Homeসব খবরবিনোদনএখনো সিনেমায় আশার আলো দেখেন আলমগীর

এখনো সিনেমায় আশার আলো দেখেন আলমগীর

এই সময়ে এসেও অনেকের মধ্যে সিনেমা নিয়ে হতাশা দেখা গেলেও নায়ক আলমগীর এত কিছুর পরও সিনেমায় আশার আলো দেখেন। তিনি বিশ্বাস করেন, সিনেমায় সুদিন ফিরবেই। শুধু সিনেমার প্রত্যেকটি সেক্টরে সবার আন্তরিক অংশগ্রহণই জরুরি। নায়ক আলমগীর বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অভিভাবক। সিনেমা সংশ্লিষ্ট নানান সমস্যায় সবাই তার কাছেই সমাধান খুঁজেন।

একজন নায়ক হিসেবেই আন্তর্জাতিকভাবে তিনি সমাদৃত। পাশাপাশি একজন প্রযোজক, পরিচালকও বটে। আলমগীর আদ্যোপান্ত একজন সিনেমার মানুষ, সিনেমাপ্রেমী মানুষ। তিনিই বাংলাদেশের বর্ষীয়ান, বরেণ্য গুণীজন, নন্দিত অভিনেতা। একজন আলমগীর নীরবে নিভৃতে যেমন সিনেমার মানুষের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়িয়েছেন, ঠিক তেমনি সাধারণ মানুষেরও বিপদে পাশে থেকেছেন। এ কারণেই তিনি আলাদা। এ কারণেই তিনি মহামানব, সিনেমার মহানায়ক। তবে নিজেকে নিয়ে অভিনয়ের বাইরে অন্য কিছু নিয়ে তার কোনোরকমের প্রচারণাও ছিল না।

শুধু অভিনয়কেই ভালোবেসে একজন অভিনেতা হওয়ারই চেষ্টা করেছেন তিনি। অভিনয়ের জন্য কোনো বিশেষণও তাকে পুলকিত করে না। বাংলাদেশের সিনেমায় অভিনয় করে অভিনয় জীবনের চলার পথে নায়ক আলমগীর আজ অভিনয় জীবনের সুবর্ণজয়ন্তী পূরণ করেছেন। একজন অভিনেতা হিসেবে কলেজ জীবনে নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে অভিনয়ে যাত্রা শুরু হলেও ১৯৭২ সালের ২৪ জুন আলমগীর কুমকুম পরিচালিত ‘আমার জন্মভূমি’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। ১৯৭৩ সালের মাঝামাঝিতে ‘আমার জন্মভূমি’ মুক্তির আগেই সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার ‘দস্যুরানী’, আজিজুর রহমানের ‘অতিথি’, আলমগীর কুমকুমেরই ‘মমতা’ ও মোহর চাঁদের ‘হীরা’ সিনেমায় কাজ শুরু করেন। ১৯৭৩ সালের ২৪ অক্টোবর মুক্তি পায় ‘আমার জন্মভূমি’ এবং ২৮ অক্টোবর মুক্তি পায় ‘দস্যুরানী’। এরপর থেকে আজ অবধি ২২৫টিরও বেশি সিনেমাতে তিনি অভিনয় করেছেন। বাংলাদেশে জুটি হিসেবে আলমগীর-শাবানাই (১০৬টি সিনেমা) সবচেয়ে বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তার প্রযোজিত প্রথম সিনেমা ‘ঝুমকা’।

পরিচালিত প্রথম সিনেমা ‘নিষ্পাপ’। মোস্তফা মেহমুদের ‘মনিহার’ সিনেমায় তিনি প্রথম গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা ও সত্য সাহার সুরে প্লেব্যাক করেন। কামাল আহমেদ পরিচালিত ‘মা ও ছেলে’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তিনি প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। এরপর আরো আটবার (বাংলাদেশের নায়কদের মধ্যে সর্বোচ্চ) জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। আলমগীর পরিচালিত সর্বশেষ সিনেমা ‘একটি সিনেমার গল্প’। তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ‘আজীবন সম্মাননা’প্রাপ্ত নায়ক। নায়ক আলমগীরের অভিনয় জীবনের সুবর্ণজয়ন্তীতে তার স্ত্রী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সঙ্গীতশিল্পী রুনা লায়লা, তার বেশ কিছু সিনেমার নায়িকা নন্দিত নায়িকা ববিতা ও তার কন্যা জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী আঁখি আলমগীর নায়ক আলমগীরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছেন।

রুনা লায়লা: আমার মতো আলমগীর সাহেব ‘ওয়ান অব দ্য ফাইনেস্ট অ্যাক্টর অব বাংলাদেশ’। শুরু থেকেই আমি তার অভিনয়ের ভীষণ ভক্ত। তিনি খুব ন্যাচারাল অ্যাক্টিং করেন। পুরনো সিনেমাগুলো যখন দেখি আমার কাছে এখনো তার অভিনয় ফ্রেশ মনে হয়। তিনি অনেক ভালো ভালো সিনেমায় অভিনয় করেছেন। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় এখনো আরো ভালো স্ক্রিপ্ট পেলে আরো ভালো অভিনয় করতে পারতেন। কারণ অভিনয়ে তার এখনো আগ্রহ আছে প্রবল। আর তিনি যে কত বড় মনের মানুষ তা কেউ কেউ জানেন, আবার অনেকেই জানেন না। একদিন রাজধানীতেই একটি সিগন্যালে গাড়ি থামার পর আমার কাছে এসে একটি ছেলে সালাম দিয়ে বলল, ম্যাডাম আমি এক সময় ভিক্ষা করতাম। কিন্তু স্যার পথে একদিন পেয়ে আমাকে কিছু টাকা দিয়েছিলেন। সেই থেকে আমি ভিক্ষা ছেড়ে টুকটুক ব্যবসায় করছি। স্যার আমার জীবন বদলে দিয়েছেন। এই ঘটনা কিন্তু আমি জানতাম না।

Advertisement