Homeসব খবরজেলার খবরমাশরুম চাষে তাক লাগিয়েছেন কলেজছাত্র আব্দুল মোমিন

মাশরুম চাষে তাক লাগিয়েছেন কলেজছাত্র আব্দুল মোমিন

আব্দুল মোমিনের বাড়ি বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার শালিখা গ্রামে। তিনি ঐ গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ ব্যাপারীর ছেলে। দুই ভাইয়ের মধ্যে আব্দুল মোমিনই বড়। আব্দুল মোমিন সোনাতলা সরকারি নাজির আখতার কলেজে বাংলা বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র। মাশরুম চাষে স্বাবলম্বী হয়েছেন প্রত্যন্ত গ্রামের এই শিক্ষার্থী।

আব্দুল মোমিন জানান, অভাবের সংসারে হাল ধরতে এবং নিজে কিছু করার জন্য মাশরুম চাষকে বেছে নেন। চাকরির পেছনে না ছুটা এ তরুণ বছর ঘুরতেই সফলতার দেখা পান মাশরুম চাষে। তবে খুব সহজে এ সফলতা আসেনি। এজন্য তাকে করতে হয়েছে অক্লান্ত পরিশ্রম। বর্তমানে তিনি মাশরুম বিক্রি করে মাসে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আয় করেন।

তিনি বলেন, পড়াশোনা করে চাকরি করবো- এই অপেক্ষায় না থেকে নিজে কিছু একটা করার চেষ্টা করি। প্রথমে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত মাথায় নেই কিন্তু কোনো কিছুতেই স্থির হতে পারছিলাম না। পরে সিদ্ধান্ত নেই মাশরুম চাষ করবো।

এরপর মাগুরা মাশরুম সেন্টারে চারদিনের প্রশিক্ষণ নেন আব্দুল মোমিন। পরে দেশের প্রায় ২২টি মাশরুম সেন্টার ভিজিট করেন তিনি। এরপর সেখান থেকে সাভারে চলে আসেন। সাভার থেকে টিউশনি করে জমানো ১০ হাজার টাকা এবং পরিবারের দেওয়া ২০ হাজার টাকা দিয়ে মাশরুম চাষের সরঞ্জাম কিনে গ্রামে ফেরেন। এরপর আব্দুল মোমিন গড়ে তোলেন ‘শালিখা অ্যাগ্রো অ্যান্ড মাশরুম সেন্টার।

প্রথমে পরিবার আব্দুল মোমিনের এ কাজে সায় না দিলেও পরে বুঝিয়ে বললে সায় দেয়। মামা আতোয়ার হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে নিজের পারিবারিক বাঁশঝাড়ের নিচে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাশরুম চাষের জন্য ঘর তোলেন তিনি। মাশরুম চাষে তার প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ হয়। তিনি আশা করছেন এই মৌসুমেই প্রায় দুই লাখ টাকার মাশরুম বিক্রি করতে পারবেন।

আব্দুম মোমিন বেলন, একটি পলিব্যাগে কাঠের গুঁড়া বা ধানের গুঁড়া, গমের ভুসি, ধানের খড়, পানি, পিপি, ডেক, তুলা ও মাশরুমের মাথা দিতে হয়। এরপর বীজগুলো ট্রান্সফার করার বিশ থেকে ত্রিশ দিনের মাথায় এটি রান হয়ে যায়। এরপর প্যাকেট কেটে পাঁচ থেকে দশ দিন রাখতে হয়। এর মধ্যেই ফলন শুরু হয়ে যায়। একটি স্পন থেকে তিন মাষের মধ্যে চারবার ফলন পাওয়া যায়। এরপর ব্যাগগুলো ফেলে না দিয়ে জমিতে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

বর্তমানে আব্দুল মোমিনের মাশরুম সেন্টারে ঋষি ও ওয়েস্টার দুই ধরনের মাশরুম উৎপাদন হচ্ছে। প্রতিদিন তার সেন্টার থেকে ১২ থেকে ১৫ কেজির মতো মাশরুম তোলেন। এগুলো ২২০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে থাকেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার সোহরাব হোসেন বলেন, মোমিন একদিন আমার অফিসে এসে তার এ উদ্যোগের কথা জানিয়ে সহযোগিতা চান। তরুণদের এ ধরনের উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। এজন্য তার মাশরুম সেন্টার দেখতে আসি। উপজেলা কৃষি অফিস তার খোঁজখবর রাখছে এবং নানা ধরনের সহায়তা দিচ্ছি। তরুণরা উদ্যোক্তা হলে বাংলাদেশের কৃষি সেক্টর অনেক এগিয়ে যাবে।

Advertisement