Homeসব খবরজাতীয়সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আসছেন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের নবীন কর্মীরা

সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আসছেন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের নবীন কর্মীরা

স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থার চাকরিতে আগামী জুলাই মাসের পরে যোগদান করা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় যুক্ত হবেন। এক্ষেত্রে প্রদেয় চাঁদার অর্ধেক দেবে প্রতিষ্ঠান বাকি অর্ধেক চাকরিজীবীর বেতন থেকে কেটে নেওয়া হবে।

এরপর সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রমের আওতায় কর্মকর্তা–কর্মচারির অনুকূলে অ্যাকাউন্ট খুলে উভয় অর্থ প্রতিষ্ঠান জমা দেবে। এভাবে চাঁদার পরিমাণ ও মেয়াদের উপর ভিত্তি করে তাদের পেনশন নির্ধারিত হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ ) এ সংক্রান্ত দুইটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩-এর ১৪ ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সব স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং এদের অধীন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের চাকরিতে যেসব কর্মকর্তা বা কর্মচারী, তারা যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, আগামী ১ জুলাই বা পরবর্তী সময়ে নতুন যোগদান করবেন, তাদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত করা হলো।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, গত বছরের আগস্টে চালু হওয়া সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতায় চারটি পৃথক স্কিম চালু রয়েছে। এর মধ্যে ‘প্রবাস’ স্কিমটি প্রবাসীদের জন্য। ‘প্রগতি’ স্কিম চালু করা হয়েছে বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য। অনানুষ্ঠানিক খাত, অর্থাৎ স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য রয়েছে ‘সুরক্ষা’। আর ‘সমতা’ স্কিম নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য। এর সঙ্গে ‘প্রত্যয়’ নামের আরও একটি স্কিম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ স্কিমের আওতায় রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত এবং সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানের নতুন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পেনশন পাবেন। সে ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তবে বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা এমনকি আগামী জুলাইয়ের আগে কেউ যোগদান করলে, তারাও বিদ্যমান নিয়মে পেনশন পাবেন।

এদিকে ‘প্রত্যয়’ স্কিমে অংশ গ্রহণ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার আলাদা একটি প্রজ্ঞাপন করা হয়েছে। এতে বলা হয়, এ স্কিমে অংশগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা–কর্মচারির মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা তবে ও দুইয়ের মধ্যে যেটি কম সে পরিমাণ বেতন থেকে কেটে নিবে এবং সমপরিমাণ অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা প্রদান করবে। অতপর উভয় অর্থ উক্ত প্রতিষ্ঠান ওই কর্মকর্তা বা কর্মচারির বিপরীতে সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষের অ্যাকাউন্টে জমা দেবে। এ জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ও মেয়াদের ভিত্তিতে অবসরকালীন সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা–কর্মচারী পেনশন ভোগ করবেন।

সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রমের অন্যান্য স্কিমের মত এ স্কিমেও পেনশন সুবিধা পেতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ১০ বছর চাঁদা প্রদান করতে হবে। চাকরি পরিবর্তন বা অন্য কোনো কারণে টানা ১০ বছর চাঁদা প্রদান করা সম্ভব না হলে অংশগ্রহণকারী অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ার টাকার উপর মুনাফাসহ অর্থ এককালীন দেওয়া হবে। এরপর কর্মকর্তা–কর্মচারী ইচ্ছা করলে স্কিম বা চাঁদার হার পরিবর্তন করে ব্যক্তিগতভাবে চাঁদা প্রদানপূর্বক পেনশন হিসাব সচল রাখতে পারবে।

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, স্বায়ত্তশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ সীমিত কিছু প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে পেনশন ব্যবস্থা রয়েছে। বাকিগুলোর ক্ষেত্রে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ডে (সিপিএফ) চাকরিজীবীরা জমা দেয় বেতনের ১০ শতাংশ এবং ওই প্রতিষ্ঠান দেয় ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। অংশীদারিত্বের এ তহবিল থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবসরকালীন আর্থিক সুবিধা পান। এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা চাকরিকালীন প্রতিবছরে দুই মাসের বেসিকের সমান গ্র্যাচুইটি পান। এই অর্থ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকারের বাজেট থেকে দেওয়া হয়। সার্বিকভাবে এসব প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান সুযোগ–সুবিধার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই সর্বজনীন পেনশনে এদের অন্তর্ভক্তির জন্য বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে।

Advertisement