Homeধর্মলাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান

লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান

৬০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান পাপমুক্তি ও আত্মশুদ্ধির আকুল বাসনা নিয়ে আজ সোমবার (১৯ জুলাই) পবিত্র হজ পালন করছেন। সৌদিতে অবস্থানরত অভিবাসী বিশ্বের ১৫০টি দেশের হাজিরা আজ আরাফাতের ময়দানে সমবেত হয়েছেন। আজ সূর্যোদয়ের পর ৬০ হাজার হাজি মিনা থেকে রওনা হন আরাফাতের ময়দানের দিকে। ট্রেনে, এবং বাসে হাজিরা আরাফাতের ময়দানে হাজির হন। হাজারো কণ্ঠে ছিল একটিই ধ্বনি, ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্‌দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্‌ক, লা শারিকা লাক।’

এই আরাফাত ময়দানে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিদায় হজে মুসলিম জাতির উদ্দেশে নির্দেশনামূলক ভাষণ দিয়েছিলেন। এছাড়া মুসলমানদের আদি পিতা হযরত আদম (আ.) এবং মা হাওয়ার স্মৃতি বিজড়িত মিলনস্থলও এই আরাফাত ময়দান।

হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছিলেন, আরাফাত ময়দানে অবস্থান মানে হজ। যে মুসলমান মুজদালিফায় রাত্রিযাপন করে ফজরের নামাযের পূর্বে আরাফাতের ময়দানে পৌঁছাবে তার হজ পূর্ণ হয়ে যাবে।

আরাফাত ময়দানে মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা পাঠ করবেন কাবা শরীফের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. বান্দার বালিলাহ। বাংলা ভাষাসহ ১০টি ভাষায় হজের খুতবা অনুবাদ করে প্রচার করা হবে। প্রথমবারের মতো খুতবা বাংলা অনুবাদ করবেন মক্কা ইসলামিক সেন্টারের কর্মরত বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার মাওলানা আ.ফ.ম ওয়াহিদুর রহমান।

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে সৌদি সরকার দ্বিতীয়বারের মতো স্বল্প পরিসরে হজ পালন অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছে। গতবছর ১০হাজার হজ্বযাত্রী দিয়ে হজ্ব সম্পাদন হলেও এ বছর ৬০ হাজার হজযাত্রীকে লটারির মাধ্যমে হজ পালন করার সুযোগ করে দিয়েছেন সৌদি সরকার, সেজন্য নেয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

হজ সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে হজের সাথে সংশ্লিষ্ট ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। অবৈধভাবে হজ পালন রোধে নেয়া হয়েছে সব ধরনের ব্যবস্থা। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর প্রবেশদ্বারে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আগ থেকেই অনুমতি ছাড়া হজ্ব পালন না করার জন্য সতর্ক করে দিয়েছে সরকার।

আজ সকালে মিনা থেকে ৩ হাজার বাসের করে হজযাত্রীকে আরাফার ময়দানে সুশৃংখলভাবে পৌঁছানো হয়েছে। কোনো ধরনের দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। হজ্বযাত্রীরা আরাফার ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করে আল্লাহর কাছে মোনাজাতের মাধ্যমে জীবনের সব গুনাহ ক্ষমা করার জন্য প্রার্থনা করবেন। হাজিরা মসজিদে নামিরা থেকে প্রদত্ত হজের খুতবা শ্রবণ, যোহর আসরের এক আজানের দুই ইকামতে কসরের সাথে আদায় করবেন। তাবুতে অবস্থানকারি হাজিরা সেখানেই নামাজ আদায় করবেন।

আরাফাত ময়দান থেকে সূর্য অস্ত যাবার পর হাজীগণ রওনা দিবেন মুজদালিফার উদ্দেশে। মুজদালিফায় পৌঁছে হাজীরা মাগরিব ও এশা একসাথে আদায় করে মুজদালিফার খোলা ময়দানে রাত্রি যাপন করবেন। শয়তানকে নিক্ষেপ করার জন্য সৌদি সরকার পক্ষ থেকে জীবাণুমুক্ত কংকর প্রত্যেক হজযাত্রীকে সরবরাহ করা হবে। এজন্য হাজীদেরকে নিজ উদ্যোগে মুজদালিফা ময়দান থেকে কংকর সংগ্রহ করতে হবে না। ময়দান থেকে আগামীকাল ফজরের নামাজ পড়ে সূর্যোদয়ের পর মিনা পৌঁছে হাজিগণ প্রথম দিন বড় জামারায় সাতটি কংকর নিক্ষেপ করবেন, পাশাপাশি পশু কোরবানি দিয়ে মাথা মুণ্ডন করে ঈদ আনন্দে মেতে উঠবেন।

Advertisement