Homeসব খবরজেলার খবরচাঁদপুরে ইলিশ কিনে ঠকছেন ক্রেতা

চাঁদপুরে ইলিশ কিনে ঠকছেন ক্রেতা

ঢাকার বনানী থেকে শুক্রবার সকালে লঞ্চে চাঁদপুরে ইলিশ কিনতে আসেন মুনতাসির ও রাহাত। ইলিশ কিনলেন ১৫ কেজির মতো। কিন্তু কেনার পর মন ভালো ছিল না তাঁদের। কারণ, প্যাকেট করার সময় স্থানীয় একজন তাঁকে বলেই ফেলেন, ‘আরে ভাই, এখানে তো চাঁদপুরের ইলিশের চেয়ে সাগরের ইলিশ বেশি।’ কিন্তু বিক্রেতা বলেছেন, এগুলো চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ইলিশ। চ্যালেঞ্জ করার আগেই প্যাকেট হয়ে গেছে। তাঁদের মতোই প্রতিদিন ইলিশ কিনে ঠকছেন বহু ক্রেতা। যাঁদের অধিকাংশই ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা।

সাগর মোহনায় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় খুব একটা ইলিশের দেখা মিলছে না। প্রতিদিন কমপক্ষে ২ থেকে ৩ হাজার মণ ইলিশ আমদানি হচ্ছে চাঁদপুরের বড় স্টেশন মাছঘাটে। এর মধ্যে মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ মণ ইলিশ চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার। কিন্তু এই সাগরের মাছই চাঁদপুরের ইলিশ বলে ক্রেতার ব্যাগে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, দামও রাখা হচ্ছে আকাশচুম্বী। এতে স্থানীয়দের পাশাপাশি ঠকছেন চাঁদপুরের ইলিশের সুনামের কারণে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ক্রেতারা।

ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানের চাঁদপুর মাছঘাটে ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। ১ কেজি ওজনের ইলিশের দাম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। এ ছাড়া মাঝারি সাইজের ইলিশের মণ ২৪ হাজার থেকে ২৬ হাজার টাকা দর চলছে। কিন্তু এই দামের ইলিশ মানেই দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা সাগরবেষ্টিত এলাকার ইলিশ। যেগুলোতে স্বাদ কম। শুধু তাই নয়, এই ইলিশ ঢাকা-চট্টগ্রাম-বরিশালে আরও সস্তা। চাঁদপুর ঘাটে মাছ কিনতে আসা মানেই পদ্মা-মেঘনার রুপালি ইলিশ! কিন্তু তা মিলছে কম। বরং প্রতারণা করছেন অনেক ব্যবসায়ী। ইলিশের আমদানি বাড়ায় দাম আগের তুলনায় কিছুটা কমে এসেছে ঠিক, কিন্তু চাঁদপুরের স্থানীয় ইলিশের দাম সাধারণ ক্রেতার ধরাছোঁয়ার বাইরে।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়া বলেন, একটা সময় চাঁদপুরে পদ্মার ইলিশে সরগরম থাকত বড় স্টেশন মাছঘাট। কিন্তু কয়েক বছর ধরে এই ইলিশের তেমন দেখা মিলছে না। তবে দক্ষিণাঞ্চল ও সাগর মোহনার প্রচুর ইলিশ ঘাটে আসছে। ইলিশের আমদানি বাড়ায় দাম কমে এসেছে।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত জানান, লোকাল মাছ কম এবং দামও বেশি। ইলিশ কিনে বাইরের ক্রেতারা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন- এমন অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, এগুলো আমরাও শুনি। কিন্তু এই অভিযোগে কেউ আমাদের কাছে আসেন না। এসব যাঁরা করেন তাঁরা ছুটা ব্যবসায়ী। তবে আমরা এ বিষয়টি নিয়ে আজ রাতে বা কাল আমাদের সভায় তুলব এবং কিছু সিদ্ধান্ত নেব।

সূত্র: সমকাল।

Advertisement