Homeসব খবরজেলার খবরগাছে পাতার চেয়েও যেন চড়ুইয়ের সংখ্যা বেশি, মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

গাছে পাতার চেয়েও যেন চড়ুইয়ের সংখ্যা বেশি, মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

ব্যস্ততম দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়ক লাগোয়া বিরামপুর ঢাকামোড় থানকাপড়ের দোকানের সামনে গেলে দেখা যাবে অবাক করা এক দৃশ্য। একসময় গ্রামীণ জনবসতিতে হরহামেশাই দেখা যেত চড়ুই পাখির দল। গাছপালাসহ আবাস কমে যাওয়ায় চিরচেনা চড়ুই পাখি আর তত দেখা যায় না গ্রামে। তবে কোথাও কোথাও এখনো দেখা মেলে বড়সড়ো ঝাঁকের উপস্থিতি।

বিরামপুর পৌরশহরের ঢাকামোড় এলাকায় অবস্থিত নূর গার্মেন্টসের সামনে দুটি বকুল গাছ ও দুটি আম গাছে মেলা বসায় অসংখ্য চড়ুই পাখির দল। গাছ গুলোকে চড়ুই পাখির রাজ্য বললেও ভুল হবে না। এটিতে যেন পাতার চেয়েও চড়ুইয়ের সংখ্যা বেশি। তাদের কিচিরমিচির শব্দে চারপাশ মুখর হয়ে ওঠে। নূর গার্মেন্টসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি বাকুল গাছ ও দুটি আম গাছে সন্ধ্যা হলেই ভিড় করতে শুরু করে হাজারো চড়ুই পাখি।

গত বুধবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকা মোড়ে অবস্থান করে দেখা গেছে, সূর্যাস্তের আগে দল বেঁধে ছুটে আসে চড়ুই পাখিরা। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তাদের কলরবে মুখর থাকে ঢাকামোড় এলাকা। মহাসড়কের নিরন্তর যান চলাচলের শব্দও তাদের ছাপিয়ে যেতে পারেনি। বাসের বিশ্রামরত যাত্রীদের অনেকে অজস্র পাখির কিচিরমিচিরে কৌতূহলী হয়ে এগিয়ে যায় বকুল ও আম গাছের নিচে। সেখানে গিয়ে তারা মুগ্ধ না হয়ে পারে না। অনেকেই পাখির সঙ্গে ছবি তুলছে।

মেইল বাসযাত্রী ফুলবাড়ী উপজেলার কুশলপুর গ্রামের মো. খালেক বললেন, ‘জীবনে কখনো একসঙ্গে এত চড়ুই দেখিনি। এ দৃশ্য দেখতে অসাধারণ লাগছে। তাই পাখির সঙ্গে ছবি তুলেছি। সময় থাকলে আরো কিছুক্ষণ মন ভরে পাখিগুলোকে দেখতাম। কিন্তু বাস ছেড়ে যাবে, তাই চলে যাচ্ছি।’

প্রায়ই তিনি সময় পেলে এখানকার পাখিগুলো দেখতে ছুটে আসেন। সাদিয়া বলেন, ‘চারদিকে কত কোলাহল। এর পরও চড়ুই পাখিগুলো এখানে নিজেদের নিরাপদ মনে করে। অনেক দিন থেকে ওরা এখানেই বাস করছে; ঝড়-বৃষ্টিতেও চলে যায় না। পাখিগুলো এমনভাবে গাছের পাতার সঙ্গে মিশে থাকে, হঠাৎ দেখলে মনে হবে সবই গাছের পাতা!

বিরামপুর উপজেলায় বন্য প্রাণী নিধন প্রতিরোধ ও জনসচেতনতায় কাজ করছে ‘স্বপ্নছোঁয়া সমাজ উন্নয়ন সংস্থা’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। চড়ুই পাখিগুলোর বিষয়ে কথা হলে সংগঠনটির সভাপতি আরমান আলী সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, ‘চড়ুই পাখিগুলো প্রতিদিন বিকেলে এসে এখানে বসে। পাখিগুলো আমাদের জীববৈচিত্র্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এদের যাতে কেউ শিকার না করেন বা ভয়ভীতি না দেখান, সে জন্য আমাদের সংস্থার পক্ষ থেকে গত বছর সেখানকার দোকানদার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।’

Advertisement