Homeসব খবরজাতীয়চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দেয় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপ। এ কারণে আজ শনিবার সকাল থেকে নগরীতে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠাঁই দাঁড়িয়ে থেকেও গণপরিবহন পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকেই সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ অন্য গাড়িতে করে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। এজন্য তাদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। নগরের মুরাদপুর মোড়ে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করে গাড়ি না পেয়ে হেঁটেই কলেজে এসেছেন এক শিক্ষার্থী। পরে তিনি জানতে পারেন, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে গাড়ি চলাচল বন্ধ।

ব্যবসায়ী আবু আহমেদ বাবুল অক্সিজেন মোড় থেকে দুই নম্বর গেট এলাকায় আসবেন তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে। কোনো গাড়ি না পেয়ে তিনিও দাঁড়িয়েছিলেন প্রায় দেড় ঘণ্টা। এদিকে, গণপরিবহন না থাকার সুযোগে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে রিকশাচালকেরা। এ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় তাদের সঙ্গে যাত্রীদের বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। মুরাদপুর মোড়ে যাত্রী ও রিকশাচালকের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের প্রধান উপদেষ্টা আমজাদ হোসেন হাজারী দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার কারণে রাতে পেট্রল পাম্পগুলো তেল দেয়নি। এত দাম দিয়ে জ্বালানি কিনে একই ভাড়ায় আমাদের পক্ষে গাড়ি চালানো সম্ভব না। তেলের দাম বাড়লে যা ভাড়া আসবে তার সব টাকা পেট্রল পাম্পে দিয়ে আসতে হবে। এতে করে শ্রমিকের বেতনও হবে না, গাড়ির কিস্তি দেব কি করে? তাই শনিবার সকাল থেকে আমাদের বাস চলাচল বন্ধ আছে।’

প্রসঙ্গত, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশে নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করে থাকে। ভারত গত ২২ মে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৯২ দশমিক ৭৬ রুপি এবং পেট্রল লিটার প্রতি ১০৬ দশমিক ০৩ রুপি নির্ধারণ করেছে যা অদ্যাবধি বিদ্যমান। এই মূল্য বাংলাদেশি টাকায় যথাক্রমে ১১৪ দশমিক ০৯ টাকা এবং ১৩০ দশমিক ৪২ টাকা। (১ রুপি = গড় ১.২৩ টাকা)। অর্থাৎ বাংলাদেশে কলকাতার তুলনায় ডিজেলের মূল্য লিটার প্রতি ৩৪ দশমিক ০৯ এবং পেট্রল লিটার প্রতি ৪৪ দশমিক ৪২ টাকা কমে বিক্রয় হচ্ছিল। মূল্য কম থাকায় তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা ছিল।

বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম কর্পোরেশন বিগত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি ২২ থেকে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত) জ্বালানি তেল বিক্রয়ে (সকল পণ্য) ৮০১৪.৫১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। বর্তমানে, আন্তর্জাতিক তেলের বাজার পরিস্থিতির কারণে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখাতে যৌক্তিক মূল্য সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল।

Advertisement