Homeসব খবরজেলার খবরচট্টগ্রামের কোরবানির হাটে বিলুপ্ত প্রজাতির 'গয়াল'

চট্টগ্রামের কোরবানির হাটে বিলুপ্ত প্রজাতির ‘গয়াল’

চট্টগ্রামের কোরবানি বাজারে সবাইকে আকৃষ্ট করেছে বিলুপ্ত প্রজাতির গৃহপালিত ‘গয়াল’। বনগরু প্রজাতির এই পশুটি চট্টগ্রামে ‘চিটাগাং বাইসন’ নামেও খ্যাত। এই গয়ালের খামার গড়ে তুলেছেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের সুখবিলাস গ্রামের এরশাদ মাহমুদ। তিনটি গয়াল দিয়ে শুরু। এখন তার খামারে রয়েছে শতাধিক গয়াল। গত ১৩ বছরে ছোট-বড় তিন শতাধিক গয়াল বিক্রি করে আয় করেছেন প্রায় ১০ কোটি টাকা। এরশাদ মাহমুদ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের ছোট ভাই। মৎস্য চাষেও সফল এই তরুণ উদ্যোক্তা পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর পদক।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়ার ঐতিহাসিক সুখবিলাস দশমাইল মুক্তিযোদ্ধা বাজারে দুটি গয়াল সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এর একটির নাম বেলজিয়ামের ফুটবল তারকা লুকাকুর নামে। ‘লুকাকু’র ওজন ১৬ মণ। দাম হাঁকা হয়েছে সাত লাখ টাকা। অপরটি আর্জেন্টিনার ফুটবল তারকা ডি মারিয়ার নামে। ১০ মণ ওজনের ডি মারিয়ার দাম পাঁচ লাখ টাকা।

এরশাদের খামারের ম্যানেজার মো. ইয়াছিন বলেন, গয়াল লালন-পালনে বাড়তি শ্রমের পাশাপাশি অনেক টাকাও খরচ হয়। যে কারণে নির্ধারিত দামের কমে গয়াল দুটি বিক্রি করা অসম্ভব। খামারে শতাধিক গয়াল রয়েছে। এরই মধ্যে ৩০টি বিক্রি হয়েছে। এদিকে লাভজনক হওয়ায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে গয়ালের খামার গড়ে উঠেছে। গরুর মাংসের বিকল্প হিসেবে অনেকের কাছে গয়ালের মাংস খুব পছন্দের। কোলেস্টেরল কম হওয়ায় মাংস মানবদেহের জন্য কম ঝুঁকিপূর্ণ।

গয়াল পালনে সফল এরশাদ মাহমুদ বলেন, ‘এক সময় গয়াল বণ্যপ্রাণী হিসেবে সংরক্ষিত থাকলেও ১৯৬৪ সাল থেকে এটি গৃহপালিত পশু হিসেবে স্বীকৃত। বন-জঙ্গলে ঘেরা আমার খামারে প্রাকৃতিকভাবেই গয়ালের প্রজনন হচ্ছে। খাদ্য হিসেবে ভুসি, কুঁড়া, কাঁচা ঘাস ও শুকনো খড় দেওয়া হয়। এদের দেহে কৃত্রিম ওষুধ প্রয়োগের প্রয়োজন পড়ে না। গয়াল ১৫-১৬ বছর পর্যন্ত বাঁচে। ১০-১১ মাস গর্ভধারণের পর মাদি গয়াল একটি বাচ্চার জন্ম দেয়। গাভির মতো গয়ালের ওলান নেই। স্তনবৃন্ত ছোট হওয়ায় গয়াল থেকে দুধ দোহানো যায় না। গয়াল মূলত মাংসের চাহিদা পূরণ করে। মাংস খুবই সুস্বাদু।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, ‘তৃণভোজী গয়াল মূলত হাতির সহবাসী। গহিন বনের ছোট ছোট ঝোপে এরা দল বেঁধে থাকে। তবে এটি এখন গৃহপালিত পশু হিসেবে স্বীকৃত।’-সমকাল।

Advertisement