Homeসব খবরক্রিকেটসুজনের সাথে সাকিবের ঘটনাটি ছিল ভুল বোঝাবুঝি

সুজনের সাথে সাকিবের ঘটনাটি ছিল ভুল বোঝাবুঝি

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আজ মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে গেছে। আজ শুক্রবার আবাহনীর মুশফিকুর রহিমকে এলবিডাব্লিউ না দেওয়ায় আম্পায়ারের ওপর চটে যান সাকিব। এরপর আবাহনী কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের সঙ্গেও তিনি বিবাদে জড়ান। শেষ পর্যন্ত জানা গেছে, সাকিব ক্ষমা চেয়েছেন এবং তাদের ঝামেলার মিটমাট হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে, বোলিং করতে আসেন সাকিব আল হাসান। ওই ওভারে একটি ছক্কা এবং একটি চার মারেন মুশফিকুর রহিম। ওভারের শেষ বলে মুশফিকুর রহিমের প্যাডে লাগলে এলবিডাব্লিউর আবেদন করেন সাকিব আল হাসান। সাকিবের আবেদন নাকচ করে দেন আম্পিয়ার। এলবিডব্লিউ আউট না দেওয়াই আম্পিয়ারের সামনে লাথি মেরে স্টাম ভাঙ্গেন সাকিব।

এর ঠিক পরের ওভারেই বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ করা হলে সাকিব এর প্রতিবাদ করতে এগিয়ে যান এবং তিনটি স্ট্যাম্পই তুলে আম্পায়ারের সামনে দিয়েছেন এক আছাড়! সে সময় আম্পায়ারকে শাসাতেও দেখা গেছে তাকে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এই দুই ঘটনার পর বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হলে মাঠ ছাড়ার সময় আবার তাকে দেখা যায় বিতর্কে জড়াতে। এবার আবাহনীর ড্রেসিং রুম থেকে তার দিকে শব্দবান আসতে থাকলে সাকিবও প্রত্যুত্তরে কিছু একটা বলেন।

সাকিবের সেই কথা শুনে আবাহনী কোচ খালেদ মাহমুদকে দেখা যায় যুদ্ধংদেহী মনোভাবে তার দিকে তেড়ে যেতে। তেড়ে আসেন সাকিবও। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামলাতে মোহামেডানের ক্রিকেটারদের কয়েকজন গিয়ে থামান সাকিবকে। মাঠ ছাড়ার সময় মোহামেডানের শামসুর দৌড়ে আবাহনীর ড্রেসিং রুমের দিকে গিয়ে থামান খালেদ মাহমুদকেও।

ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে সাকিবকে উদ্দেশ্য করে গালি দেন আবাহনীর কয়েকজন সমর্থক। সাকিবও তাদের পাল্টা গালি দেন। এসময় আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন সাকিবের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ মেনে নিতে পারেননি। তিনি রাগে গজগজ করছিলেন।

সাকিব যখন আবাহনী সমর্থকদের বকা দিচ্ছিলেন, তখন তার দিকে তেড়ে যান সুজন। তখন সুজনের সঙ্গে সাকিবের কথা কাটাকাটি লেগে যায়। খালেদ মাহমুদ সুজন ভেবেছিলেন, সাকিব তাকে উদ্দেশ্য করে কটু কথা বলেছেন। কিন্তু সুজনকে পরে সাকিব বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, আবাহনীর সমর্থকেরা গালি দেওয়ায় তিনি তাদের পাল্টা বলেছিলেন।

সুজনকে কিছু বলেননি। এরপর দুজনকেই নিজ নিজ দলের ক্রিকেটার ও স্টাফরা টেনে আলাদা করে। এরপর অবশ্য সাকিব আবাহনীর ড্রেসিংরুমে গিয়ে সুজনের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন।

গণমাধ্যমের কাছে আবাহনীর ম্যানেজার মাসুদ ইকবাল বলেছেন, ‘ঘটনার পর সাকিব আবাহনীর ড্রেসিংরুমে এসেছিল। সাকিব ক্ষমা চেয়েছেন। ড্রেসিংরুমে সুজনও ছিলেন। দুইজন বুক মিলিয়েছেন, মীমাংসা হয়ে গেছে।’ সাকিবের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারণে তাকে বড় শাস্তি পেতে হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। সামনে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের সঙ্গে হোম সিরিজ; এরপর আছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট সংকটে পড়ে গেল।

এদিকে এই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষমা চেয়েছেন সাকিব আল হাসান। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে সাকিব লিখেছেন, ‘প্রিয় ভক্তবৃন্দ, এভাবে মেজাজ হারিয়ে একটা ম্যাচ নষ্ট করার জন্য এবং যারা ঘরে বসে খেলা দেখছিলেন তাদের কষ্ট দেওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।”

“আমার মতো একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের এমন আচরণ করা কখনই উচিত নয়। আমি আমার দল, ম্যানেজম্যান্ট, টুর্নামেন্ট অফিসিয়ালস এবং সাংগঠনিক কমিটির কাছে এই মানবিক ভুলের জন্য ক্ষমা চাইছি। আশা করিছি, ভবিষ্যতে কখনই আর এমন কাজ করব না। সবাইকে ধন্যবাদ এবং ভালোবাসা।’

Advertisement