ছাগলের এখন অন্যতম খাবার হচ্ছে ভাত, মাড়, কাঁঠালপাতা ও ভুসি। ঘাসের পরিবর্তে কাঁঠাল পাতার চাহিদা বাড়ায় অনেকেই এ পাতা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন স্বাচ্ছন্দ্যে। তেমনি একজন রংপুর নগরীর রবার্টসন্সগঞ্জ এলাকার হানিফুর রহমান। মাঠ কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে ঘাসের ওপর। ফলে পরিবর্তন এসেছে ছাগলের খাদ্যাভ্যাসেও।
প্রতিদিন রংপুর নগরীর সিটি বাজার, টাউনহল এলাকায় তিনি কাঁঠালপাতা বিক্রি করেন। শুরুতে সামান্য আয় হলেও দিনে দিনে তা বাড়ছে। এখন প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় হয় তার। নগরীর টাউনহল এলাকায় গিয়ে দেখা মেলে হানিফুর রহমানের সঙ্গে। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে কাঁঠালপাতা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি।
হানিফুর রহমান জানান, ১৩ বছর আগে পেশা পরিবর্তন করে তিনি কাঁঠালপাতা বিক্রি শুরু করেন। শুরুতে সিটি বাজারের সামনে রাস্তার পাশে বসে পাতা বিক্রি করতেন। এখন নিজের ভ্যানে করে চালাচ্ছেন কাঁঠালপাতা বিক্রির এ ব্যবসা। কাঁঠালপাতার জন্য তিনি পুরো গাছ কিনে নেন। প্রতি গাছ সর্বনিম্ন ৪০০ থেকে ১১০০ টাকায় কিনে থাকেন। তারপর সেই গাছের পাতা কেটে নগরীর সিটি বাজার ও টাউনহল এলাকায় বিক্রি করেন। পাতার আঁটি বিক্রি করেন ১০ টাকা, তবে ৩ আঁটি কিনলে ২৫ টাকায় বিক্রি করেন। নির্ধারিত ক্রেতা রয়েছেন যারা প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময়ে এসে এ পাতা কিনে থাকেন।
ক্রেতা মকিদুল ইসলাম জানান, দুটি খাসি রয়েছে তার। তিনি প্রতিদিন ২৫ টাকায় ৩ আঁটি পাতা কেনেন। এভাবে প্রায় ৫০ থেকে ৭০ জন ক্রেতা রয়েছেন যারা প্রতিদিন কাঁঠালপাতা কেনেন হানিফুরের কাছ থেকে।আরেক ক্রেতা রফিক মিয়া জানান, তার বাসায় ৩টি ছাগল রয়েছে। এ জন্য প্রতিদিন ৫০ টাকায় ৬ আঁটি কাঁঠালপাতা কেনেন তিনি। একদিন না পাওয়া গেলে খুব সমস্যায় পড়তে হয় তাকে।
রিকশাচালক আরিফুল জানান, তিনি দুটি খাসি পালন করেন। খাসিকে ভুসির পাশাপাশি কাঁঠালপাতা খাওয়ান। আগে ভাত খাওয়াতেন, এখন চালের দাম বাড়ায় কাঁঠালপাতা ও ভুসি খাওয়ান।
বছরের কয়েক মাস বিক্রি হলেও কাঁঠাল ধরার আগে আগে আর কেউ পাতা বিক্রি করেন না। তখন সাময়িকভাবে কয়েক মাস বন্ধ থাকে পাতা বিক্রি। নগরীর কয়েকটি স্থানে কাঁঠালপাতা বিক্রি করেন তিনি।