেরিকার ১৫টি রাজ্য ও কানাডার নির্দিষ্ট স্থান থেকে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। এর মধ্যে টেক্সাসে সবচেয়ে দীর্ঘ ৪ মিনিট ২৩ সেকেন্ড পর্যন্ত দেখা যাবে এটি।
৮ এপ্রিল সকালে প্রশান্ত মহাসাগর থেকে সূর্যগ্রহণ শুরু হবে। এরপর মেক্সিকো ও আমেরিকার পর বিকেলে কানাডা ও উত্তর আটলান্টিক অতিক্রম করবে। এদিন ক্যারিবীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা, স্পেন, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, পর্তুগাল ও আইসল্যান্ডের নির্দিষ্ট স্থান থেকে আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। এসময় খালি চোখে সূর্যের দিকে তাকানোর বিষয়ে সতর্ক করেছেন জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা।
রয়্যাল অবজারভেটরি গ্রিনউইচের জ্যোতির্বিজ্ঞানী জেক ফস্টার বলেন, সূর্যগ্রহণের সময় খালি চোখে সূর্যের দিকে তাকানো অনেক বিপজ্জনক। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির বিকিরণে চোখের কোমল টিস্যু নষ্ট হয়ে স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই এটি দেখতে হলে বিশেষ সানগ্লাস পরা উচিত।
এদিকে সোমবার যে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ হতে চলেছে, তার বিশেষত্ব রয়েছে। যে কারণে অনেকে একে বিরল বলেও অভিহিত করছেন। কারণ, এই ধরনের গ্রহণ সচরাচর দেখা যায় না।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সোমবারের গ্রহণের বিশেষত্ব হলো এর স্থায়িত্ব। অপেক্ষাকৃত বেশি সময় ধরে এই গ্রহণ স্থায়ী হবে। টানা চার মিনিট চাঁদের ছায়ায় সম্পূর্ণ ঢেকে থাকবে সূর্য, যা গত ৫০ বছরে কখনও কোনো গ্রহণেই হয়নি। গ্রহণের সময়ে ওই চার মিনিট ধরে সূর্যের বাহ্যিক স্তর করোনার আভা স্পষ্ট দেখা যাবে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
এরপর ২০২৬ সালে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ হবে। যা গ্রিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড ও স্পেনের উত্তর প্রান্ত থেকে দেখা যাবে।