Homeঅন্যান্যপুকুরে থাই সরপুঁটি মাছ চাষ করার পদ্ধতি

পুকুরে থাই সরপুঁটি মাছ চাষ করার পদ্ধতি

পুকুরে থাই সরপুঁটি মাছ চাষ করা পদ্ধতি মৎস্য চাষিরা অনেকেই জানতে চান। আগের দিনে প্রাকৃতিক উৎস তথা নদী-নালা, খাল-বিলে প্রচুর পরিমাণে মাছ পাওয়া গেলেও এখন আর তেমন পাওয়া যায় না। তাই এখন অনেকেই পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেছেন। পুকুরে মাছ চাষ করে অনেকেই হয়েছেন স্বাবলম্বী। আজকের এ লেখায় আমরা জেনে নিব পুকুরে থাই সরপুঁটি মাছ চাষ করা পদ্ধতি সম্পর্কে-

পুকুরে থাই সরপুঁটি মাছ চাষ করার পদ্ধতি:

দেশি সরপুঁটির মতো এটি দেখতে, তাই একে থাই সরপুঁটি বলা হয়। তবে এর বর্ণ দেশীয় সরপুঁটির চেয়ে আরও উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয় রঙের।

থাই সরপুঁটি খেতে বেশ সুস্বাদু। প্রতিকূল পরিবেশে কম অক্সিজেনযুক্ত বেশি তাপমাত্রার পানিতেও এ মাছ বেঁচে থাকতে পারে। বাড়ির আশপাশেই থাকা মাঝারি আকারের পুকুর কিংবা ডোবায় এ মাছ চাষ করা যায়। এসব পুকুর-ডোবায় বছরের অধিকাংশ সময়ই পানি থাকে না। গ্রামাঞ্চলের পতিত এ পুকুর-ডোবাগুলো সামান্য সংস্কার করে খুব সহজেই চাষ উপযোগী করা যায়। বেকার যুবকরা স্বল্প সময় ও স্বল্প খরচে এ ধরনের জলাশয়ে থাই সরপুঁটি মাছের চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারেন।

চাষ পদ্ধতি:

মিশ্র চাষ পদ্ধতি অর্থাৎ রুইসহ অন্যান্য উন্নত প্রজাতির মাছের সঙ্গেও এ মাছ চাষ করা যায়। ৬ মাসে একটি থাই সরপুঁটির পোনা গড়ে ২০০-২৫০ গ্রাম ওজনে পরিণত হয়। একই পুকুরে বছরে দুইবার এ মাছের চাষ করা যায়।

এ মাছ চাষের জন্য পুকুরের আয়তন ৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ হতে পারে। এর চেয়ে বেশি হলেও ক্ষতি নেই। তবে এক একরের বেশি না হলেই ভালো। পুকুরের গভীরতা হবে ১.৫ মিটার থেকে ২ মিটার অর্থাৎ তিন থেকে চার হাত। পোনা ছাড়ার আগে পুকুর ভালোভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে।

শুকনো মৌসুমে পুকুরের সম্পূর্ণ পানি নিষ্কাশন করে তলার মাটি ১০ থেকে ১৫ দিন ধরে রোদে শুকাতে হয়। এরপর লাঙল দিয়ে কর্ষণ করে নিতে হবে। পুকুর শুকানো সম্ভব না হলে রাক্ষুসে মাছ ও অন্যান্য ক্ষতিকর প্রাণী মেরে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। এ পর্যায়ে পুকুর প্রস্তুতির জন্য প্রতি শতাংশে এক কেজি হারে পাথুরে চুন প্রয়োগ করতে হবে।

এবার চুন প্রয়োগের সাত দিন পর প্রতি শতাংশে ৪ কেজি গোবর, ১৫০ গ্রাম টিএসপি, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন। সার পুকুরের তলার মাটির ওপর ছড়িয়ে দিয়ে কোদালের সাহায্যে ভালোভাবে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। সার প্রয়োগের পর দ্রুত পুকুর পানি দিয়ে ভরে দিতে হবে।

প্রস্তুতকৃত পুকুরে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য প্লাঙ্কটনের পর্যাপ্ত মজুদ সম্পর্কে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হয়ে প্রতি শতাংশে ১.৫ ইঞ্চি থেকে ২ ইঞ্চি সাইজের ৬০-৬৫টি থাই সরপুঁটির পোনা ছাড়া যেতে পারে। পুকুরে যে পরিমাণ মাছ আছে, সে মাছের মোট ওজনের শতকরা চার থেকে ছয় ভাগ হারে চালের কুড়া বা গমের ভুসি সম্পুরক খাদ্য হিসেবে প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে দুবার পুকুরের সব জায়গায় ছিটিয়ে দিতে হবে।

প্রতি মাসে একবার করে জাল টেনে মাছের গড় ওজন নির্ধারণ করে খাবারের পরিমাণ ক্রমশ বাড়াতে হবে। পুকুরে মাছের খাদ্য ঘাটতি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতি শতাংশে ১৫০-২০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ওই পরিমাণ টিএসপি সার প্রয়োগ করা অত্যাবশ্যক। থাই সরপুঁটি সাধারণত নরম ঘাস পছন্দ করে। তাই এ মাছের জন্য ক্ষুদে পানা, টোপা পানা, নেপিয়ার ঘাস, কলাপাতা ইত্যাদি প্রতিদিন সামান্য পরিমাণে হলেও সরবরাহ করা গেলে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

সূত্র: জাগো নিউজ

Advertisement