Homeসব খবরজেলার খবরসেই কুমিরটি ফিরে পেতে চান চরহাজারীবাসী

সেই কুমিরটি ফিরে পেতে চান চরহাজারীবাসী

সম্প্রতি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরহাজারী গ্রামের একটি পুকুর থেকে একটি কুমির উদ্ধার করে বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও অপরাধ দমন ইউনিট। বলা হয়, গত ৪৭ বছর ধরে কুমিরটি ওই পুকুরে রেখে পালা হচ্ছিল।

এবার সেই কুমিরকে ফেরত পেতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী। মঙ্গলবার বিকেলে এলাকার শতাধিক নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর বিভিন্ন ব্যানার ও হাতে লেখা পোস্টার হাতে সড়কে দাঁড়িয়ে ফেরত চান কুমিরটিকে। তাদের দাবি, কুমিরটি তাদের দীর্ঘ ৩৫ বছরের আবেগ ভালোবাসা। দ্রুত কুমিরটিকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বন বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণও করেন তারা।

চরহাজারী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আলী নগর বাজারে ঘণ্টাব্যাপী চলা এ মানববন্ধনে বক্তারা কুমিরের জন্য কান্নাকাটি করে তাদের আবেগ-অনুভূতির কথা প্রকাশ করেন। বলেন, ‘রুপালি’ নামের এই কুমিরটির সঙ্গে এলাকাবাসীর দীর্ঘ ৩৫ বছরের আবেগ ও ভালোবাসা জড়িত। কুমিরটিকে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে গ্রামের অনেক কুমিরভক্ত কান্নায় ভেঙে পড়েন। নামাজ-রোজা রেখে কুমিরকে ফিরে পেতে দোয়াও করেন।

মানববন্ধনকারীরা জানান, চরহাজারী গ্রামের খারশেদ আলম হুজুর খান জাহান আলীর মাজারের একজন খাদেম ছিলেন। তিনি সেখান থেকে বিদায় নিয়ে আসার সময় মাজার কর্তৃপক্ষ তাঁকে নারী-পুরুষ কুমিরের দুটি বাচ্চা উপহার দেন। তিনি কুমিরের বাচ্চা দুটি নিজের পৈত্রিক পুকুরে ছেড়ে বড় করতে থাকেন। পরে কুমিরের নিরাপদ আবাসনের জন্য খোরেশেদ আলমের বাবা পুকুরসহ মোট ১০ শতাংশ জায়গা সব ছেলের সাথে কথা বলে কুমিরের নামে লিখে দেন। খাবারের জন্য গড়ে তোলা হয় পুকুরের পাশে একটি মুরগির খামার। অনেক কুমির ভক্ত উপহার হিসেবেও দিয়ে যায় মুরগি। পুরুষ কুমিরটি একসময় মারা গেলেও বেঁচে ছিল ‘রুপালি’।

পরে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি খবর পেয়ে বন্যপ্রাণী ও অপরাধ দমন ইউনিটের একটি দল কুমিরটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস তখন জানান, পুরুষ কুমিরটি ২০ বছর আগে মারা যায়। এরপর থেকে নারী কুমিরটি সঙ্গীহীন অবস্থায় ছিল।

উদ্ধার করা কুমিরটির বয়স আনুমানিক ৫০ বছরের বেশি বলে জানান রথীন্দ্র বিশ্বাস। তিনি বলেন, কুমিরটির ওজন প্রায় ১০০ কেজি। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে কুমিরটিকে চট্টগ্রামের ডুলাহাজরার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কে অবমুক্ত করা হবে।

Advertisement