Homeসব খবরজেলার খবরকত শক্তি নিয়ে কখন কোথায় আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’

কত শক্তি নিয়ে কখন কোথায় আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’

পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ আরও উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। সকাল থেকেই উপকূলীয় এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশ মেঘাচ্ছন রয়েছে।

ভারতের ওড়িশা ও অন্ধ্র প্রদেশের দিকে এগোতে থাকা ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ গতিপথ পরিবর্তন করে বাংলাদেশের দিকে আসে কি না, সেটি পর্যবেক্ষণ করছেন আবহাওয়াবিদরা। এই ঝড়ের নামকরণ করেছে সৌদি আরব। আরবি শব্দ ‘জাওয়াদ’ এর অর্থ উদার, দয়ালও কিংবা দানশীল।

শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ বর্তমানে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম থেকে আড়াইশ’ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। ঝড়টি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১ হাজার ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।

ঝড়টি এখন ওড়িশা উপকূল ধরে পুরির দিকে এগোচ্ছে। তবে সেটি আস্তে আস্তে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে আবহাওয়াবিদরা জানান। তারা ধারণা করছেন, ওড়িশা উপকূল ধরে এই ঝড়টি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিকে এগিয়ে যাবে। তখন সেটি আরও দুর্বল হয়ে পড়বে বলে তারা মনে করছেন।

কেন্দ্রে ঝড়টি ঘণ্টায় নয় কিলোমিটার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে কেন্দ্রের বাইরে বাতাসের গতিবেগ রয়েছে ৭০-৮০ কিলোমিটার।

স্যাটেলাইট তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, যে গতিতে ঝড়টি এগোচ্ছে, তাতে রোববার ৫ মে দুপুরের পর নাগাদ ওড়িশা বা পশ্চিমবঙ্গে উঠে আসতে পারে। তারা জানান, এটা খুব প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা কম।

তবে ঝড়টি এখনও খানিকটা পূর্ব দিকে ঘুরছে। সেটা যদি আবার গভীর সাগরে চলে আসে, তাহলে সেটা আরও শক্তি সঞ্চার করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

এছাড়া ভূমিতে উঠে এলে তখন ঝড়টি ঘূর্ণিঝড় থেকে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। ভূমিতে আঘাত করার পর তার প্রভাবে অন্তত দুইদিন ধরে ঝড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টিপাত হতে পারে। বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, ঝড়টি এখনও সাগরে থাকলেও আজ বিকালের দিকে একটি মোড় নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

‘সেটি হলে টার্ন নিয়ে হয়তো কিছুটা বাংলাদেশের দিকেও এগোতে পারে। ফলে ভারতের দিকে যাচ্ছে বলে মনে হলেও কিছুটা অনিশ্চয়তা আছে। এই কারণে আমরা এখনও গভীরভাবে ঝড়টি পর্যবেক্ষণ করছি। আজ রাতের দিকে আরও পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে’, বলেন তিনি।

তিনি আর বলেন, শনিবার বিকেলের মধ্যে ঝড়টির গতিপথ পরিষ্কার হয়ে যাবে। এটি ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গের দিকেও এগোতে পারে, আবার গতিপথ পরিবর্তনও করতে পারে। আবহাওয়া দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এখন ২ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে এবং গভীর সাগরে বিচরণ না করার জন্য বলেছে আবহাওয়া বিভাগ। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ইতোমধ্যে ভারত ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আগামী দুইদিন এই বৃষ্টিপাত চলবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

Advertisement