Homeফুটবলসৌদিতে গিয়েও হারল মেসির ইন্টার মায়ামি

সৌদিতে গিয়েও হারল মেসির ইন্টার মায়ামি

ইন্টার মায়ামির ওপর কেউ কালোজাদু করেছে কি না, এটা খুঁজে দেখা দরকার যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাবটির! নয়তো দলে লিওনেল মেসি, জর্দি আলবা, সের্হিও বুসকেতসদের মতো তারকা থাকার পরেও টানা এগারো ম্যাচ জয়হীন থাকে কীভাবে?

আরও একজন তারকার নাম অবশ্য বলা হয়নি। সম্প্রতি ক্লাবটিতে যোগ দিয়েছেন উরুগুয়ের স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেস। এরই মধ্যে মাঠেও নেমেছেন সাবেক বার্সা সতীর্থদের সঙ্গে। দলে তারার হাট বসিয়েও ভাগ্যদেবীর সুদৃষ্টি পাচ্ছে না মায়ামি। প্রাক মৌসুমের ম্যাচ খেলতে বর্তমানে সৌদি সফরে এসেছে ক্লাবটি। গতকাল সোমবার রাতে রিয়াদ সিজন কাপে আল হিলালের সঙ্গে সাত গোলের থ্রিলার ৪-৩ গোলের ব্যবধানে হেরে গেছেন মেসিরা।

গত বছরের শুরুতে ইউরোপ ছেড়ে সৌদি আরবে পাড়ি জমান পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তাঁর দেখানো পথে নেইমারও ঘাঁটি গড়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। অন্যদিকে মেসি প্যারিস ছেড়ে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর থেকে মেসি-রোনালদো-নেইমার ভক্তদের মধ্যে তর্কযুদ্ধ লেগেই থাকত, কোন লিগটা বেশি ভালো। সেটার একটা উত্তরও যেন দিয়ে দিল গতকালের ম্যাচ!

অবশ্য মায়ামির বাজে সময় যেন শেষ হচ্ছেই না। যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাবটি শেষবার জয়ের দেখা পেয়েছিল গত বছরের সেপ্টেম্বরে। এরপর পেরিয়েছে চার মাসের বেশি সময়। এমএলএসের মৌসুম শেষ হয়েছে। মেসিরা ছুটি কাটিয়ে নতুন মৌসুমের জন্য দলে যোগ দিয়েছেন। গতকালের ম্যাচটি সহ প্রাক মৌসুমে তিনটি ম্যাচও খেলেছে মায়ামি। কিন্তু সবকটিতে সেই একই ফল। জয়হীন মেসিরা। সেপ্টেম্বরে টরন্টোর বিপক্ষে ম্যাচের পর থেকে হিসেব করলে সংখ্যাটা টানা এগারো ম্যাচ।

অন্যদিকে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিবেচনায় গতকালের ম্যাচে এগিয়ে থেকেই নেমেছিল নেইমারের ক্লাব আল হিলাল। নেইমার অবশ্য চোটের কারণে মাঠের বাইরে আছেন। টানা ২৮ ম্যাচ অপরাজিত আল হিলাল সবশেষ ২০ ম্যাচেই জিতেছে। এমন পরিসংখ্যান নিয়ে ঘরের মাঠ কিংডম অ্যারেনাতে মায়ামির মুখোমুখি হয়েছিল হিলাল। যে মাঠে সবশেষ ১৫ ম্যাচ ধরে অপরাজিত তাঁরা। তবুও প্রতিপক্ষ দলে যখন মেসির মতো খেলোয়াড় থাকে, এসব পরিসংখ্যান খুব একটা কাজে আসে না।

মাঠে মেসিদের একচুলও ছাড় দেয়নি আল হিলাল। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের জোয়ার বসায় সৌদি ক্লাবটির ফুটবলাররা। মুহুর্মুহু আক্রমণে ভয় ধরায় মিয়ামির রক্ষণে। এর ফলও পেয়ে যায় দ্রুত। ম্যাচের মাত্র ১০ মিনিটে অ্যালেক্সান্ডার মিত্রোভিচের গোলে এগিয়ে যায় মিয়ামি। তিন মিনিট পরে স্কোরলাইন দ্বিগুণ করেন সৌদি স্ট্রাইকার হামদান।

মাত্র ১৩ মিনিটে ২ গোল খেয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় মায়ামি। ম্যাচে ফিরতে আপ্রাণ চেষ্টা চালায় মেসি-সুয়ারেসরা। উরুগুয়ের স্ট্রাইকার দুটি সহজ সুযোগ মিস করেন। তবে ৩৪ মিনিটে এক গোল ফিরিয়ে দেন সুয়ারেস। প্রথমে ম্যাচ রেফারি গোল না দিলেও পরে ভিএআর প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে সিদ্ধান্ত পক্ষে যায় মায়ামির।

প্রথমার্ধের শেষ বাঁশি বাজার এক মিনিট আগে গোল করেন হিলালের ব্রাজিলিয়ান মিশেল দেলগাদোর। ৩-১ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় মায়ামি।

দ্বিতীয়ার্ধে দুই মিনিটের ব্যবধানে ম্যাচে ফিরে আসে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাবটি। ম্যাচের ৫৪ মিনিটে পেনাল্টি পায় মায়ামি। স্পট কিক থেকে ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়ান আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি মেসি। এ বছরে এটাই মেসির প্রথম গোল। এক মিনিট পরেই স্কোরলাইন ৩-৩ করেন ডেভিড রুইজ।

ম্যাচ সমতায় ফেরার পর দুই দলই কিছুটা খোলসে বন্দী হয়ে যায়। ম্যাচের ভাগ্য তখন ড্র বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু ৮৮ মিনিটে দারুণ এক হেড থেকে জয়সূচক গোলটি করেন আরেক ব্রাজিলিয়ান তারকা ম্যালকম।

৪-৩ ব্যবধানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে মায়ামি। সৌদি সফরে আগামী বৃহস্পতিবার রোনালদোর আল নাসরের বিপক্ষে খেলবে মেসিরা।

Advertisement