Homeসব খবরজাতীয়পাতাল রেলের নির্মাণকাজ শুরু সেপ্টেম্বরে

পাতাল রেলের নির্মাণকাজ শুরু সেপ্টেম্বরে

আসন্ন ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) মধ্যে পাতাল রেলের নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে যানজটের নগরী ঢাকা। সব মিলিয়ে রাজধানী ঢাকায় ছয়টি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করবে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল)। বিমানবন্দর-বাড্ডা-কমলাপুর রুটে সড়কের নিচ দিয়ে চলবে দ্রুতগতির এ ট্রেন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ মেট্রো লাইন নির্মাণে মাঠ পর্যায়ের কাজ শুরু হবে। প্রথমপর্যায়ের নির্মাণকাজ কমলাপুর থেকেই শুরু হবে বলে জানান, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক।

ডিএমটিসিএল ঢাকা মহানগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসন, পরিবেশ উন্নয়নে অত্যাধুনিক গণপরিবহন হিসেবে ছয়টি মেট্রোরেলের সমন্বয়ে গঠিত। বুধবার (১৫ জুন) ঢাকায় এক সেমিনার-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল হচ্ছে ঢাকার বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত। উত্তরা-মতিঝিল-কমলাপুরের মধ্যে তৈরি হচ্ছে এমআরটি লাইন-৬। এর পাতাল অংশের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। এ অংশে থাকবে ১২টি পাতাল স্টেশন। পাতাল অংশ ছাড়াও নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত তৈরি করা হবে আরো ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার উড়াল মেট্রো। বিমানবন্দর-কমলাপুর ও নতুনবাজার-পূর্বাচলের মধ্যে নির্মিত মেট্রোরেলটি চিহ্নিত করা হয়েছে এমআরটি-১ নামে। লাইনটি তৈরি করতে খরচ হবে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা।

নতুনবাজার স্টেশনে ইন্টারচেঞ্জ থাকবে। এই ইন্টারচেঞ্জ ব্যবহার করে বিমানবন্দর রুট থেকে পূর্বাচল রুটে এবং পূর্বাচল রুট থেকে বিমানবন্দর রুটে যাওয়া যাবে। উভয় রুটের বিস্তারিত স্ট্যাডি সার্ভে ও বেসিক নকশা সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ডিটেইলড নকশার কাজ চলমান। ডিটেইল্ড নকশা অগ্রগতি শতভাগ। নির্মাণকাজের সব দরপত্র দলিল প্রস্তুত কার্যক্রমের অগ্রগতি ৮৬ শতাংশ। এমআরটি-১ এর ডিপো ও ডিপো অ্যাক্সেস করিডোর নির্মাণের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার পিতলগঞ্জ ও ব্রাহ্মণখালী মৌজায় ৯২ দশমিক ৯৭২৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ২০২৬ সালে কাজ শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক আরো বলেন, পাতাল মেট্রোরেলের ডিপোর মূল নির্মাণকাজ শুরুর জন্য জাইকার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। তাদের অনুমতি পাওয়া গেলে কাজ শুরু হবে। সেটা আগামী অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) মধ্যে হতে পারে। তারপর প্রধানমন্ত্রী এ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করবেন। তার মধ্য দিয়ে মাঠপর্যায়ে পাতালরেলের মূল কাজ শুরু হবে। পুরো প্রকল্প ১২টি প্যাকেজে শেষ হবে। প্রথম প্যাকেজে ডিপোর ভূমি উন্নয়ন ও আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।

এমআরটি লাইন-১-এর কাছে লাইসেন্স হস্তান্তর এবং এমআরটি লাইন-৬-এর অগ্রগতি ও সম্ভাবনা শীর্ষক সেমিনারে ঢাকায় নির্মাণাধীন ও পরিকল্পনাধীন মেট্রো লাইনগুলোর কাজের বাস্তব অগ্রগতি তুলে ধরেন ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরীতে যানজট এবং এর প্রভাবে বার্ষিক প্রায় ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা বর্তমান রেটে প্রায় ৩৩ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এমআরটি লাইন-৬ চালু হওয়ার পর মেট্রোরেল পরিচালনাকালে দৈনিক ভ্রমণ খরচ বাবদ প্রায় ৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা এবং যানবাহন পরিচালনা খরচ বাবদ প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা সাশ্রয় হবে। এ সাশ্রয়কৃত অর্থ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে, জিডিপি বাড়বে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী।

Advertisement