Homeসব খবরজেলার খবরশীতে বেড়েছে হাঁসের চাহিদা

শীতে বেড়েছে হাঁসের চাহিদা

ষড় ঋতুর বাংলাদেশে। দেশে চলছে এখন শীতকাল। এই শীতে ভোলার লালমোহন উপজেলার মানুষের কাছে বেড়েছে পাতি হাঁসের চাহিদা। শীতের শুরু থেকে জমজমাট হাঁস কেনা-বেচা। গ্রাম-গঞ্জের প্রতিটি এলাকার হাঁসের বাজার এখন চাঙা। বর্তমানে যেকোনো আনন্দ-উৎসবে অতিথিদের আপ্যায়নের প্রথম তালিকায় থাকে হাঁসের মাংস।

শীতের মৌসুমে লালমোহনের মানুষজনের কাছে খাদ্য তালিকায় বিশেষ গুরুত্ব পায় হাঁসের মাংস। হাঁসের মাংস না থাকলে যেন জমে উঠে না কোনো আয়োজন। যার জন্য অনেক সময়ই দিন-ক্ষণ ঠিক করে চলে হাঁস পার্টি। কেউ রুটি দিয়ে আবার কেউ ভাতের সঙ্গে খায় এই হাঁসের মাংস। লালমোহন উপজেলায় যুগযুগ ধরে চলে আসছে এই রীতি। শীতে হাঁস খাওয়া যেন এই এলাকার মানুষের কাছে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য। শীতকে ঘিরে অনেকে আবার মৌসুমি হাঁস ব্যবসা শুরু করেন।

লালমোহন পৌরসভার উত্তর বাজার এলাকায় সড়কের পাশে ফুটপাতে বসে হাঁস বিক্রি করছেন তেমন-ই এক বিক্রেতা মো. বাবুল। তিনি পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কেরামত আলী বাড়ির বাসিন্দ।

তিনি জানান, দীর্ঘ ৮ বছর ধরে বাজারের ফুটপাতে বসে হাঁস বিক্রি করি। প্রত্যেক বাংলা কার্তিক মাস থেকে ফালগুন মাস পর্যন্ত চলে এই হাঁস বিক্রি। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সড়কের পাশে ফুটপাতে বসে হাঁস বিক্রি করি। প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০টি হাঁস বিক্রি হয়। মাঝে মধ্যে একশতটিও বিক্রি হয়। একশত হাঁস বিক্রি করলে কমপক্ষে ৫ হাজার টাকার মতো লাভ হয়। এদিয়ে চলে আমার সংসার। সংসারে ২ মেয়ে ও ১ ছেলে রয়েছে। ২ মেয়ের মধ্যে একজনকে বিয়ে দিয়েছি, ছেলে বিয়ে করে চাকরির সুবাধে স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় থাকে। বর্তমানে এক মেয়ে আছে ঘরে। সে নবম শ্রেণিতে পড়ে।

উত্তর বাজারের আরেক হাঁস বিক্রেতা মো. জামাল। তিনি উপজেলার কালমা ইউনিয়নের চরছকিনা এলাকার মাঝি বাড়ির বাসিন্দা।

তিনি বলেন, অসুস্থতার কারণে ডান পা কেটে ফেলতে হয়েছে। এরপর থেকে অন্য কোনো কাজ করতে পারি না। বিগত প্রায় ৫ বছর ধরে শীতের সময় হাঁস বিক্রি করছি। লালমোহনের স্থানীয় হাঁস দিয়ে চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না। অধিকাংশ ব্যক্তিই বাহিরের জেলা থেকে কিনে আনেন। গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, তেরোখাদা, ভোলা সদরসহ বিভিন্ন চরাঞ্চল থেকে হাঁস আনা হয়। তবে স্থানীয় হাঁসের চাহিদা ও দাম বেশি। বাহিরের প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হয় সাতশত থেকে আটশ টাকা। আর স্থানীয় প্রতি পিস হাঁস ওজন ও সাইজ অনুযায়ী আটশ থেকে এক হাজার টাকায়ও বিক্রি হয়। শীতের মৌসুমে হাঁস বিক্রি করে যা আয় হয়, তা দিয়েই কোনো রকমে সারা বছর চলে যায়।

লালমোহন চৌরাস্তার মোড়ের হাঁস বিক্রেতা মো. কবির। তিনি জানান, আমি চরের থেকে হাঁস এনে বিক্রি করি। প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০টি হাঁস বিক্রি করতে পারি। এখন শীত বেশি, তাই হাঁসেরও বেচা-কেনা অনেকটা ভালো।

হাঁস ক্রেতা আব্দুর রহমান ও আজগর বলেন, শীতে হাঁসের মাংসের অন্য রকম স্বাদ পাওয়া যায়। পরিবারের সদস্যদের আবদার ছিল হাঁসের মাংস খাবে। যার জন্য হাতের নাগালের বাহিরে দাম হলেও দুইটি হাঁস কিনেছি। প্রতি বছরের চেয়েও এ বছর হাঁসের দাম একটু বেশি।

সূত্র: ডেইলি-বাংলাদেশ।

Advertisement