Homeসব খবরজেলার খবররেকর্ড ভেঙে সজনে ডাটার কেজি ৫০০!

রেকর্ড ভেঙে সজনে ডাটার কেজি ৫০০!

মেহেরপুর কৃষি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, ‘সজনে গাছ এক সময় জেলার গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই পাওয়া যেত। বতর্মান সেই চিত্রটি আর দেখা যায় না। এতে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কমে গেছে। ফলে দাম বৃদ্ধির মতো ঘটনা ঘটেছে।’

কৃষি নির্ভর মেহেরপুরে বারো মাসই প্রায় সব ধরনের সবজি চাষ হয়ে থাকে। তবে স্বাদে পুষ্টিগুণে ভরা সজনে ডাটার ক্ষেত্রে একটু যেন ব‍্যাতিক্রম। এটি যেন মৌসুমী সবজি হিসেবেই রয়ে গেছে। তাই সজনে ডাটা এ অঞ্চলে খুব জনপ্রিয়, এর কদরও যেন একটু আলাদা।

বাজারে এ নতুন সবজি ওঠার অপেক্ষায় থাকেন সজনে ডাটা প্রিয় ভোক্তারা। জেলার বাজারে মৌসুমের নতুন কোনো সবজি এলে তার দাম থাকে তুলনামূলকভাবে একটু বেশি। তবে সজনের ডাটার ক্ষেত্রে তা আকাশচুম্বি বলা যেতে পারে। চলতি মৌসুমে সজিনা ডাটার দামে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। মেহেরপুরের বাজারে চলতি মৌসুমে ওঠা নতুন সবজি সজনে ডাটার দাম চাওয়া হচ্ছে কেজি দরে ৫০০ টাকা।

ক্রেতাদের অভিযোগ, যে সজনের ডাটা মাসখানেক পরে কিনতে পাওয়া যাবে ২০ টাকা কেজিতে। অথচ বাজারে নতুন সবজি হওয়ায় তা বিক্রেতারা বিক্রি করছেন ৫০০ টাকা কেজি হিসেবে, যা একপ্রকার আকাশচুম্বি।ব্যবসায়ীরা বলছেন, সজনে ডাটা বতর্মানে একদম নতুন সবজি। তাছাড়া তুলনামূলকভাবে এখনো তেমন মোটাও হয়নি। তাই আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আগাম সবজি হাওয়ার কারণে এবার সজনের ডাটার দাম একটু বেশি। তবে ২০ থেকে ২৫ দিন পরে দাম কমে যাবে।

জেলার বৃহত্তর সবজি বাজার বামন্দী সবজি বাজারে সবজি কিনতে আসা ক্রেতা প্রবাসী ইয়ার আলী বলেন, ‘আমি সাত বছরের বেশি সময় ধরে সৌদি আরব ছিলাম। সপ্তাহখানেক হবে দেশে এসেছি। বামন্দী বাজারে সজনে ডাটা দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না। আধা কেজি কিনলাম। দাম নিলো ২৫০ টাকা। অথচ এ সজিনা ডাটা এক সময় দশ টাকা করে কেজি কিনেছি। তারপরও বছরের নতুন সবজি তাই দামটা থেকে স্বাদ নেয়াটাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।’

পোশাক ব‍্যাবসায়ী মারফত আলী বলেন, ‘আমি সেকেন্ডহ‍্যান্ড পোশাক বিক্রি করে সংসার চালাই। আজ বাজার করতে এসে সজনে ডাটা দেখে কিনব মনে করে দাম জিজ্ঞেস করলাম? বিক্রেতা দাম বলে ৫০০ টাকা কেজি। ডাটা কিনার ইচ্ছে ছিল, তবে দামের কারণে কিনতে পারলাম না। এ সজনে ডাটা ঠিকই বিশ দিন পরে ত্রিশ থেকে চল্লিশ টাকাই পাওয়ার যাবে।’

মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার বামন্দী বাজারের কয়েকজন সজনে ডাটা বিক্রেতারা জানান, এ বছর বাজারে সজনে ডাটা প্রথম আসা শুরু করল। প্রতি কেজি ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করছি। যেহেতু এখন আমাদের বেশি দামে গাছ মালিকদের কাছ থেকে কিনতে হচ্ছে। তবে দাম একটু বেশি হলেও ক্রেতারা কিনছেন।

বামন্দী বাজারের সজনি ডাটা বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এবার এলাকার সজনে গাছে প্রচুর ফুল এসেছে এটা সঠিক। তবে কিছু কিছু গাছের ডাটাও খাওয়ার মতো হয়ে গেছে। তাই যারা আগাম বিক্রি করতে পারছে। তারা দাম ভালো পাচ্ছে। নতুন সবজি হিসেবে আমরাও দুটো পয়সা লাভ করতে পারছি।’

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের ব মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা.ফজলুর রহমান বলেন, ‘সজনে ডাটা ও এর পাতা খুব পুষ্টিকর একটি খাবার। এর অনেক উপকারিত রয়েছে। এর ডাটা, ফুল ও পাতা রান্না করে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায় । ঠা/ন্ডা, জ্ব/র, কাশি দূর করতে সজনের তরকারি বা সুপ বেশ উপকারী। বতর্মান যুগে সজনে পাতার চা বেশ জনপ্রিয়। এটিকে এখন সুপার ফুড হিসেবেই ধরা হচ্ছে।’

মেহেরপুর কৃষি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, ‘সজনে গাছ এক সময় জেলার গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই পাওয়া যেত। বতর্মান সেই চিত্রটি আর দেখা যায় না। এতে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কমে গেছে। ফলে দাম বৃদ্ধির মতো ঘটনা ঘটেছে। তাই চাহিদা মেটাতে আমাদের গাছ লাগানো বাড়াতে হবে। উৎপাদন বাড়লেই দাম এমনিতেই কমে আসবে। তাছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সজনে এখন বাণিজ‍্যিকভাবে চাষ হচ্ছে।’

সূত্র: নিউজবাংলা২৪।

Advertisement