Homeসব খবরজেলার খবরমিরাশা বাজারে প্রতিদিন আড়াইশো কোটি টাকার রসুন বিক্রি!

মিরাশা বাজারে প্রতিদিন আড়াইশো কোটি টাকার রসুন বিক্রি!

লাভবান হতে পারছেন এইখনাকার স্থানীয় কৃষক, আড়তদার ও পাইকাররা। জাজিরা উপজেলার মিরাশা চাষি বাজারে প্রতিদিন প্রায় আড়াই কোটি টাকার রসুন বিক্রি হচ্ছে। পদ্মা সেতু হওয়ার পর যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় সারাদেশ থেকে ব্যবসায়ীরা এইখানে আসতে পারছে। ফলে বেচা-কিনা আগের থেকে অনেক বেড়েছে।

মিরাশা চাষি বাজারে মশলা ও শাক সবজির পাইকারি দোকান রয়েছে মাত্র কয়েকটি। এর মধ্যে রসুন বেচাকেনার দোকানে রয়েছে ৭০টি। এসব দোকানে নারী-পুরুষ সবাই কাজ করে। স্থানীয় কৃষকরা রসুনের পাশাপাশি আর অনেক সবজি নিয়ে আসে বাজারে বিক্রি করার জন্য।

স্থানীয় চাষি নুরুল হক বলেন, আমার রসুন চাষে প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর রসুনের দাম ভাল পাচ্ছি। এবার রসুনের আমদানি না হলে লাভবান হতে পারব বলে আশা করছি। প্রতি বিঘা জমির রসুন বাজারে বক্রি করছি ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

বাজারের আড়তদার আব্দুল জলিল বলেন, প্রতি কেজি রসুন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা দরে। চাষি বাজার থেকে রসুন নাটোর, খুলনা, যশোর, চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা, রাজশাহী, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যায়। দেশের প্রায় সব জেলা থেকেই পাইকার এসে আমাদের থেকে কিনে নিয়ে যায়।

আব্বাস উদ্দিন নামে এক পাইকার বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জের ভুলতা থেকে এসেছি। পদ্মা সেতুর কারণে ঢাকা থেকে মাত্র দুই ঘণ্টায় চাষি বাজারে পৌঁছাতে পারি। অল্প সময়ে মালামাল কিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিতে পারি। ব্যবসা-বাণিজ্য ভালোই চলছে।

গোপালগঞ্জ থেকে আসা পাইকার রেজাউল করীম বলেন, আমি প্রতিদিন চাষি বাজারে রসুন কিনতে আসি। এই বাজারের রসুন অন্যান্য এলাকার রসুনের তুলনায় বেশ ভালো। তাই এই বাজার থেকেই সব সময় রসুন কিনে নিয়ে যায়।

রুজিনা নামে এক নারী শ্রমিক বলেন, চাষি বাজারে কাজ করে সংসার খরচ চালাই। ছেলেমেয়ে নিয়ে সুখেই আছি। সারাদিন কাজ করে ৫০০-৭০০ টাকা পাই। এই কাজ করে মেয়ে বিয়ে দিয়েছি। ভালোই আছি। রসুন গাড়িতে ওঠানো নামানোর কাজে সহায়তাকারী শ্রমিক হাবিব ঢালী বলেন, বড় গাড়ি হলে বেশি ইনকাম, ছোট হলে কম। তবে প্রতিদিন ১০০০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত আমাদের ইনকাম হয়।

মিরাশা চাষি বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক খোকন খালাসি বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আসছে। সেতুর কারনে অল্প সময়য়ের মধ্যে মালপত্র পৌঁছানো যায়। সারাদেশ থেকে পাইকাররা আসায় চাহিদা বেশি। প্রতিদিন আমাদের বাজারে অন্যান্য সবজি বাদ দিয়ে শুধুমাত্র রসুন বিক্রি হয় দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার। রসুন বিক্রি করে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জামাল হোসেন বলেন, এ বছর ২১৬০ হেক্টর জমিতে রসুন উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। পুরোটাই আমাদের অর্জিত হয়েছে। বর্তমানে কাঁচা রসুন ৫৫-৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আগে ফেরির মাধ্যমে ঢাকার বাজার ধরতে অনেক কষ্ট হতো। এখন পদ্মা সেতুর কারণে কৃষকরা হাতের নাগালের মধ্যে ভালো দামে রসুন বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। যাতে তারা রসুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠুক। এছাড়া আমরা কৃষকদের সকল ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছি।

Advertisement