Homeসব খবরক্রিকেটতীরে এসে তরী ডুবলো বাংলাদেশের

তীরে এসে তরী ডুবলো বাংলাদেশের

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাঁচামরার ম্যাচে ১৮৩ রান করে নিজেদের কাজ সেরে রেখেছিল বাংলাদেশের ব্যাটাররা। তবে, ছন্নছাড়া বোলিংয়ের খেসারত দিয়ে এশিয়া কাপের এবারের আসর থেকে ছিটকে গেলো টাইগাররা। শেষ ওভার পর্যন্ত গড়ানো ম্যাচে বাংলাদেশ হার দেখলো ২ উইকেটে। বাংলাদেশের দেয়া ১৮৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতে স্লথ গতিতে খেললেও সময়ের সাথে সাথে খোলস ছাড়তে শুরু করেন শ্রীলঙ্কান দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস। তবে ৩ উইকেট নিয়ে তাদের সেই উড়ন্ত যাত্রায় বাধ সাধেন পেসার এবাদত হোসেন।

প্রথম ৩ ওভারে স্কোরকার্ডে শ্রীলঙ্কার রান ছিল মোটে ১৩। তবে মোস্তাফিজ ও সাকিব আল হাসানের পরের দুই ওভারে চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি ছুটিয়ে ৫ ওভারেই ৪৪ রান তুলে ফেলেন লঙ্কান ওপেনাররা। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে বোলিংয়ে আসেন এবাদত হোসেন। তার ১৪৫ কিলোমিটার গতির বলে বিভ্রান্ত হতে থাকেন লঙ্কান ব্যাটাররা। ওভারের তৃতীয় বলে এই পেসেই নিশাঙ্কাকে মোস্তাফিজের ক্যাচ বানান। ১৯ বলে ২০ রান করেন নিশাঙ্কা। একই ওভারের শেষ বলে আবারও এবাদতের আঘাত। এবার ফেরেন ওয়ান ডাউনে নামা চারিথ আসালাঙ্কা।

উইকেট যেতে পারতো সপ্তম ওভারেও। মেহেদীর করা শেষ বলে স্টাম্পের পেছনে ক্যাচ দেন কুশল মেন্ডিস। তবে মেহেদীর পা লাইন অতিক্রম করায় নো বল ডাকেন আম্পায়ার। দলীয় অষ্টম ওভারে আবারও বলে আসেন এবাদত। এবার এবাদতের শিকার ধানুষ্কা গুনাতিলাকা। দারুণ ক্যাচ ধরেন তাসকিন। ৭৭ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় লঙ্কানরা। নাইমের ক্যাচ বানিয়ে তাকে ফেরান তাসকিন।

তবে এরপর দারুণ এক জুটি গড়েন ওপেনিংয়ে নামা মেন্ডিস ও অধিনায়ক দাসুন শানাকা। বাংলাদেশকে বিপদ সংকেত দিয়ে ৩৪ বলে ৫৪ রান তোলেন এই দুই ব্যাটার। তবে ১৩১ রানে বারবার জীবন পাওয়া মেন্ডিস ও ১৩৯ রানে হাসারাঙ্গা ফিরলে জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয় বাংলাদেশের। এর মাঝে এক ওভারে ২২ রান দেন প্রথম দুই ওভারে বিধ্বংসী বল করা এবাদত। লাইন লেন্থ হারিয়ে দুই ছক্কা ও একটি করে নো বল ও ওয়াইড দেন তিনি।

শেষ দুই ওভারে ২৫ রান দরকার ছিল শ্রীলঙ্কার। তবে উনিশতম ওভারে ১৭ রান দিয়ে বাংলাদেশকে চূড়ান্ত বিপদের মুখে ঠেলে দেন প্রথম দুই ওভারে আগুনে বোলিং করা এবাদত। শেষ ওভারে ৮ রান প্রয়োজন হলে বোলিংয়ে আসেন মেহেদি হাসান। প্রথম বলে ১ রান দিলেও দ্বিতীয় বলে চার খান। মেহেদীর তৃতীয় ডেলিভারিতে নো বলের সাথে ২ রান নেন লঙ্কান ব্যাটাররা। ফলে ২ উইকেটের জয় পায় তারা। বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট নেন এবাদত। এজন্য তিনি খরচ করেন ৫১ রান। ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ২ উইকেট তাসকিনের।

এর আগে, টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ ইতিবাচক ক্রিকেট খেলতে থাকেন দুই ওপেনার। পাওয়ার ক্রিকেটে আসতে থাকে বাউন্ডারি। যদিও ১৯ রানের মাথায় আসিথা ফার্নান্দোর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন সাব্বির। তবে ওপেনিংয়ে নামা আরেক ব্যাটার মিরাজ মুগ্ধ করছেন তার ধুমধারাক্কা ব্যাটিংয়ে।

উইকেটের চারদিকে শট খেলে পাওয়ার প্লের ফায়দা তোলেন মিরাজ। কখনো ডাউন দ্য উইকেটে এসে বাউন্ডারি। কখনো স্কুপে ছক্কা। পাওয়ার প্লেতে মিরাজ করেন ৩৮ রান। খেলেন মাত্র ২৪ বল। যেখানে দলের মোট রান ৫৫। তবে ইনিংসের সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে বাংলাদেশ শিবিরে আঘাত হানেন লেগ স্পিনার ওয়ানিদু হাসারাঙ্গা। তার গুগলি বুঝতে না পেরে দলীয় ৫৮ রানের মাথায় বোল্ড হন মিরাজ। যাওয়ার আগে ২৬ বলে ৩৮ করেন মিরাজ। যেখানে সমান দুইটি করে চার ও ছক্কা হাঁকান বাংলাদেশের ‘নতুন’ ওপেনার।

মিরাজের বিদায়ের পর উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মুশফিকও। দলীয় ৬৩ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৪ রানে ফেরেন এই উইকেটকিপার। শ্লথ গতিতে ইনিংস শুরু করলেও খোলস ছেড়ে বের হওয়া শুরু করেছিলেন তিন নাম্বারে মাঠে নামা সাকিব। তবে দলীয় ৮৭ রানে ব্যক্তিগত ২৪ রানের ইনিংস খেলে ফেরেন টাইগার অধিনায়ক।

এরপর দারুণ এক জুটি গড়েন আফিফ হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মাত্র ৩৭ বলে দুজনে মিলে গড়েন ৫৭ রানের জুটি। তবে ১৪৪ রানে আফিফ ও ১৪৭ রানে রিয়াদ ফিরলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। আফিফ ২২ বলে ঝড়ো ৩৯ ও সমপরিমাণ বল খেলে ২৭ রান রিয়াদের। তবে বাংলাদেশের চাপ কমান ফর্মে থাকা মোসাদ্দেক। মাত্র ৯ বলে অপরাজিত ২৪ রানের কার্যকরী ক্যামিও খেলেন মোসাদ্দেক। ৬ বলে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন তাসকিন। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রানে।

Advertisement