নাট্যজন ও অভিনেতা বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদের একটি মন্তব্য নিয়ে কয়েক দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। তার ভাষ্যমতে, ‘এখন রুচির দুর্ভিক্ষ চলছে। এর মধ্য দিয়েই হিরো আলমের উত্থান হয়েছে।’
নাট্যজন মামুনুর রশীদের এই বক্তব্যে নাটক ও চলচ্চিত্র অঙ্গনের বেশির ভাগ মানুষই সহমত পোষণ করেছেন। তবে কেউ কেউ আবার এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে মামুনুর রশীদকে নিয়ে নে’তিবাচক সমালোচনাও করেছেন। কেউ কেউ তাকে কাঠগড়ায়ও দাঁড় করিয়েছেন!
সাম্প্রতিক এই ইস্যুতে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি স্ট্যাটাসে নিজের অভিব্যক্তি তুলে ধরেছেন চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক। পাঠকদের জন্য চিত্রনায়ক সাইমন সাদিকের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
শক্তিমান আর কেহেরমানের পার্থক্য তো আপনাদের বোঝার কথা না। আপনারা তো টিনের ফুটো দিয়ে বিটিভি দেখার স্বাদ পাননি। আপনাদের তো ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের বাকের ভাইকে খোঁজার জন্য ঝড় বৃষ্টির রাতে বৃষ্টিতে ভিজে বাঁশের অ্যান্টেনা ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়নি। পরিবারের মুরুব্বিদের হাতের আঙুল ধরে সিনেমা হলে হাজারো দর্শকদের মাঝে দেখা হয়নি ‘দীপু নাম্বার ২’। কীভাবে বুঝবেন বাঙালি সংস্কৃতির আবেগ?
আবেগ! সেটা আপনার থাকারও কথা না! সহজলভ্য ইন্টারনেট আমাদের মাথা নিচু করে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে, কারও মৃত্যু, কারও অসুস্থতা, কারও অপারগতায় হা হা রিয়েক্ট দেওয়া! কষ্ট হয়।
আমাদের মাথা নীচু হয়ে যাচ্ছে। কোনটা সংস্কৃতি, কোনটা অপসংস্কৃতি- সেটা বোঝানোর ক্ষমতা এখন মুরুব্বিদের হাতে নেই! কারণ আমরা এখন সবচেয়ে বেশি জ্ঞানী! এটার জন্য আসলে আমরাই দায়ী। এ দায় একদিন আপনাকে, আমাকে আরও বেশি ভুগিয়ে তুলবে। কিন্তু আফসোস সেদিন হাজার চেষ্টা করেও নতুন প্রজন্মের কাছে আমার মাথা তুলে দাঁড়াতে পারব না! এটা ভাবতে ভাবতে মাথা আরও নত হয়ে যাচ্ছে!
ক্ষমা করবেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। আমরা মাথা উঁচু করতে পারছি না। এখানেও নিশ্চয় প্রচুর হা হা রিয়েক্ট পড়বে, সেটাও ভাবছি। তবুও লিখবো, বলবো- ক্ষমা করো শিল্প, ক্ষমা করো সংস্কৃতি, ক্ষমা করো বাংলাদেশ।