Homeঅন্যান্যদেশের প্রথম নারী বনরক্ষী দিলরুবা মিলি

দেশের প্রথম নারী বনরক্ষী দিলরুবা মিলি

নারীদের পদচারণা এখন দেশ ও বিদেশে সর্বত্র। ঘরে কিংবা ঘরের বাইরে সবখানেই সমানতালে সাহসিকতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে নারী। বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেও অবদান রাখছেন তারা। সাহসী নারীদের তালিকায় এবার যুক্ত হলেন দিলরুবা আক্তার মিলি, যিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী বনরক্ষী।

দিলরুবা আক্তার মিলি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করেই হতে চেয়েছিলেন বনরক্ষী। নিজ উদ্যোগ ও চেষ্টায় হয়েছেনও তাই। এখন তিনি একজন পরিপূর্ণ বনরক্ষী। এর থেকে বড় বিষয়, এই দিলরুবা আক্তার মিলিই বাংলাদেশের প্রথম নারী বনরক্ষী।

মিলি বলেন, ‘নদী ভাঙন ও ঝড়বৃষ্টি থেকে বাঁচায় গাছ। তাই গাছপালার প্রতি বরিশালের মানুষের আলাদা টান আছে। পরিবেশ-প্রকৃতি আমাদের খুবই আপন। সেই জায়গা থেকে চিন্তা ছিল এমন কিছু করা যায় কি-না। এই ভাবনা থেকেই বনরক্ষী পদে আবেদন করি। সুযোগও পেয়ে যাই। চাকরিতে ঢোকার পর জানতে পারি এই পদে আমিই প্রথম নারী।’

একজন বনরক্ষী কর্মকর্তা হিসেবে নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে মসৃণভাবে বহুদূর এগিয়ে যেতে চান মিলি। তিনি বলেন, ‘স্টুডেন্ট লাইফ থেকেই বনজঙ্গল নিয়ে কাজের আগ্রহ ছিল আমার। এ জন্য পড়ালেখা শেষ করেই বনরক্ষী হওয়ার উদ্যোগ নেই। প্রথমে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকলেও পরিবারের সহযোগিতা ছিল।’

মিলি বলেন, ‘বনরক্ষী হওয়ার জন্য সিদ্ধান্তে অবিচল থাকায় পরীক্ষায় অংশ নেই। এরপর ভাইভা শেষ হয়। তারপর ট্রেনিংয়ের জন্য পাঠানো হয় রাজশাহী পুলিশ একাডেমিতে।’

তিনি বলেন, ‘একজন নারী বনরক্ষী হলেও আমি ক্যারিয়ারে দেখেছি, এ পেশায় নারীসংখ্যা শূন্যের দিকে। ফলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়। শুরুতে কিছুটা একা ও চ্যালেঞ্জিং মনে হলেও এখন নিজের ওপর অনেক আত্মবিশ্বাস বেড়েছে আমার।’

মিলি জানান, রাজশাহীতে প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে বিরল অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না তাকে।

তিনি জানান, প্রথমবার গেট দিয়ে ঢোকার সময় নিরাপত্তারক্ষীরা বললেন, ‘মেয়েরা এ চাকরি করে না। আপনি যান।’ কাগজ দেখানোর পর তারা অবাক হন ও সহযোগিতা করেন।

দিলরুবা বলেন, ‘ওই সময় ২০৩ জন পুরুষের মধ্যে একমাত্র আমি নারী হিসেবে যোগ দিই। সেখানে পরীক্ষা ও ভাইভায় উপস্থিত হতে প্রথমে সমস্যা হলেও পরে তা মোকাবিলা করে এগিয়ে যাই। বেশ কয়েকজনের সহযোগিতায় ধীরে ধীরে নানা চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে থাকি। এরপর ঢাকায় বনরক্ষী হিসেবে ২০১৬ সালে যোগ দিই। তখন থেকে এখন পর্যন্ত জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে বনরক্ষী হিসেবে কর্মরত আছি।’

দিলরুবা বলেন, ‘শুরুর দিকে যখন চাকরি করতে ঢাকায় আসি, তখন থাকা-খাওয়াসহ নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে চলাসহ নানা প্রতিকূলতা ছিল। তবে যত দিন যাচ্ছিল তত আত্মবিশ্বাসী হতে থাকি। বাড়তে থাকে আমার কাজের গতি ও আস্থা। আমি চাই প্রতিকূলতাকে জয় করে আমার মত এই পেশায় আরও অনেক মেয়েরা আসুক।’

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে বনরক্ষী হিসেবে রাজধানী ঢাকায় যোগ দেন মিলি। শুরু থেকেই জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে কর্মরত।

Advertisement