Homeঅন্যান্যবিনা টাকায় পুলিশের চাকরি পেলেন ৪৭ জন, খুশিতে কাঁদলেন...

বিনা টাকায় পুলিশের চাকরি পেলেন ৪৭ জন, খুশিতে কাঁদলেন অভিভাবকরা

দিনমজুর ইনছান মিয়ার ছেলেকে দাঁড় করিয়েছিলেন পুলিশে। কখনো কল্পনাও ভাবেননি ছেলে পুলিশে চাকরি করবে। কিন্তু এ কল্পনাই যেন রূপ নিয়েছে বাস্তবে। ছেলের চাকরির খবর শুনে খুশিতে গড়িয়েছে তার চোখের পানি।

ছেলেদের পাশাপাশি চাকরি পেয়েছেন ফারজানা আক্তার। বাবা সামান্য কৃষক। গ্রামের রীতিনীতি অনুযায়ী কিছুটা পড়াশোনা পর পরই বিয়ে হয় মেয়েদের। তবে গ্রামের এই রীতিনীতি ভেঙে নিজেকে প্রমাণ করতে পুলিশের চাকরির জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ফারজানা। গৃহ মনোবল হার আত্মবিশ্বাসের ভরে আজ স্বপ্নের চাকরি তার হাতের মুঠোয়।

পুলিশের চাকরিতে উত্তীর্ণ হওয়ার খবর পাওয়ার পরপরই ফারজানার মতোই হাসি ফুটেছে তার পরিবারের মুখে। শপথ নিয়েছেন নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত রাখার। রাত তিনটা। চারিদিকে কুয়াশায়। আর কিছুক্ষণ পরেই আঁধার কাটিয়ে ভোরের আলোয় আলোকিত হবে সবকিছু। তখনো নেত্রকোনা শহরের কুড়পার পুলিশ লাইনসের মাঠ যেন পরিণত হয় এক মিলন মেলায়।

কেউ কেউ চিৎকার করছেন। কেউ বা তার স্বজনদের কাছে ফোন দিয়ে বলছেন হয়ে গেছি। কোনো রকমের ঘুষ এবং তদবির ছাড়াই এবার নেত্রকোনায় পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগে চাকরি পেয়ে খুশিতে কান্নায় ভেঙে পড়েন অভিভাবকরাও।

এমনই এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয় সোমবার রাত ৩টার দিকে নেত্রকোনা কুড়পার পুলিশ লাইনসে। ঠিক ঘড়ির কাটায় ৩টা বাজে। তাবুর নিচ থেকে ভেসে আসে সজিব মিয়ার নাম। সঙ্গে সঙ্গেই এমন এক অন্যরকম চিৎকার কানে ভেসে আসে সবার।

নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী নামগুলো একের পর এক ঘোষণা করে যাচ্ছেন। একে একে ৪৭ জনের নাম ঘোষণা করেন তিনি। এরমধ্যে সাতজন নারী এবং ৪০ জন পুরুষ। সঙ্গে ছিলেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফজলে রাব্বি ও শেরপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু বকর সিদ্দিক।

পুলিশ সুপার জানান, জেলায় ১৮৮০টি আবেদন জমা পড়ে পুলিশ কনস্টেবল পদে। সেখান থেকে যাচাই বাছাই শেষে ৪৫০ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। তাদের মধ্যে সর্বশেষ মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৪৯ জন। তাদের মধ্যে মোট ৪৭ জন নিয়োগ পেয়েছেন।

তিনি আরো জানান, এমন একটি স্বচ্ছ নিয়োগে থেকে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে বাছাই করতে পেরে নিজেও অনেক গর্বিত মনে করেন।

Advertisement