Homeঅন্যান্যসন্তানদের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দিতে ববিতার সংগ্রাম

সন্তানদের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দিতে ববিতার সংগ্রাম

ববিতা রাণী দাসের বাড়ি জামালপুরের মাদারগঞ্জের কড়ইচূড়া ইউনিয়নের বড়ভাংবাড়ি (মিলনবাজার) গ্রামে। জুতা সেলাই করে চলে ববিতা রাণীর সংসার। দুই সন্তানের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দিতে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে চলছে তার সংগ্রাম।

বাবার ইচ্ছায় অল্প বয়সেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ববিতা। বিয়ের পর সংসারে আসে ফুটফুটে দুই সন্তান। এক সময় পারিবারিক নানান কলহে স্বামীর সংসার ত্যাগ করতে হয় তাকে। আবারো অসহায় বাবার বাড়িতেই ঠাঁই হয় তার। এরই মধ্যে বাবাও মারা যান। এতে দুই সন্তানসহ নিজের ভরণ-পোষণের যোগান দিতে কোনো উপায় না দেখে বাবার শোখানো জুতা সেলাইয়ের কাজই বেছে নেন। তিনি এখন প্রতিনিয়ত ফুটপাতে বসেই মানুষের জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন। মাদারগঞ্জ উপজেলায় তিনিই একমাত্র নারী মুচি।

জানা যায়, উপজেলার বড়ভাংবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৩৩ বছর বয়সী নারী ববিতা রানী দাস। দুই সন্তান জন্মের পর স্বামীর সংসার ছাড়তে হয় তাকে। ববিতা পেটের তাড়নায় বেছে নেন বাবার শেখানো পেশা। এরই মধ্যে ববিতার শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগ। টাকার অভাবে হচ্ছে না চিকিৎসা। দু’বেলা পেটে ভাত জুটানোই যেখানে দায়, সেখানে চিকিৎসা করাবেন কীভাবে! নিজের এলাকায় অনেক বিত্তবান থাকলেও তার খোঁজ নেয়ার মতো কেউ নেই।

ববিতা বলেন, বাবার মৃত্যুর পর বাধ্য হয়ে এ পেশায় এসেছি। অবুঝ দুই সন্তান নিয়ে খুবই অসহায় অবস্থায় পড়েছেন। ভাঙা ঘরে দুটি শিশু বাচ্চা নিয়ে খুব কষ্ট করে থাকতে হয়। এলাকার বিত্তবানরা একটু সহযোগিতা করলে অনেক উপকার হয়। বাবার বাড়িতে বোঝা হয়ে থাকতে চাই না। নারী হয়ে ফুটপাতে বসে অন্যের জুতা মেরামত করার ফলে অনেকে তার কাছে আসেন না। তাই সে কম টাকায় জুতা সেলাইয়ের কাজটি নিপুণভাবে করে দেয়। সারাদিন রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে যা আয় হয়, তা দিয়ে ঠিকমতো সংসার চলানো দায় হয়ে পড়ে।

Advertisement