Homeসব খবরজেলার খবরমিরসরাইয়ে আমন ধানের মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন

মিরসরাইয়ে আমন ধানের মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌর এলাকায় আমন ফসলের মাঠে ঢেউ খেলছে সবুজ পাতা ও সোনালি শীষ। আর সোনালি মাঠের ঢেউয়ে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। সোনালি-সবুজের সমারোহের পাশাপাশি হেমন্তের বাতাসে ধান ক্ষেতের সবুজ ঢেউ যেন উপজেলার প্রান্তিক কৃষকের মন ভরিয়ে দিচ্ছে। ক’দিন পরেই সবুজ ধানগাছের শীষ হলুদ বর্ণ ধারণ করে ফসল কাটার উপযোগী হবে। এর পর ফসলের মাঠ ঝলমল করবে সোনালি ধানে। ধান কাটা ও মাড়াইয়ে মহাব্যস্ত হয়ে পড়বেন কৃষকরা। এর পর সোনালি ধানে ভরে উঠবে কৃষাণীর শূন্য গোলা।

মিরসরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৯ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমি। সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ার পরও আমন ধান আবাদে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। ১৯ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, জোরারগঞ্জ, ওচমানপুর, ইছাখালী, কাটাছড়া, দুর্গাপুর, মিরসরাই সদর, মিঠানালা, মঘাদিয়া, খৈয়াছড়া, মায়ানী, হাইতকান্দি, ওয়াহেদপুর ও সাহেরখালী ইউনিয়নে আমনের আবাদ করা হয়। তবে সবচেয়ে বেশি ইছাখালী ইউনিয়নে ৯৫০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ করা হয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ কৃষি মাঠে সবুজের সমারোহ। দু’ চোখ যতটুকু যাচ্ছে ধানের ক্ষেতই চোখে পড়ছে। অনেক কৃষক মাঠে ধান গাছের পরিচর্যা করছে। কেউ কেউ সার, কীটনাশক প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার এবং পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করে ক্ষতি পোষাতে সচেষ্ট রয়েছেন। আবার অনেক কৃষক ক্ষেতের পাশে বসে বসে ধানের পাহারা দিচ্ছেন।

উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের মধ্যম আজমনগর গ্রামের মোকাররম হোসেন বলেন, ‘এবার আমি প্রায় দেড়কানি (১৮০ শতক) জমিতে আমন চাষ করেছি। এখনো কাটার উপযোগী হয়নি। তার মধ্যে ২০ শতক জমির ধান পেকে আসছে। ধানের যে পরিস্থিতি দেখছি যদি কোনো ধরনের দুর্যোগ না আসে তা হলে ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি।

উপজেলার ইছাখালী ইউনিয়নের চরশরত এলাকার কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি এবার প্রায় ১২০ শতক জমিতে আমনের চাষ করেছি। বৃষ্টির কারণে রোপা আমন লাগাতে দেরি হওয়ায় চিন্তায় ছিলাম। জমিতে ধানের অবস্থা ভালো। আশা করছি এবারো ভালো ফলন হবে ইনশা আল্লাহ।’

ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ধানচাষে আগের মতো লাভ হয় না। সার ও টিকনাশকসহ সব উপকরণের দাম বেড়ে গেছে। এ ছাড়া শ্রমিকের মজুরিও আগের চেয়ে বেশি। ভালো দামে বিক্রি করতে পারলে পোষাবে, না হয় লাভ হবে না।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ার পরও আমন আবাদে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। যদি ঠিক সময়ে পানি পাওয়া যেত তাহলে আরো বেশি জমিতে চাষ করা সম্ভব ছিল। উপজেলাজুড়ে ১৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে উফশী জাতের, ২০০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ১০৫০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের ধান আবাদ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এবার আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৫ হাজার ২৮০ মেট্রিক টন। জমিতে ধানের অবস্থা এখন খুব ভালো রয়েছে। শেষ পর্যন্ত যদি আবহওয়া অনুকূলে থাকে তা হলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আশাবাদী।-নয়া দিগন্ত

Advertisement