Homeঅন্যান্যপাহাড়ে ‘চাইনিজ’ কমলা চাষে বাণিজ্যিকভাবে সাফল্য

পাহাড়ে ‘চাইনিজ’ কমলা চাষে বাণিজ্যিকভাবে সাফল্য

খাগড়াছড়ির পাহাড়ে ‘চাইনিজ’ কমলা চাষে (বারি কমলা-২) বাণিজ্যিকভাবে সাফল্য পেয়েছেন কৃষক। বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলছে রসালো হলুদ কমলা। পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে ভালো ফলন পাওয়ার পর এবার বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষক। এই জাতের কমলা চাষ সম্প্রসারিত হলে আমদানি নির্ভরতা কমবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলছে কমলা। দেখতে ছোট আকারের কমলা খেতে বেশ মিষ্টি। এটি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট উদ্ভাবিত বারি কমলা-২। কৃষি গবেষণার এই পরীক্ষামূলক চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন সাধারণ কৃষকরা।

এই জাতের কমলা চাষে সাফল্য পেয়েছে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার রসুলপুর গ্রামের কৃষক নুর আলম। এবারই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা চায়না কমলা বিক্রি করে লাভের মুখ দেখেছেন তিনি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে মাত্র ৭৫টি কমলার চারা রোপণ করেছিলেন তিনি। প্রতি কেজি কমলা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। তার বাগানে কাজ করে অনেকের সংসার চালাচ্ছে।

কৃষক নুর আলম বলেন, ‘২০২২ সালে প্রথম ফলন পেয়েছি। এ বছর ৩৬০ কেজি কমলা বিক্রি করেছি। আরও কিছু কমলা গাছে আছে। পাহাড়ে এটি ভালোই চাষাবাদ হচ্ছে।’

বাগান শ্রমিক আতিউর বলেন, ‘এখানে কাজ করি। মাসে যে বেতন পায় তা দিয়েই সংসার চলে।’

কমলার মিষ্টতা পেতে ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করা যায়। বর্ষায় চারা রোপণ করতে হয়। ২ বছর বয়স থেকেই গাছে ফল আসতে শুরু হয়। ফলে রং আসার সঙ্গে সঙ্গে সংগ্রহ না করে ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করলে মিষ্টতা বাড়ে।

খাগড়াছড়ির পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মালেক বলেন, ‘পরিপূর্ণ গাছে মালচিং এবং সার দিতে হবে। ফলে রং আসার সঙ্গে সঙ্গে ফল সংগ্রহ করা যাবে না। অন্তত এক মাস অপেক্ষা করতে হবে।’

বারি কমলা-২ বা চাইনিজ কমলা সারা দেশেই চাষযোগ্য বলছে কৃষি গবেষকরা। প্রতিটি গাছে ৪০০ থেকে ৫০০ পর্যন্ত ফল ধরে। মিষ্টতাও বাজারে প্রচলিত কমলার চেয়ে বেশি।

খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আলতাফ হোসেন বলেন, ‘বারি কমলা-২ আমাদের দেশে যে চায়না কমলা আমদানি হয় তার মতোই। তবে এটার মূল বৈশিষ্ট্য হলো এটি চায়নার কমলার চেয়ে মিষ্টি। গাছ প্রতি ফলনও বেশি। এটি আমাদের দেশের আবহাওয়া উপযোগী এবং দারুণভাবে উৎপাদনে সক্ষম।’

চাইজিত জাতের এই কমলার আবাদ বাড়লে বিদেশ থেকে কমলার আমদানি নির্ভরতা কমবে আশা গবেষকদের।

সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট।

Advertisement