‘ভাই চরম আতঙ্কে আছি। সিলেটে আমি ২৭ বছর ধরে ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ করছি। এই সময়ে দিনে সর্বোচ্চ দু’টি ভূকম্পন দেখেছি। আজ এত ভূমিকম্প হয়েছে যে, চরম আতঙ্কে আছি। নগরবাসীকে অন্তত সাতদিন সতর্ক থাকতে বলেছি।’
মোবাইল ফোনে এমন অনুভূতি প্রকাশ করছিলেন সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক জহির বিন আলম।
শনিবার (২৯ মে) রাতে তিনি বলেন, আজ যে ভূকম্পনগুলো হয়েছে এগুলোর অধিকাংশই কম মাত্রার ছিলো। সম্ভাবনার বিষয় হলো- সিলেটের অধিকাংশ ভবন বিল্ডিং কোড মেনে হয়েছে। এই কারণে কম মাত্রার ভূমিকম্পে খুব বেশি সমস্যা হয়নি। তবে যে কোনো মুহূর্তে আরও ভূমিকম্প হতে পারে। যেহেতু ছোট ছোট অনেকগুলো ভূমিকম্প হয়েছে তাই বড় ভূমিকম্প হতেই পারে। যদি ৬ বা ৭ মাত্রায় ভূমিকম্প হয় তাহলে নতুন ভবনও ঝুঁকিতে পড়ে যাবে। এজন্য সবাইকে সচেতন হতে বলছি।
তিনি বলেন, আমাদের এখনি ফায়ার সার্ভিসকে প্রস্তুত রাখতে বলেছি, জালালাবাদকে গ্যাস লাইনের বিষয়ে প্রস্তুত রাখতে পরামর্শ দিয়েছি, যাতে যে কোনো ঘটনায় সংগে সংগে গ্যাসলাইন বন্ধ করা যায়। বিদ্যুৎ বিভাগকেও প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দিয়েছি। আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী, মেয়র মহোদয় ইতোমধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে খবর পেয়েছি।
সেবা সংস্থাগুলোর পাশাপাশি নগরবাসীকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়ে এই গবেষক বলেন, রাতে সবাই নিশ্চিন্তেই ঘুমাবেন। তবে বিছানার পাশ থেকে আলমিরা বা বড় শোকেস দূরে রাখবেন। যেন ভূমিকম্প হলেও এসব ভারি বস্তুর নিচে চাপা না পড়েন। এ কদিন লিফট ব্যবহার কম করেন। কারণ, লিফটে আটকে গেলে বের হওয়া সম্ভব হবে না।
সরকারসহ নগরবাসীকে অন্তত সাত দিন অনেক বেশি সচেতন থাকার আহ্বান জানান সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও পুরকৌশল বিভাগের এই অধ্যাপক।
এর আগে, শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পরপর ৪টি ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে সিলেট। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, প্রথমে সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে রিখটার স্কেলে ৩.০ মাত্রার একটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তারপর সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে আরও একটি ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিলো ৪.০১। তার ৪০ মিনিটের মাথায় ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে হয় ২.৮ মাত্রার একটি এবং সবশেষ দুপুর ১.৫৮ মিনিটে ৪.০ মাত্রার আরও একটি ভূমিকম্প হয়।-বাংলাভিশন ডিজিটাল