Homeঅন্যান্যসম্ভাবনার নতুন দ্বার ‘বাউ মুরগি’, ভাগ্য ফিরেছে নারীদের

সম্ভাবনার নতুন দ্বার ‘বাউ মুরগি’, ভাগ্য ফিরেছে নারীদের

নতুন জাতের এই মুরগি পালন করে পুরুষদের পাশাপাশি ভাগ্য বদলেছেন অনেক নারী।বাংলাদেশি গবেষকদের উদ্ভাবিত নতুন জাতের মুরগি ‘বাউ চিকেন’ সাড়া ফেলেছে নওগাঁয়। খামারে পালন করা হলে স্বাদ দেশি মুরগির মতোই। তাই দিন দিন বাউ মুরগির চাহিদা বাড়ছে। তাই জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিক খামার গড়ে উঠছে।

নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার ফেরদৌসী, রিমা, রেনুকা, শামিমা, রোকেয়া বেগম তেমন কয়েকজনক নারী খামারি হলেন। বাউ মুরগি পালন করে লাভবান হয়েছেন। একইসঙ্গে তাদের সাফল্য দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন আরও অনেকেই।

দেশি মুরগির দাম খুবই চড়া। অনেকেটা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক কয়েক বছর আগে নতুন মুরগির একটি জাত উদ্ভাবন করেন। যার নাম দেন তারা ‘বাউ চিকেন বা বাউ মুরগি’। এর মাংসের স্বাদ অনেকটাই দেশি মুরগির মতোই। চাহিদা বেশি থাকায় মুনাফাও হচ্ছে ভালো।

বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে মানানসই বাউ মুরগি পালন করে সাড়া ফেলেছেন বদলগাছি উপজেলার কোমারপুর গ্রামের খামারি রেনুকা বেগম। তিনি বলেন, ‘৪৫ দিনে এই মুরগি ৯০০ থেকে ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজন হয়। লাভও বেশি, দেশি মুরগির স্বাদ আর বাউ মুরগির স্বাদ একই রকম।’

রেনুকা বেগম আরও বলেন, ‘বয়লার, সোনালি বা পাকিস্তানি জাতের চেয়ে এই মুরগিতে রোগবালাই কম। ওষুধ তেমন একটা লাগে না, রোগবালাই দেশি মুরগির মতোই। ইতোমধ্যে তাদের এলাকার আরও ১৫ জন খামারি বাউ মুরগির খামার গড়ে তুলেছেন।’

এলাকার আরেক খামারি আলতাফ হোসেন বলেন, ‘এই জাতের মুরগি পালন করে আমরা লাভবান হয়েছি।’

সরকারের পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বাউ মুরগি পালনে খামারিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমী। পাশাপাশি পরামর্শ দিচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগও।

মৌসুমীর প্রণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নুর হোসেন বলেন, ‘ব্রাউ ব্রো বা বাউ মুরগি পালন করে উপজেলায় অনেকই লাভের মুখ দেখেছেন। ব্রয়লার মুরগি অনেকের কাছেই অপছন্দের, সেখানে বাউ তাদের কাছে খুবই পছন্দের মুরগি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। খেতেও দেশি মুরগির মতো স্বাদ। আমি নিজেও অনেকগুলো খামার পরিদর্শন করেছি। এ মুরগিতে রোগবালাই খুবই কম হয়ে থাকে। উন্নত এ মুরগির জাতকে ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাব।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবু তালেব বলেন, ‘বাউ ব্রো জাতের মুরগি খেতে সুস্বাদু এবং মৃত্যুহার কম ও উৎপাদন বেশি হওয়ারর কারণেই খামারি ও ভোক্তা পর্যায়ে এর চাহিদাও অনেক। আমরা চাই এ মুরগি যেন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।’

এক্ষেত্রে স্থানীয় এনজিও মৌসুমী প্রশিক্ষণের পাশাপাশি পরামর্শ প্রদান করছে বলে জানান এই জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। দেশি মুরগির চেয়ে বাউ মুরগির দাম কিছুটা কম। নতুন জাতের এ মুরগি দেশের মাংসের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Advertisement