Homeসব খবরজেলার খবরমেহেরপুরে ৫৬৫ হেক্টর জমিতে রসুন চাষ

মেহেরপুরে ৫৬৫ হেক্টর জমিতে রসুন চাষ

জেলায় এ বছর ৫৬৫ হেক্টর জমিতে রসুন চাষ করা হয়েছে। চাষিরা আশা করছেন রসুন চাষে তার লাভবান হবেন। সদর উপজেলার উজ্জলপুর গ্রামের রসুন চাষি কুদ্দুস আলী বলেন. নভেম্বরে একমাত্র মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। জামাতাকে মোটর সাইকলে দেবার ইচ্ছায় এবছর দুইবিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছি। আগামী ফেব্রুয়ারিতে রসুন তুলে লাভের টাকায় জামাতাকে লাখ দেড়েক টাকায় একটি মোটর সাইকলে কিনে দেব। বাকী টাকা দিয়ে দুই কুঠরির ঘরের টিনের চালা বদলে ছাদ দেব।

তিনি জানান, দুইবিঘা রসুনচাষে খরচ হয়েছে ৫৫ প্রায় হাজার টাকা। তিনি আশা করছেন চার লাখ টাকার বেচা কেনা হবে বলে। কুদ্দুস আলীর মতো জেলার রসুনচাষীরা কেউ স্বপ্ন বুনছেন রসুন বিক্রি করে ঘর মেরামত, ধার-দেনা পরিশোধ করবেন, কিনবেন বাড়ির আসবাবপত্র, কেউবা কিনবেন নতুন টেলিভিশন ইত্যাদি।

ভেষজগুণে গুনান্বিত, মসল্লা জাতীয় সর্বপরি অর্থকরী ফসল হিসেবে গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে রসুন চাষ বেড়েছে। বিগত কয়েক বছর রসুনের দাম কম থাকায় জেলায় রসুনের চাষ কমে গিয়েছিল। গত বছর থেকে রসুনের দাম বাড়ায় জেলার চাষিরা আবারও রসুুন চাষে ঝুঁকছে। এ বছর এ অঞ্চলের কৃষকেরা রসুন চাষ করে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন।

জেলা কৃষি বিভাগের হিসেবে, চলতি মৌসুমে এ জেলায় ৫২৫ হেক্টর জমিতে রসুনচাষের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছিল। সেখানে চাষ হয়েছে ৫৬৫ হেক্টর জমিতে। গত বছর প্রায় ৫শ হেক্টর জমিতে রসুন চাষ হয়। প্রকৃতি অনুকূলে থাকা, সেচ ও সারের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় ভালো ফলনের মাধ্যমে কৃষকরা লাভবান হবেন বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

সরেজমিনে সদর উপজেলার গোভীপুর, হরিরামপুর, পিরোজপুর, উজ্জলপুর, মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালি, কেদারগঞ্জ, গাংনী উপজেলার সাহারবাটি, ধলা, বাথানপাড়া গ্রামের মাঠ ঘুরে চাষিদের রসুনচাষ নিয়ে ব্যস্ততা দেখা যায়।

চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিঘাপ্রতি ৭০ থেকে ৭৫ মণ রসুন ফলন হবে বলে আশা করছেন। গড়ে প্রতি মণ রসুন আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা করে হলেও বিঘায় দুইলাখ টাকারও বেশী বেচাকেনা হবে।

মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার আলমগীর হোসেন বলেন, চাহিদা এবং ভালো দাম থাকায় এবার রসুন চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও রসুন চাষিদের উৎসাহিত করতে উন্নত জাতের বারি রসুন-১ ও বারি রসুন-৩ চাষে সহযোগিতা করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা। তাই এবার রসুনের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন- অর্থকরি ফসল হিসেবে রসুন চাষের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ চলমান। রাষ্ট্রীয় খরচে প্রদর্শনী প্লট করে চাষিদের রসুনচাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়।

ভেষজ চিকিৎসকদের মতে রসুনে আমিষ, প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘সি’ থাকে। রসুন ব্যবহারে অজীণর্তা, পেটফাঁপা, হৃদরোগ, অর্শ, ক্রিমি, সর্দি, কাশি, টাইফয়েডসহ বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

সূত্র: বাসস

Advertisement