নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে কলার ব্যাপক উৎপাদন ও তা ভালো দামে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। এই জেলায় অধিক পরিমানে কলা উৎপাদনের ফলে বড় একটি বাজার গড়ে উঠে। যেখানে স্থানীয় চাষিরা কলা নিয়ে আসার পাশাপাশি আশে পাশের জেলা থেকেও চাষিরা এই বাজারে তাদের উৎপাদিত কলা নিয়ে আসেন। ফলে এই বাজার থেকে প্রতিদিন প্রায় ২৫-৩০ কলা সারাদেশে সরবরাহ হয়ে থাকে। কম খরচে বেশি লাভ হয় বলে জয়পুরহাটের চাষিরা কলা চাষে ঝুঁকছেন। অনেকে শুধু কলা চাষেই তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন।
সারাদেশে কলার চাহিদা দিন দিন বাড়তে থাকায় জয়পুরহাটের চাষিরাও চাষের পরিমান বাড়িয়ে দিয়েছেন। জেলার জামালগঞ্জে কলা কেনাবেচার বিশাল একটি বাজার সৃষ্টি হয়। এখন থেকে ট্রাকে করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, চাঁদপুর সহ বিভিন্ন জেলা উপজেলায় সরবরাহ করা হয়। এই বাজারে স্থানীয় চাষিদের পাশাপাশি আশপাশের মিলিয়ে প্রায় ৩০-৩৫টি জেলার চাষিরা কলা বিক্রি করতে আসেন।
চলতি বছর জয়পুরহাট জেলায় ৭৫০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়েছে। যাতে প্রায় ৪০ হাজার টন কলা উৎপাদন হবে। এই জেলার উপজেলাগুলোর মধ্যে সদর উপজেলার জামালগঞ্জ ও ভাদসায় কলার বেশি চাষ হয়। এরমধ্যে অনেকেই তার জীবন নির্বাহ করেন কলা চাষের মাধ্যমে। বর্তমানে জেলায় ৩ হাজার ২০০ জন চাষি কলা চাষের সাথে জড়িত।
সদর উপজেলার মহুরুল গ্রামের কৃষক রোস্তম আলী বলেন, কলা চাষে খরচ কম লাগে। আর অন্যান্য ফসলের মাতো এর রোগবালাই নেই। তাই এর চাষে লাভ বেশি। চারা রোপনের ৯ মাসের মধ্যেই কলার ফলন পাওয়া যায়। বিঘাপ্রতি ৩০০-৩৫০টি চারা রোপন করা যায়। আর অন্তত ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার কলা বিক্রি করা যায়। বিঘাপ্রতি ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ হয়।
সদর উপজেলার জামালগঞ্জ এলাকার মাতাপুর গ্রামের কলাচাষি ওয়াজেদ আলী বলেন, কলা চাষের মতো বিক্রিতেও কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না। পাইকররা জমি থেকেই কিনে নিয়ে যায়। আবার হাটে নিয়ে গেলেও ভালো দামে বিক্রি করতে পারি।
কলা ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, জয়পুরহাটের উৎপাদিত কলার বেশ সুনাম ও চাহিদা রয়েছে। এখানকার কলা খেতে খুবই সুস্বাদু। আমরা এখানকার কলা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকি।
জামালগঞ্জ বাজারে সিলেট থেকে কলা কিনতে আসা ব্যবসায়ী ইমদাদুল হক বলেন, এখানকার কলার স্বাদ ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। আমরা এখান থেকে কলা সংগ্রহ করে সিলেট, কুমিল্লা সহ বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে থাকি। তাই এখান থেকে প্রতিদিনই ট্রাকে করে কলা নিয়ে যাই।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রাহেলা বেগম বলেন, জয়পুরহাটের চাষিরা বিভিন্ন জাতের কলা চাষ করেন। তাই চাষিরা উৎসাহ নিয়ে কলা চাষে ঝুঁকছেন। আমরা চাষিদের পরামর্শ ও সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে আসছি।