Homeসব খবরজেলার খবরনতুন ধানে জমজমাট আশুগঞ্জ ধানের মোকাম

নতুন ধানে জমজমাট আশুগঞ্জ ধানের মোকাম

সংকট কাটিয়ে নতুন ধানে জমজমাট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ মোকাম। দেশের অন্যতম বৃহৎ এ মোকামে বৃহত্তর সিলেট, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মাধবপুরসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন হাওড়াঞ্চল থেকে হাজার হাজার মণ ধান নিয়ে আসছেন বেপারিরা। প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে ৬০/৭০ হাজর মণ ধান। যা টাকার অঙ্কে ৭/৮ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁক ডাকে এখন মুখর আশুগঞ্জ মোকাম। তবে দূরদুরান্ত থেকে ধান নিয়ে আসা বেপারিদের অভিযোগ সিন্ডকেটসহ নানা কারেণে কম দামে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।

আশুগঞ্জ মোকাম ঘুরে দেখা যায়, মেঘনা নদীর তীরবর্তী বিওসি ঘাটে অবস্থিত মোকামে এক মাস আগেও ছিল ধানের সংকট। কিন্তু বৈশাখে নতুন ধানের সরবরাহ বেড়েছে। জেলাসহ দেশের বিভিন্ন হাওড়াঞ্চলের ধান নিয়ে মোকামে ভিড় করছেন বেপারিরা। মোকাম জুড়ে থরে থরে রাখা হয়েছে নানা জাতের হাজার হাজার মণ ধানের বস্তা। এতে নতুন ধানে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে বেচা-কেনা। বৃহত্তর এই মোকামের ধান দিয়ে জেলার ২৫০ চাল কলের চাহিদা পূরণ করা হয়।

এখানে বিআর-২৮ ধান শুকনা এবং ভেজা ভেদে মণপ্রতি ১ হাজার থেকে ১১২০ টাকা, বিআর-২৯ ধান ৯২০ থেকে ১ হাজার ২০ টাকা এবং মোটা ধান সাড়ে ৭শ’ থেকে ৯শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বেপারীদের অভিযোগ, মোকামে সিন্ডিকেটসহ নানা কারণে তারা ধানের ন্যাযমূল্য থেকে বঞ্চিত। যে দামে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে আনেন। মোকামে তার চেয়েও ৪০/৫০ টাকা কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে তাদের মোটা অঙ্কের টাকা লোকসান হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ থেকে ১ হাজার মণ ধান নিয়ে আসা বেপারি মিজানুর রহমান জানান, তিনি ৯৫০ টাকা দরে স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে এনেছেন। অথচ মোকামে ধানের দাম ধরা হয় ৯২০ টাকা। কিন্তু ১০/১৫ বস্তা মাপার পর দাম হয়ে যায় ৯শ টাকা আর ৫০ বস্তা মাপার পর দাম ধরা হয় ৮৭০ টাকা। সিন্ডিকেটের কারণে ধানের দাম কম। আমাদের কিছুই করার নেই। ধান নিয়েত আর ফিরে যেতে পারব না তাই বিক্রি করে দিচ্ছি। আমার ৫০ হাজার টাকা লোকসান হবে।

আরেক বেপারি শামীম মিয়া জানান, এ মোকামে ধানের দাম কম। আমাদের অবস্থা খারাপ, অনেক লোকসান হবে। কৃষকের কাছ থেকে ১১শ’ টাকা দরে ধান কিনে এনে ১০৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমাদের পরতা হচ্ছে না। ৬/৭ জন শ্রমিক খাটিয়ে লাভের মুখ দেখছি না।

জেলা চাল কল মালিক-সমিতির সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, বেপারিরা সিন্ডিকেটের যে অভিযোগ করেছে তা সত্য নয়। আশুগঞ্জ মোকাম একটি মুক্ত মোকাম। এখানে প্রতিদিন ৭/৮ কোটি টাকার বেচা-কেনা হয়। ব্যাপারিরা মুক্তভাবে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তবে ধানের মানভেদে দাম কিছুটা কম বেশি হয়ে থাকে। এখানে শুকনো ধানের তুলনায় ভিজা ধানের দাম স্বাভাবিকভাবেই কম থাকে।

সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. কাউসার সজীব বলেন, দেশের অন্যতম বৃহৎ আশুগঞ্জ মোকাম এখন নতুন ধানে জমে উঠেছে। প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ধানের বেচাকেনা চলছে। মোকামে বেশিরভাগ ধান স্থানীয় মিল মালিকরা কিনে থাকেন। তবে অতিরিক্ত মজুদের পাশাপাশি বেপারীদের হয়রানি মুক্ত রাখতে মোকামে মনিটরিং চলমান রয়েছে।

সূত্র: চ্যানেল ২৪।

Advertisement