Homeঅন্যান্যহাটে নয়, ক্রেতার ভিড় খামারে

হাটে নয়, ক্রেতার ভিড় খামারে

একেতো গরম সেইসঙ্গে কোরবানির পশুর হাটে অনেক ভিড়। সঙ্গে রয়েছে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য। এসব ঝামেলা এড়িয়ে কিশোরগঞ্জে কোরবানির পশু কিনতে সরাসরি খামারে গৃহস্থের বাড়িতে ভিড় করছেন ক্রেতারা।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে জেলার ১৩টি উপজেলায় এ বছর কোরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৯৩৩টি পশুর।

জেলায় এ বছর কোরবানির জন্য প্রায় ১ লাখ ৯৯ হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫১০৫টি ষাঁড়, ৩১৭০টি বলদ, ১৬ হাজার ৬০১টি গাভী, ১ হাজার ৪২৯টি মহিষ, ১ লাখ ৮৪ হাজার ১৬৮টি ছাগল ও ৪ হাজার ৯২৩টি ভেড়া কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে প্রস্তুত করা এসব পশু কিনতে খামারে প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন খুচরা ক্রেতাসহ পাইকাররাও।

ক্রেতারা জানান, হাটের ভিড় এড়িয়ে সুস্থ-সবল পশু দেখেশুনে কিনতে তারা সরাসরি খামারে এসেছেন।খামারিরা জানান, গবাদিপশুর খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যয় বেশি হয়েছে। সেই তুলনায় ন্যায্যদাম পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তারা।

বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশন কিশোরগঞ্জ জেলার শাখার সভাপতি আজমল খান বলেন, চলতি বছর দেশীয় গরু দ্বারাই কোরবানি চাহিদা পূরণ হবে এবং ২৭ হাজার ৭৬৩টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।

করিমগঞ্জ উপজেলার আয়লা গ্রামের ইয়াসিন এগ্রো ফার্মের মালিক মোশাররফ হোসেন সুমন জানান, এ বছর তার ফার্মে ১০-১৫টি গরু রয়েছে যা কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। গরুলো তিনি দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করেছেন। ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তিনি। এলাকার স্থানীয় যুবকরা তার ফার্ম দেখে উৎসাহিত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

খামারিরা জানান, বেশির ভাগ খামারি নিজেদের গচ্ছিত পুঁজি দিয়ে খামারে কোরবানির জন্য পশু পালন করেছেন। আবার অনেক খামারি এনজিও বা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েও পশু পালন করেছেন। পশুখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় পশু লালন-পালনে ব্যয়ও বেড়েছে। এখন সে অনুযায়ী দাম না পেলে খামারিদের পথে বসতে হবে।

সদর উপজেলার খামারি বিপুল মিয়া জানান, তার খামারে ২২টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে ১২টি এবার কোরবানির হাটে তুলবেন। ভালো দাম পাবেন বলে আশা করছেন তিনি।

খামারে গরু কিনতে আসা আবুল হোসেন নামের এক ক্রেতা জানান, পশুর হাটগুলোতে এক লাখ টাকায় পাঁচ হাজার টাকা হাসিল দিতে হয় ক্রেতাকে। খামার থেকে গরু কিনলে সেই টাকা দিতে হচ্ছে না। তা ছাড়া সুস্থ-সবল নিশ্চিত হয়েই গরু কিনছেন তারা।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুভাষ চন্দ্র পন্ডিত জানান, কিশোরগঞ্জ জেলায় এ বছর ২৩ হাজার খামারির মাধ্যমে ১ লাখ ৭১ হাজার ৯৩৩টি পশু কোরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে। সর্বমোট পশু প্রস্তুত আছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯৬টি। অসুস্থ পশু যাতে বিক্রি করতে না পারে তার জন্য কোরবানির হাটে ৪৭টি ভেটেনারি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। চামড়া ছাড়ানো ও সংরক্ষণের জন্য ২৫০ জন কসাই ও ২৭০ জন মৌসুমি কসাইদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

Advertisement