Homeসব খবরক্রিকেটজন্মদিনের সকালে মিরপুরে অনুশীলনে সাকিব

জন্মদিনের সকালে মিরপুরে অনুশীলনে সাকিব

নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই মিরপুরে এলেন সাকিব আল হাসান। বুধবার (২৪ মার্চ) জন্মদিনের সকালে মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে আসেন তিনি। তবে বোর্ডের কারো সঙ্গে দেখা করতে আসেননি। সকাল ৯টার দিকে এসে হালকা ওয়ার্ম আপের পর চলে যান ইনডোরে। সেখানে একজন থ্রোয়ারকে নিয়ে নেটে ব্যাটিং করেন সাকিব। ঘণ্টাখানেক ব্যাটিংয়ের পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন।

এ সময় বিসিবির ফিজিও বায়েজিদের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলেন তিনি। টুকটাক স্ট্রেচিংও করেন তার সঙ্গে। পরে ছোট রানআপে বল করেন সাকিব আল হাসান। মূলত বলের লাইন এবং লেংথ ঠিক করা নিয়ে সময় কাটিয়েছেন তিনি। এ মাসের শেষ দিকে কলকাতা নাইট রাইডার্সের মুম্বাই ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে সাকিবের। তাই আইপিএলের প্রস্তুতির জন্যই এ অনুশীলনে আসেন তিনি।

সাকিবের ক্রিকেটার হয়ে উঠার গল্প

বাবার পছন্দের বিপরীতে ছেলে হলেন ক্রিকেটার। গ্রামাঞ্চলের ক্রিকেট খেলতে গিয়েই তিনি চোখে পড়ে যান এক আম্পায়ারের। সেখান থেকে তাকে নিয়ে আসা হয় মাগুরার ইসলামপুর পাড়া ক্লাবে। সেই ক্লাবের হয়ে খেলতে গিয়ে সাকিব প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত করেন। প্রথম বলেই তুলে নিয়েছিলেন উইকেট। প্রকৃত ক্রিকেট জীবনের শুরু সেই বল থেকেই।

মাগুরা মাতিয়ে সাকিব বিকেএসপিতে এসে ভর্তি হন ৬ মাসের কোর্স করার জন্য। খুব দ্রুতই নিজেকে পরিচিত করে তোলেন সাকিব। মাত্র ১৫ বছর বয়সে সুযোগ পান অনুর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলার। এছাড়া জাতীয় লিগে খেলার জন্য তালিকাভূক্ত হন খুলনা বিভাগীয় দলে।

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে দ্যুতিময় পারফরম্যান্সই সাকিবকে নিয়ে আসে পাদপ্রদীপের আলোয়। ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব​-১৯ ত্রি-দেশীয় টুর্নামেন্টের ফাইনালে (অপর দুটি দেশ ছিল ইংল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা) মাত্র ৮৬ বলে সেঞ্চুরি করে ও ৩টি উইকেট নিয়ে দলকে জেতাতে সহায়তা করেন তিনি। ২০০৫ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে সাকিব অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ১৮টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন। ৩৫.১৮ গড়ে সংগ্রহ করেন মোট ৫৬৩ রান এবং ২০.১৮ গড়ে নেন মোট ২২টি উইকেট।

এরপর ২০০৬ সালের জিম্বাবুয়ে সফরে সাকিব প্রথমবারের মত বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পান। একই সিরিজে ওয়ানডে অভিষেক হয় ফরহাদ রেজা এবং মুশফিকুর রহীমের। সেই সিরিজেই হারাতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামার মধ্য দিয়ে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় সাকিবের।

২০০৯ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডে অলরাউন্ডার র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষে উঠে আসেন সাকিব। এই ধারাবাহিকতায় টেস্টেও নিজের কার্যকারিতা প্রমাণ করে সেরা অলরাউন্ডারের আসন দখল করেন তিনি। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাটেই সেরা অলরাউন্ডার হন তিনি। যা ক্রিকেট বিশ্বে একমাত্র ঘটনা।

ওয়ানডে অভিষেকের পরের বছরই ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রামে টেস্টে অভিষেক হয় সাকিবের। ২০০৬ সালে খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ম্যাচ খেলেন তিনি। ২০০৯ সালেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মাশরাফির ইনজুরির কারণে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ সালে মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও একইভাবে দায়িত্ব পান তিনি। এরপর তার নেতৃত্বেই ২০১১ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ খেলে বাংলাদেশ।

ওয়ানডেতে ২০৬ ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছেন ১৯৪ বার। ৩৭.৮৬ গড়ে করেছেন ৬৩২৩ রান। রয়েছে ৯টি সেঞ্চুরি ও ৪৭টি হাফসেঞ্চুরি। এক ম্যাচে তার সেরা ১৩৪ (অপরাজিত)। আর ২০৩ ইনিংসে বল করে ৩০.২১ গড় ও ৪.৪৮ ইকোনোমিতে নিয়েছেন ২৬০ উইকেট। ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছেন দু’বার। সেরা বোলিং ফিগার ২৯ রানে ৫ উইকেট।

বিশ্বের অন্যতম সেরা এ অলরাউন্ডারের জন্মদিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। শুভ জন্মদিন সাকিব।

Advertisement