Homeঅন্যান্যহালদায় ডিম ছেড়েছে মা মাছ

হালদায় ডিম ছেড়েছে মা মাছ

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় মা মাছ। মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে ভাটার শেষ সময়ে নদীর রাউজান অংশের মইশকরম চইল্যাখালী মা মাছ ডিম ছাড়ে বলে জানা গেছে।

হালদা গবেষক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার স্বল্প পরিসরে ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় মা মাছ। জেলেরা ১১টি নৌকার মাধ্যমে ডিম সংগ্রহ করেছেন। প্রতিটি নৌকায় গড়ে দুই থেকে আড়াই বালতি করে ডিম সংগ্রহ করা হয়।

তিনি বলেন, যদি পরিবেশ অনুকূলে থাকে অর্থাৎ বজ্রপাতসহ পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল নেমে আসে তাহলে চলতি মাসের (মে) অমাবস্যার জোঁ (৬ মে থেকে ১০ মে) অথবা পূর্ণিমার জোঁ’তে (২০ মে থেকে ২৫ মে) হালদা নদীতে মেজর কার্পজাতীয় মা মাছের ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেটি আগেই বলা হয়েছিল।

ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, হালদা নদীতে কার্পজাতীয় মাছের ডিম ছাড়ার প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলেই কেবল মা মাছ ডিম ছাড়ে। গড়ে ৫০০-৬০০ জন স্থানীয় সংগ্রহকারী এসব ডিম সংগ্রহ করে মাটির তৈরি হ্যাচারিতে ফুটিয়ে উন্নত বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন পোনা উৎপাদন করে। জলবায়ু পরিবর্তন ও মনুষ্যসৃষ্ট বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে হালদার মৎস্য সম্পদের ওপর। এর প্রভাবে বিগত কয়েক বছর হালদা থেকে সংগৃহীত ডিমের পরিমাণ ব্যাপকহারে কমেছে।

হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কেজি এবং ২০২১ সালে সাড়ে আট হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ হয়েছিলো। ২০২০ সালে হালদা নদীতে রেকর্ড ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি ডিম পাওয়া যায়। ২০১৯ সালে ডিম সংগ্রহ করা হয়েছিল প্রায় সাত হাজার কেজি। ২০১৮ সালে সংগ্রহ হয়েছিল ২২ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৭ সালে মাত্র এক হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৬ সালে ৭৩৫ (নমুনা ডিম) কেজি, ২০১৫ সালে দুই হাজার ৮০০ কেজি এবং ২০১৪ সালে ১৬ হাজার ৫০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছিল।

এর মধ্যে ২০২০ সালের ডিম সংগ্রহের প্রকৃত তথ্য নিয়ে গরমিলের অভিযোগও পাওয়া যায়। কিন্তু সব মিলিয়ে জলবায়ুর পরিবর্তনে বা ঋতু পরিবর্তনসহ নানা কারণে হালদা নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার স্থান কমে যাচ্ছে। গত বিশ বছরেও যেখানে প্রায় ১২ থেকে ১৫টি ডিম ছাড়ার স্থান ছিল তা বর্তমানে চার থেকে পাঁচটিতে এসে দাঁড়িয়েছে। আবার প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিনিয়ত ভাসান জাল কিংবা ঘেরা জাল বসিয়ে অহরহ মা মাছ নিধন করা হচ্ছে। যদিও প্রশাসন নিয়মিত অভিযান বা নজরদারিতে রাখছে। কিন্তু পরিবেশ অনুকূলে না থাকায় অনেক সময় মা মাছ ডিম না ছেড়ে তার পেটেই রেখে দেয় আর এতে দূরদূরান্ত থেকে ডিম ছাড়তে আসা মা মাছ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

Advertisement