Homeসব খবরক্রিকেটবিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে নেই তামিম ইকবাল

বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে নেই তামিম ইকবাল

ইনজুরি শঙ্কায় দেশসেরা ব্যাটারদের মধ্যে অন্যতম তামিম ইকবালকে ছাড়াই আসন্ন আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষনা করা হয়েছে। পিঠের ইনজুরি থেকে সুস্থ হবার পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দলে ফিরেন ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তামিম। এই ইনজুরির কারণেই বাধ্য হয়ে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন তামিম।

প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হবার পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন তামিম। কিন্তু ইনজুরির শঙ্কা থাকায় তৃতীয় ওয়ানডে নো খেলার সিদ্ধান্ত নেন তামিম। টানা দুই ম্যাচ খেলার পর পিঠের ব্যথাটা আবারো দেখা দিয়েছে বুঝতে পারেন তামিম। জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেলের চেয়ারম্যান মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেন, ‘পিঠে ইনজুরির কারনে তাকে দল থেকে বাদ দিতে হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অধিনায়ক, প্রধান কোচ, মেডিকেল টিমসহ টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে পরামর্শ করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে , যেকোন সময় তার ব্যথা পুনরায় দেখা দিতে পারে। এজন্য তাকে নিয়ে আমরা ঝুঁকি নিতে পারি না।’

বিকেলে বিশ্বকাপের দল ঘোষণার কথা থাকলেও সেটি বিলম্বিত হয় এবং শেষ পর্যন্ত রাতে ঘোষণা করা হয়। বিলম্বের কারণ হিসেবে তামিমের বিষয়টি নিয়ে পর্দার আড়ালে অনেক নাটকীয়তা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। দল ঘোষনার আগেই তামিম নিজের ইনজুরির বিষয়টি মাথায় রাখতে নির্বাচকদের বলেছিলেন জানা গেছে। বিশ্বকাপে সব ম্যাচ খেলতে পারবেনা বলেও জানিয়েছিলেন তামিম। যে সকল খেলোয়াড় সব ম্যাচ খেলতে পারবে না অধিনায়ক সাকিব ও কোচ হাথুরু তাদের দলে না রাখার পক্ষে ছিলেন বলে জানা গেছে।

পুরোপুরি ফিট না হওয়া তামিমকে দলে রাখা হলে সাকিব অধিনায়কত্ব করবেন না বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।সাবেক অধিনায়ক মাশরাপি বিন মর্তুজাকে বিসিবি সভাপতির বাসায় ঢুকতে; দেখা গেছে এবং গত রাতে সাকিবও তামিমের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে বলে জানা গেছে। বিশ্বকাপ দল নির্বাচনের প্রক্রিয়াকালে আজ শেরে বাংলা স্টেডিয়ামেও মাশরাফিকে দেখা গেছে।

তবে সব কিছু গুঞ্জনকে উড়িয়ে দিয়ে প্রধান নির্বাচক নান্নু বলেছেন এ সব গুঞ্জনের কোন ভিত্তি নেই। নান্নু বলেন,‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়গুলো আমরাও দেখেছি। আমাদের জানামতে এসব কিছুই ভিত্তিহীন। মাশরাফি এখানে এসেছে বিসিবি সভাপতির সঙ্গে কথা বলতে। দল নির্বাচন প্রকিয়ায় সে থাকবে কেন।’

গত মাসে ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ চলাকালে হঠাৎ করেই জাতীয় দল থেকে অবসর ঘোষণা করেন তামিম। তবে াপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার পর নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন তামিম। নিজের পিঠের ইনজুরি থেকে সুস্থ হতে পরে তিনি লন্ডনে ইনজেকশন নেন তিনি। তবে ইনজেকশনের প্রতিক্রিয়া কমে গেলে আবারো তিনি পিঠে ব্যাথা অনুভব করতে পারেন বলে জানিয়েছিলেন ডাক্তার।

‘একই ইনজুরি সমস্যা তার বার বার দেখা দিচ্ছে। দেশের এ যাবত কালের সেরা ব্যাটারদের একজন হওয়ায় পুরোপুরি ফিট তামিম বাংলাদেশের জন্য। তার ফিটনেসের অবস্থা বুঝতে তাই আমরা তাকে নিউজিল্যান্ড সিরিজে দলে ডেকেছিলাম। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। দ্বিতীয় ম্যাচে সে ব্যাটি-ফিল্ডিং করেছে। তার পিঠে আবারো ব্যথা দেখা দিয়েছে।

দুই জেনুইন ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসানকে দলে ডেকেছে বাংলাদেশ। গত বেশ কিছু দিন যাবত ব্যাট হাতে লিটনের সময়টা ভাল যাচ্ছেনা। এদিকে গত এশিয়া কাপে অভিষেক হওয়া তানজিদ এখনো বড় কোন ইর্নিংস খেলতে পারেনি। তবে নান্নু আবারো বলেছেন অফ ফর্ম কাটিয়ে না ওঠা পর্যন্ত তারা ওপেনারদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে।

নান্নু বলেন, ‘তানজিদ খুবই সম্ভাবনাময়ী একজন ওপেনার। বয়স ভিত্তিক পর্যায়ে সে ভার করেছেন। তার সেরাটা বের করে আনতে আমাদের উচিৎ তাকে সমর্থন দিয়ে যাওয়া।’

ফিটনেস এবং তার ফর্ম দলের জন্য সহায়ত হবে বিবেচনায় সিনিয়র খেলোয়াড় মাহমুদুল্লাহকে দলে রেখেছেন নির্বাচকরা। গত মাচে ইংল্যান্ড সিরিজে দুর্বল ফর্মের কারণে বাদ পড়ার পর পুনরায় জাতীয় দলে ফিরেছেন মাহমুদুল্লাহ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে তিনি যথাক্রমে ৪৯ ও ২১ রান করেছেন।

নান্নু বলেন,‘ মাহমুদুল্লাহ সব সময়ই আমাদের বিবেচনায় ছিল। আমরা বলেছিলাম বিশ্বকাপের আগে আমরা সব খেলোয়াড়কে কিছু সুযোগ দিতে চাই এবং যেঙ কারণে মাহমুদুল্লরাহকে দুই সিরিজে দলে রাখা হয়নি।আগামীকাল ভারতের উদ্দেশে দেশ ছাড়বে বাংলাদেশ দল। বিশ^কাপ শুরুর আগে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর গুয়াহাটিতে শ্রীলংকা এবং ২ আগস্ট শ্রীলংকার বিপক্ষে দ’ুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। ধর্মশালায় ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ^কাপ মিশন শুরু করবে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ।

দল: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, (সহ-অধিনায়ক), তৌহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, মাহেদি হাসান, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব।

Advertisement