Homeঅন্যান্যদেশের যে গ্রামে যাকাত-ফিতরা নেওয়ার মানুষ নেই

দেশের যে গ্রামে যাকাত-ফিতরা নেওয়ার মানুষ নেই

একটি সংগঠনের উদ্যোগে বদলে গেছে গ্রামের চিত্র। গ্রামের সকল পরিবার হয়েছে এখন সচ্ছল। এই গ্রামে এখন ফিতরা ও যাকাত নেওয়া মানুষ নেই। সবাই স্বাবলম্বী।

কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের চাঁদের হাসি গ্রাম। এই চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের এমন উদ্যোগের ফলেই বদলে গেছে গ্রামের দৃশ্যপট। সংগঠনটি নিজ গ্রামের গন্ডি পেরিয়ে এখন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে উদ্যোগ নিয়েছে।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে চাঁদের হাসি গ্রামের প্রয়াত মাওলানা হেলান উদ্দিনের প্রচেষ্টায় দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে গ্রামে সকল পরিবারের ফিতরা ও যাকাত একসাথে করে অসহায়-গরীব মানুষের মাঝে বিতরণ করে আসছে। এভাবে দীর্ঘ ২১ বছরে এই কার্যক্রমের ফলে চাঁদের হাসি গ্রামে এখন আর ফিতরা ও যাকাত নেওয়া মতো মানুষ নেই। ইতোমধ্যে সংগঠনটি গ্রামের ৮০ জন অসহায় গরীব মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়েছেন। এছাড়াও সংগঠনটি গ্রামের অসহায় ও গরীব মানুষকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সহায়তা দিয়ে আসছে। গ্রামের বেকারত্ব ঘোচাতে অসহায় ও গরীব মানুষের মাঝে গরু, ছাগল, সেলাই মেশিন ও ভ্যান গাড়ি বিতরণ করে আসছে। সংগঠনটি নিজ গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করে এখন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে উদ্যোগ নিয়েছেন।

২ বছর আগে চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর পেয়েছেন ওহেদ আলী। তিনি জানান, ঘর পেয়ে মাথা গুজারা ঠাঁই হয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভালভাবেই চলছে তার সংসার।

মাহমুদ বেগম নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, তার পরিবার দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর ও সেলাই মেশিন পেয়েছেন। তার বাবা নেই মা ও ছোট বোনকে নিয়ে ঘরে বসবাস করছেন। সেলাই মেশিনের মাধ্যমে মানুষের জামা কাপড় সেলাই করে নিজেও স্বাবলম্বী হয়েছেন।

চাঁদের হাসি দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ আলম জানান, ২০০৩ সালে আমাদের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকার চলনশীল মানুষের ফেতরা ও যাকাত এক সাথে করে আমরা কাজ করে থাকি। এভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার পর থেকে ইসলামের বিধি মোতাবেক যে ৮টি খাত রয়েছে সেই হিসাবে বর্তমানে আমাদের গ্রামে যাকাত-ফিতরা নেওয়ার মতো কোনো মানুষ নেই। গ্রামের ৮০টি অসহায় গরীব পরিবারকে ঘর তৈরি করে দিয়েছি। এছাড়াও গ্রামের অসহায় ও গরীব মানুষকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সহায়তা দিয়ে আসছে। গ্রামের বেকারত্ব ঘোচাতে অসহায় ও গরীব মানুষের মাঝে গরু, ছাগল, সেলাই মেশিন, অটোরিকশা ও ভ্যান গাড়ি বিতরণ করেছি। বর্তমানে আমার নিজ গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করে এখন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে উদ্যোগ নিয়েছি।

জেলা সমাজসেবা অফিসের সহকারী পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন সংগঠনটি গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসনীয়। সংগঠনটি সরকারি নিবন্ধনের আওতায় আসলে সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা দেয়া হবে।

সূত্র: চ্যানেল আই অনলাইন।

Advertisement