বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমার সাথে সাথে দেশেও দাম সমন্বয় করা হবে বলে নিশ্চিত করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের এরই মধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জানান, বিরোধীরা আন্দোলন করলেও কাউকে যেন গ্রেপ্তার করা না হয়। সকালে আওয়ামী লীগের আট বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকদের সাথে এক বৈঠকে এসব কথা জনান তিনি।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে আবারও সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আরো কিছু দিন সবাইকে একটু কষ্ট করতে হবে। তবে দেশের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন শুরু হলে বিদ্যুতের এই সমস্যা অনেকটাই দূর হয়ে যাবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের কষ্ট যে হচ্ছে সেটা তার সরকার উপলব্ধি করতে পারছে বলেই প্রতিনিয়ত সেই কষ্ট লাঘবের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এসময় প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের আন্দোলন প্রসঙ্গে বলেন, ‘তারা এখন সুযোগ পেয়ে আন্দোলন করছে তাদের আন্দোলনে বাধা দেয়া হবে না। কাউকে গ্রেপ্তারও করা হবে না। তবে তাদের আন্দোলনে আরো জনভোগান্তি বাড়বে।’
প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার সামর্থ্য তাঁর সরকারের রয়েছে। তিনি বলেন, ‘তারা আন্দোলন (বিএনপি) করে কতটুকু সফল হবে জানি না, কিন্তু তারা যেভাবে করতে চাচ্ছে তাতে দেশের জন্য আরও ক্ষতি হবে। কিন্তু সেটা আমরা সামাল দিতে পারব, সেই বিশ্বাস আমার আছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের বিরোধী দল একটা সুযোগ পাচ্ছে, তারা আন্দোলন করবে, করুক। আমি আজকেও নির্দেশ দিয়েছি, খবরদার যারা আন্দোলন করছে, তাদের কাউকে যেন গ্রেপ্তার করা না হয় বা ডিস্টার্ব করা না হয়। তারা প্রধানমন্ত্রীর অফিসও ঘেরাও দেবে, আমি বলেছি হ্যাঁ আসতে দেব। কেননা আমরা যে আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করছি দেশের কাজ করতে, দেশের মানুষ তো সেটা জানে।’
এসময় নিজেই দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী। আবারও উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘করোনা যেতে না যেতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা নিষেধাজ্ঞা জনজীবনে সর্বনাশ ডেকে আনছে, যার ভুক্তভোগী হচ্ছে সারা বিশ্বের সাধারণ জনগণ। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমেরিকা স্যাংকশন দিল রাশিয়াকে শায়েস্তা করার জন্য, কী দেখা যাচ্ছে যে শায়েস্তা হচ্ছে সাধারণ মানুষ। শুধু আমাদের দেশ বলে নয়, ইউরোপের দেশগুলো এমনকি আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া-প্রত্যেকটি মহাদেশের মানুষেরই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সব জিনিসের ওপরই এর একটা প্রভাব পড়েছে।’
দেশে কিছু জিনিসের দাম অপ্রয়োজনে বাড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর আমাদের কিছু লোক তো থাকেই অপ্রয়োজনেও জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেয় ওই ছুতা ধরে, সেটাই হচ্ছে কিছু কিছু। না হলে এত দাম তো বাড়ার কথা নয়।’