Homeসব খবরজেলার খবরদিনে ভয় হিটস্ট্রোকের, চাঁদের আলোয় ধান কাটছেন চাষিরা

দিনে ভয় হিটস্ট্রোকের, চাঁদের আলোয় ধান কাটছেন চাষিরা

সারা দেশে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এই দাবদাহের ফলে বেশ বিপাকে পড়েছেন শরীয়তপুরের বোরো ধানচাষিরা। অতিরিক্ত গরমে দিনের বেলা পাকা ধান কাটতে পারছেন না। তাই বাধ্য হয়ে ধান কাটার সময় হিসেবে রাতের বেলা বেছে নিয়েছেন অনেক চাষি।

শরীয়তপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার ছয়টি উপজেলায় ২৫ হাজার ৫২৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এ বছর জেলায় বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৬২৭ মেট্রিক টন। তবে একটানা চলা দাবদাহে ধানের উৎপাদনে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটবে বলে ধারণা করছে কৃষি বিভাগ।

সরেজমিনে বেশ কয়েকটি ধানের জমিতে গিয়ে দেখা যায়, মাঠজুড়ে উঁকি দিচ্ছে সোনালি ধান। অধিকাংশ জমির ধান পেকে গেছে। দিনের বেলা প্রখর রোদ থাকায় রাতের বেলা চাঁদের আলোতে ধান কাটছেন চাষিরা।

চর কাশাভোগ এলাকার চাষি মিজান শিকদার। এ বছর ৮০ শতাংশ জমিতে করেছেন বোরো ধানের চাষ। ধানের ফলন ভালো হওয়ায় অনেকটা খুশি এ চাষি। তবে বিপত্তির সৃষ্টি হয় ধান পাকার পর। প্রচণ্ড দাবদাহে দিনের আলোতে ধান কাটতে রাজি হচ্ছিলেন না অনেক কিষান। পরে রাতের বেলা ধান কাটার সিদ্ধান্ত নিয়ে চার কৃষককে নিয়ে ধান কাটা শুরু করেন মিজান। রাত ৯টা থেকে শুরু হয়ে ভোর ৫টা পর্যন্ত চলে এ ধান কাটা। এতে অনেকটাই স্বস্তি মিলেছে তাদের।

মিজান শিকদার বলেন, ‘আমরা সব সময় দিনের বেলাতেই ধান কাটি। এ বছর প্রচণ্ড তাপের কারণে দিনের বেলা কিষান পাওয়া যায়নি। এই নিয়ে আমি বেশ বিপাকে পড়ি। পরে আমার এক ভাই রাতের বেলা ধান কাটার পরামর্শ দিলেন। কিষানদের বলতেই তারা রাজি হয়ে গেলেন। যখন দিনের গরম কমে যায়, তখন আমরা ধান কাটার কাজ শুরু করি।’

আঙ্গারিয়া এলাকার ধানচাষি আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি রাতের বেলায় কিষান নিয়ে ৪০ শতাংশ জমির ধান কাটার কাজ শুরু করেছি। দিনের বেলা হিট স্ট্রোকের ভয়ে অনেকেই ধান কেটে দিতে রাজি হননি। রাতের বেলা জমিতে যেমন বাতাস থাকে তেমনি ঠাণ্ডাও থাকে। আমি মনে করি, বর্তমানে রাতেই ধান কাটার উপযুক্ত সময়।’

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) মোহাম্মদ রিয়াজুর রহমান বলেন, ‘প্রচণ্ড দাবদাহে কৃষকদের দিনের বেলা ধান কাটা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতিরিক্ত গরমে কাজ করলে তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। তাই যারা এই গরমে মাঠে কাজ করবেন তাদের প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পানের পাশাপাশি ছায়ায় বিশ্রাম নিতে হবে।’

রাতের বেলা ধান কাটার বিষয়ে চাষিদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের জেলার বিভিন্ন জায়গায় রাতে ধান কাটা হচ্ছে। এতে হিট স্ট্রোক এড়ানো সম্ভব হচ্ছে। তবে এসব চাষি যদি আমাদের হারভেস্টারগুলো ব্যবহার করেন তাহলে আরও দ্রুত ধান সংগ্রহ করতে পারবেন।’

Advertisement