Homeঅন্যান্যপাগলা মসজিদ: সব রেকর্ড ভেঙে দানবাক্সে মিলল প্রায় সাড়ে...

পাগলা মসজিদ: সব রেকর্ড ভেঙে দানবাক্সে মিলল প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা

তিন মাস ২০ দিন পর কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের নয়টি দান সিন্দুকে পাওয়া গেছে ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ কর্পোরেট শাখার ম্যানেজার মো. রফিকুল ইসলাম। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সিন্দুক খুলে ২৩ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। এরপর শুরু হয় টাকা গণনার কাজ। চলে রাত পর্যন্ত গণনা। এতে ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া গেছে বলে পাগলা মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটি জানায়, শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের নয়টি দান দানবাক্স খোলা হয়। এতে ২৩ বস্তায় ভরে টাকাগুলো মসজিদের দোতলায় গণনা করা হয়।

এই কাজে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর শেখ জাবের আহমেদ, সহকারী কমিশনার রওশন কবীর, মাহমুদুল হাসান, সামিউল ইসলাম, আজিজা বেগম, মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান ও রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম, সিবিএ নেতা মো. আনোয়ার পারভেজসহ মাদরাসার ১১২ ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ সদস্য অংশ নেন।

সর্বশেষ গত ১৯ আগস্ট মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ২৩ বস্তায় রেকর্ড ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গহনা ও হীরা পাওয়া গিয়েছিল। গত ৬ মে রমজানের কারণে ৪ মাস পর দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ১৯ বস্তায় ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গহনা ও হীরা পাওয়া যায়।

এর আগে, ৭ জানুয়ারি ৩ মাস ১ দিন পর দানবাক্স খুলে ২০টি বস্তায় ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গহনা ও হীরা পাওয়া যায়।

জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদে আটটি দানবাক্স থাকলেও এবার আরো একটি দানবাক্স বাড়ানো হয়েছে। দানের পরিমাণ বাড়ায় এখন পাগলা মসজিদের দানবাক্সের সংখ্যা নয়টি। মসজিদের দান থেকে প্রাপ্ত টাকা সংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়।

তিনি আরো বলেন, ছয়তলাবিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য একটি মেগা প্রজেক্ট হাতে নেয়া হয়েছে। এতে অর্ধলাখ মুসল্লি যেন একত্রে নামাজ আদায় করতে পারেন, এ রকম আকর্ষণীয় একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে পাঁচ হাজার নারীর আলাদাভাবে নামাজের ব্যবস্থা থাকবে। এরমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ১২টি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশগ্রহণ করেছে। এতে প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। কাজ শুরু হলে এর কমবেশিও হতে পারে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, সকাল থেকে টাকার সিন্দুক খোলা, বস্তায় ভরে এনে গণনা শেষে ব্যাংকে সমস্ত টাকা নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তার কাজে তিনিসহ পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন।

Advertisement