Homeসব খবরজেলার খবরবাণিজ্যিকভাবে স্ট্রবেরি চাষে হাসানের সাফল্য!

বাণিজ্যিকভাবে স্ট্রবেরি চাষে হাসানের সাফল্য!

বিদেশ থেকে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে কিছু করার চিন্তা থেকেই তিনি স্ট্রবেরির চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি একজন সফল স্ট্রবেরি চাষি। তার সফলতা দেখে অনেকেই এর চাষ শুরু করেছেন। বগুড়ায় বাণিজ্যিকভাবে স্ট্রবেরি চাষে সফল হাসান আলী। বিদেশি এই ফল চাষে আগে অনেকে লোকসান গুনলেও বর্তমানে চাষ পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে সাফল্যের মুখ দেখা যাচ্ছে।

হাসান আলী বগুড়া সদর উপজেলার কোয়ালিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ইউরোপে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে কিছু করার চিন্তা থেকে কৃষি কাজে যুক্ত হয়ে পড়েন। তিনি দীর্ঘ ৭ বছর যাবত বিভিন্ন ধরণের উচ্চমূল্যের ফসল নিয়ে কাজ করছেন। বর্তমানে তিনি ফল বিক্রি পাশাপাশি চারা বিক্রি করে অনেক টাকা আয় করছেন। স্ট্রবেরি মূলত সুপারশপে, আভিজাত এলাকার দোকানগুলোতে এবং ফলের দোকানে সরবরাহ হয় থাকে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৬০ হাজার পিস চারা বিক্রি করেছেন।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে, চলতি বছর জেলায় ১ হেক্টর জমিতে স্ট্রবেরির চাষ হয়েছে। আগে চাষিরা লোকসান গুনলেও এখন চাষ পদ্ধতি পরিবর্তন হওয়ায় চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।

স্ট্রবেরি চাষি হাসান আলী বলেন, আমি জর্জিয়াতে পড়াশোনা করতাম। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করতাম। চাকরি করায় মানসিক চাপে থাকতে হয় তাই স্বাধীনভাবে কাজ করার উদ্দেশ্যে দেশে এসে কৃষি কাজে যুক্ত হই। আমি বিগত ৭ বছর যাবত কৃষি কাজের সাথে ‍যুক্ত আছি। প্রথমদিকে তেমন সফল না হলেও এখন বেশ সফল ভাবে কাজ করে লাভজনক অবস্থায় আছি। বর্তমানে আমি স্ট্রবেরির পাশাপাশি ড্রাগন, মাল্টা, ক্যাপসিক্যাম, ইয়েলো তরমুজ, ব্ল্যাক তরমুজ, ব্রুকলি, রেড ক্যাভেজসহ আরো অন্যান্য ফলের চাষ করে থাকি। আমার জমির উৎপাদিত স্ট্রবেরি ঢাকার বিভিন্ন সুপারশপ, আভিজাত এলাকার কিছু দোকানে সরবরাহ করে থাকি। বর্তমানে প্রতি কেজি পাইকারি ৬০০ টাকা দরে বিক্রি করছি।

তিনি আরও বলেন, অক্টোবর মাস স্ট্রবেরির চারা লাগানোর জন্য উত্তম সময়। প্রতি বিঘায় ৫০০০ চারা লাগানো যায়। চারা লাগানো ৫০ দিনে মধ্যে ফুল আসে। ৮০ দিনের মধ্যে ফল পরিপক্ক হয় আর জমি থেকে সংগ্রহ করা যায়। প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ৫০০ গ্রাম করে ফল পাওয়া যায়। আর উৎপাদিত ফল বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা লাভ করা সম্ভব হয়। এতে ১ বিঘায় ২৫০০ কেজি ফলন পাওয়া যায়। এর চাষে বিঘা প্রতি ৫০-৬০ হাজার টাকা খরচ হয়।

হাসান আরও বলেন, স্ট্রবেরি পচনশীল ফল হওয়ায় আগে আমাদের প্যাকেজিং ও পরিবহন করাতে ফল পচে যেত। এখন আমরা আপেলের যে ফোম পাওয়া যায় সেটা ব্যবহার করছি। এটা ব্যবহার করায় এখন আর ফল নষ্ট হচ্ছে না। এছাড়াও আগে স্ট্রবেরি চাষে গাছে ছত্রাকের আক্রমণের শিকার হতো। কৃষকরা প্রথাগত পরিচর্যা করায় লোকসানগুনতো। তবে এখন ভিন্নভাবে কিছু মেডিসেনের সমন্বয়ে তৈরি ককটেল মেডিসিনস্প্রে করা যায় তাহলে কিন্তু জমি ঠিক থাকে। ছত্রাক থেকে বাঁচানো যায় গাছ।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এনামুল হক বলেন, চলতি বছর বগুড়ার নন্দীগ্রাম, বগুড়া সদর এবং শিবগঞ্জ উপজেলায় ১ হেক্টর জমিতে স্ট্রবেরির চাষ হয়েছে। এছাড়াও নতুন উদ্যোক্তাদের এই ফল চাষের জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। আগামীতে এর চাষ বৃদ্ধিতে আমরা প্রকল্পভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহন করছি।

Advertisement