Homeসব খবরজেলার খবর‘চাল কেনার টাকা নেই, তাই সেদ্ধ আলু খেয়ে রোজা...

‘চাল কেনার টাকা নেই, তাই সেদ্ধ আলু খেয়ে রোজা রাখছেন নুরনবী’

সেদ্ধ আলু খেয়ে দু’দিন ধরে রোজা আছি। দুই কেজি চালের টাকা রোজগার করতে না পারলে হয়তো আজো আলু সেদ্ধ খেয়েই রোজা থাকতে হবে। এভাবে আর কত দিন চলবে? ছোট সাত বছরের সন্তানকে কী খাওয়াব? সন্তানটি আর আলু খেতে চাইছে না।’

কষ্টের কথাগুলো বলেছেন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ৭ নম্বর লতিবপুর ইউনিয়নের নিঝাল গ্রামের দরিদ্র ভ্যানচালক নুরনবী। করোনা মহামারীর কারণে দেশে সর্বাত্মক লকডাউন চলছে। মানুষের যাতায়াত সীমিত। বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ। পণ্য পরিবহনের চাপও কম। তাই তো ভ্যানচালক নুরনবীর আয়-রোজগারেও ভাটা পড়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে নুরনবী নয়া দিগন্তকে বলেন, ভ্যান চালিয়ে আজ এখনো কোনো আয় করতে পারিনি। স্ত্রীসহ ছয় সদস্যের সংসার। দুই ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। সম্পদের মধ্যে চার শতাংশ জমি। ওই জমিতে ছোট্ট একটি ঘর। আর ওই ঘরেই স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বাস তার।

তিনি আরো বলেন, নিজের কোনো আবাদি জমি নেই। ভ্যান চালিয়ে যে আয় হয় তা দিয়েই সংসার চলে। স্থানীয় চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী মন্ডলের গ্রামেই তার বাড়ি। এক দিকে দরিদ্র। অন্য দিকে বয়সও ৬০ পেরিয়েছে নুরনবীর। কিন্তু সরকারি অনুদান ফেয়ার প্রাইজ কার্ড বা ভিজিডি, ভিজিএফ অথবা বয়স্ক ভাতার সুবিধা বঞ্চিত তিনি।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সেটি অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। পরে আজ শুক্রবার তাঁর বাড়িতে গিয়ে খাদ্য ও নগদ অর্থ সহায়তা দেয় বিভিন্ন সংগঠন।

উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের জারুল্লাবাদ গ্রামে নুরনবীর বাড়িতে রংপুর পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকারের পক্ষ থেকে এক মাসের চাল, ডাল, চিনি, লবণ, তেল, মুরগীসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী ও নগদ আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেন সহকারী পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম। এড়াও, আমরাই বাংলাদেশ নামে একটি বেসরকারি সংগঠন ও বক্তিগত উদ্যোগে খাদ্য সহায়তা দেন অনেকে।

এদিকে, রংপুর জেলা সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম বলেন, ‘সংবাদটি এসপি মহোদয়ের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে। তার নির্দেশে আমি নুরনবীর বাড়িতে গিয়ে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি।’

Advertisement