Homeসব খবরক্রিকেটআইসিসির বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি দলে মুস্তাফিজ

আইসিসির বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি দলে মুস্তাফিজ

টি-টোয়েন্টির বর্ষসেরা দল দিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসি। সেখানে জায়গা পেয়েছেন টাইগার পেইস তারকা মুস্তাফিজুর রহমান। আইসিসি ওয়েবসাইটে বুধবার সেরা একাদশের নাম ঘোষণা করা হয়। সেখানে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে আছেন এই বাঁহাতি পেসার।

২০২১ সালে টি-টোয়েন্টিতে মুস্তাফিজের রেকর্ড দারুন। ২০ ম্যাচে ফিজের শিকার ২৮ উইকেট। আইসিসির বর্ষসেরা দলে ভারতের কেউ নেই। অধিনায়ক বাবর আজম। পাকিস্তান থেকে তার সঙ্গী মোহাম্মদ রিজওয়ান ও শাহীন আফ্রিদি। সাউথ আফ্রিকার তিন প্রতিনিধি এইডেন মার্করাম, ডেভিড মিলার ও তাবরিজ শামসি। টি-টোয়েন্টির বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া থেকে আছেন মিচেল মার্শ ও জশ হ্যাজলউড। এছাড়া ইংল্যান্ডের জশ বাটলার ও শ্রীলঙ্কার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা জায়গা পেয়েছেন এই দলে।

বুধবার আইসিসির ২০২১ সালের বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণার পর বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য খুশির খবর হয়ে এল বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের একাদশে সুযোগ পাওয়া। পুরো বছরে ২০ ম্যাচে ২৮ উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজ আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বছরে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি, সব মিলিয়ে পঞ্চম।

আইসিসির একাদশে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হচ্ছেন ইংল্যান্ডের জস বাটলার ও পাকিস্তানের রিজওয়ান। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একমাত্র শতক হাঁকানো বাটলার সব মিলিয়ে বছরে ১৪ ম্যাচে ৬৫.৪৪ গড়ে করেছেন ৫৮৯ রান। ২০২১ সাল তো টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান রিজওয়ানের জন্য স্বপ্নের মতোই কেটেছে। ২০২১ সালে পাকিস্তানের জার্সিতে ২৯ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন রিজওয়ান, তাতে ১টি শতক ও ১২টি অর্ধশতকসহ ৭৩.৬৬ গড়ে করেছেন ১৩২৬ রান।

ব্যাটিং-ক্রমের তিন নম্বরে বাবর আজম ছাড়া আর কে! বছরজুড়েই দুর্দান্ত বাবর সবচেয়ে চোখধাঁধানো ফর্ম বের করে আনতে বেছে নিয়েছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকেই। চারে দক্ষিণ আফ্রিকার এইডেন মার্করাম। এ বছরে ১৮ ম্যাচে ছয়টি অর্ধশতকসহ ৪৩.৮৪ গড়ে ৫৭০ রান করেছেন মার্করাম, স্ট্রাইক রেট ১৪৮.৮২।

পাঁচ নম্বরে আইসিসির একাদশের নির্বাচকেরা রেখেছেন অস্ট্রেলিয়ার মিচেল মার্শকে। অস্ট্রেলিয়ার এবার প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার পথে মার্শের ব্যাট সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে। বছরে ২১ ম্যাচে ৩৬.৮৮ গড়ে ৬২৭ রান করা মার্শ বল হাতেও নিয়েছেন ৮ উইকেট।

এরপর আইসিসির একাদশের ব্যাটিংয়ে নামবেন দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড মিলার। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য কিলার মিলার উপাধি পাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকান বাঁহাতি গত বছরে ১৭ ম্যাচে ৪৭.১২ গড়ে করেছেন ৩৭৭ রান। স্ট্রাইক রেট ১৪৯.৬০।

সাত ও নম্বরে দুজন স্পিনারকে থাকছেন আইসিসির একাদশে, আর স্পিনার কোটায় এ বছরে শ্রীলঙ্কার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার চেয়ে এগিয়ে আর কে-ই বা থাকতে পারেন! তার সঙ্গে স্পিনে জুটি বাঁধবেন বোলারদের র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকান বাঁহাতি স্পিনার তাবরেইজ শামসি। একাদশে বাকি তিনটি জায়গা দখল করছেন তিন ফাস্ট বোলার। মোস্তাফিজের সঙ্গে আরেক বাঁহাতি বোলার পাকিস্তানের শাহিন আফ্রিদি, আর তাদের সঙ্গে বৈচিত্র আনতে থাকছেন অস্ট্রেলিয়ার জশ হ্যাজলউড।

গত বছরে অস্ট্রেলিয়াকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতানোর পথে হ্যাজলউড ৭ ম্যাচে নিয়েছেন ১১ উইকেট। বছরজুড়ে ১৫ ম্যাচে নিয়েছেন ২৩ উইকেট, প্রতি উইকেট পেতে গড়ে তাকে খরচ করতে হয়েছে ১৬.৩৪ বল। ওভারপ্রতি গড়ে রানও দিয়েছেন মাত্র ৬.৮৭ করে!

নতুন বলে দারুণ সুইং আর ইনিংসের শেষ দিকে বল কিছুটা পুরোনো হয়ে এলে রিভার্স সুইং তো পাকিস্তানের বিখ্যাত ফাস্ট বোলারদের ট্রেডমার্ক, শাহিনও ব্যতিক্রম নন। গত বছরে ২১ ম্যাচে ২৬.০৪ গড়ে ২৩ উইকেট নিয়েছেন শাহিন, ওভারপ্রতি গড়ে দিয়েছেন ৭.৮৬ রান।

আর মুস্তাফিজ? কাটার আর হঠাৎ গতির অদলবদলে ব্যাটসম্যানদের ভড়কে দেওয়ার গুন তো তার ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই চমক জাগায়। পরিসংখ্যানের দিক থেকে শাহিনের চেয়েও বছরটা বেশি ভালো কেটেছে মুস্তাফিজের। ২০ ম্যাচে ২৮ উইকেট নেয়ার পথে গড়ে প্রতি ১৭.৩৯ বল পর উইকেট পেয়েছেন ফিজ, শাহিনের ক্ষেত্রে যেটি ২৬.০৪। রান দেয়াতেও বেশি কিপ্টে ছিলেন মোস্তাফিজ। শাহিনের ৭.৮৬ ইকোনমি রেটের বিপরীতে মোস্তাফিজের ইকোনমি ৭.০০!

বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি একাদশ: জস বাটলার (ইংল্যান্ড), মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটকিপার-পাকিস্তান), বাবর আজম (অধিনায়ক-পাকিস্তান), এইডেন মারক্রাম (দক্ষিণ আফ্রিকা), মিচেল মার্শ (অস্ট্রেলিয়া), ডেভিড মিলার (দক্ষিণ আফ্রিকা), তাবরাইজ শামসি (দক্ষিণ আফ্রিকা), জস হেইজেলউড (অস্ট্রেলিয়া), ভানিন্দু হাসারাঙ্গা (শ্রীলঙ্কা), মুস্তাফিজুর রহমান (বাংলাদেশ), শাহিন শাহ আফ্রিদি (পাকিস্তান)।

Advertisement