গত ২২ বছর আগে তরুণ এজাহারুন জীবিকা নির্বাহের জন্যে চাকরি করতেন রজব আলী নামের এক খামারির হাঁসের খামারে। চাকরির দুই বছর পর সংসার চালানো কষ্টকর হলে চাকরি ছেড়ে ঋণ নিয়ে নিজেই খামার করেন। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে তিনি শুধু হাঁসের ডিম বিক্রি করে কোটিপতি হয়েছেন। তার এমন সাফল্য দেখে অনেকেই খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
খামারি এজাহারুন মিয়া সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের শনির হাওরপাড়ের বাসিন্দা। তিনি ২ বছর অন্যের খামারে চাকরি করার পর আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে টাকা ঋণ নিয়ে ৩৫০টি হাঁস কিনে খামার শুরু করেছিলেন। তারপর হঠাৎ অজানা এক রোগে তার সব হাঁস মারা যায়। ঋণগ্রস্থ হয়ে তার স্ত্রী ঢাকার এর গার্মেন্টেসে চাকরি নেন। সেখানে দুই বছর কাজ করে টাকা সঞ্চয় করে ২৫০টি হাঁস নিয়ে আবার খামার শুরু করেন। গত বছর তিনি ৩৬ লাখ টাকার শুধু ডিমই বিক্রি করেছেন। এছাড়াও হাটে হাঁসও বিক্রি করতেন। বর্তমানে তার খামারে ১ হাজার ৮৫০টি হাঁস রয়েছে। প্রতিদিন ৬৫০টি হাঁস ডিম এক হাজার পাড়ে।
তার হাঁস কার্তিক মাস থেকে হাঁসের পাড়া ডিম বিক্রি শুরু হয়। বৈশাখ মাস পর্যন্ত ডিম বিক্রি করে প্রথম বছরেই ভালো লাভ করেন তিনি। তখন ডিম পাড়া বন্ধ হলে প্রতিটি হাঁস ৪০০-৪৫০ টাকা দরে বিক্রি করেন। ৫০০-৫২০ টাকায় কিনে এনে লালন-পালন করেন। তারপর ফাল্গুন-চৈত্র মাসে বড় জাতের হাঁসের বাচ্চা ফোটান। সেগুলো আবার আশ্বিন মাসে
খামারি এজহারুন বলেন, আগে আমার কিছুই ছিল না। টাকার অভাবে আমার বাবা ও ছোট ভাই বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন। আমি দুই বছর অন্যের খামারে চাকরি করে কিভাবে হাঁস লালন- পালন করতে হয় তা শিখেছি। তারপর নিজে খামার দিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছি। এখন আমার কোনো অভাব নাই। আমার মতো অনেকেই আমার খামারে কাজ করে অন্য জায়গায় গিয়ে খামার দিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন। আমার খামারের ডিম ভৈরব, ময়মনসিংহ, রাজধানী ঢাকায় যায় এমনকি বিদেশেও রফতানি করা হয়।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান দাবি করলেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগ হাওরের এই জেলায় হাঁসের খামারিদের অধিক গুরুত্ব দিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তুলেছে। আর খামারীদের ঋণ দেয়া প্রসঙ্গে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলব।