সোমবার (২৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে পটুয়াখালীর কুয়াকাটার আলীপুর বন্দরের শেখ রাসেল সেতুর মহিপুর প্রান্ত থেকে টাকাগুলো কুড়িয়ে পান জয় মজুমদার ও দীপ মজুমদার নামে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই ভাই। টাকাগুলো পেয়ে প্রথমে তারা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করেন। পরে টাকাগুলো মহিপুর থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) খন্দকার মোহাম্মদ আবুল খায়েরের কাছে হস্তান্তর করেন।
জয় ও দীপ মজুমদারের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের খাসপুকুরপাড় এলাকায়। জয় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। দীপ রাজধানীর ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র। তাদের বাবা পিযুস কান্তি মজুমদার কলাপাড়া পৌরসভায় প্রধান সহকারী হিসেবে কর্মরত।
জয় মজুমদার ও দীপ মজুমদার সংবাদমাধ্যমকে জানান, আমরা শেখ রাসেল সেতুর মহিপুর প্রান্তের পূর্ব পাশের সিঁড়ির ঢালে টাকাগুলো পড়ে থাকতে দেখি। প্রথমে টাকার বান্ডিলটি তুলে নিতে আমাদের সংকোচবোধ হচ্ছিল। পরে ভাবলাম, অন্য কেউ পেলে টাকা নিজের পকেটে নিয়ে নিতে পারেন। এর চেয়ে প্রকৃত মালিককে খুঁজে দিলে মালিক উপকৃত হবেন। এর মধ্যে ভাড়ায় চালিত এক মোটরসাইকেলচালক এসে টাকাগুলো কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। আমরা ৯৯৯-এ ফোন করে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তখন আমরা সাহস ফিরে পাই। পরে থানায় গিয়ে ঘটনা খুলে বলি এবং ওসির হাতে টাকাগুলো তুলে দেই। টাকাগুলো প্রকৃত মালিক ফিরে পেলে আমরা খুশি হবো। এ কাজে সহযোগিতা করায় আমরা পুলিশ সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
মহিপুর থানার ওসি খন্দকার মোহাম্মদ আবুল খায়ের জানান, দুই ভাইয়ের এমন সততা দেখে আমি সত্যিই মুগ্ধ। বর্তমানে অনেক তরুণ বিপথগামী। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই ভাই সত্যিই ব্যতিক্রম। তারা কুড়িয়ে পাওয়া টাকাগুলো প্রকৃত মালিককে ফিরিয়ে দিতে আমার কাছে দিয়ে গেছেন। এমন তরুণরাই এ দেশের গর্ব। তাদের সততা আমাদের সবাইকে মুগ্ধ করেছে।
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, আমি পুরো ঘটনা শোনার পর কুড়িয়ে পাওয়া টাকার প্রকৃত মালিককে খুঁজে বের করতে উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে এক ব্যক্তি থানায় এসে টাকা হারানোর কথা জানিয়েছেন। তিনি প্রমাণ হাজির করেছেন। প্রাথমিকভাবে টাকার বান্ডিলটি তার বলে প্রমাণিত হয়েছে। এরপরও কুড়িয়ে পাওয়া টাকার অন্য কোনো দাবিদার আছেন কি না, সেটা যাচাইয়ের জন্য আমরা আরও এক দিন অপেক্ষা করব। দ্রুত প্রকৃত মালিকের কাছে টাকা তুলে দেওয়া হবে। ওই দুই তরুণকে রাতেই পুলিশের গাড়িতে করে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।