Homeসব খবরজেলার খবরঅষ্ট্রেলিয়া প্রবাসীর শখের বাগানে বাণিজ্যিকভাবে আম চাষ

অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসীর শখের বাগানে বাণিজ্যিকভাবে আম চাষ

দীর্ঘ সময় ধরে পরিবার নিয়ে অষ্ট্রেলিয়া বসবাস করে আসছেন মঈন উদ্দিন। প্রবাসে বসবাস করলেও তার মন পড়ে থাকে নিজ জন্মভূমিতে। তাই তো নাড়ীর টানে নিজ এলাকা মীরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়নের অলিনগর গ্রামের বিস্তীর্ণ পাহাড়ে প্রায় ৩১ একর জায়গাজুড়ে গড়ে তুলেছেন একটি সমন্বিত খামার। এখন সেই খামারকে পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তুলেছেন তিনি।

নাম দিয়েছেন মধুরিমা রিসোর্ট এন্ড হিলসডেল মাল্টিফার্ম। সেখানে রয়েছে ডেইরি ফার্ম, হরিণের খামার, ময়ূর, ইমু পাখি, দেশী-বিদেশী হাঁস মুরগি, নানা জাতের ফলদ বনজ ও ওষুধি বৃক্ষ। হিলসডেল মাল্টিফার্মের অভ্যন্তরে প্রায় ২২ একর জমিতে ২০১৬ সাল থেকে বাণিজ্যিক ভাবে লাগানো হাড়িভাঙা ও আম্রপালি আম গাছের চারা আছে প্রায় ৮শ’র মতো।

পাশাপাশি গোরমতি, ব্যানানা, মিয়াজাকি, হিমসাগর, মল্লিকা, ল্যাংড়াসহ প্রায় আরো ১হাজার ৪শ মতো আমের চারা লাগনো হয়েছে। যেগুলোতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ফলন দিতে শুরু করবে। করেরহাটের অলিনগরের হিলসডেল মাল্টিফার্ম সুত্রে জানা যায়, হাড়িভাঙা আম হার্বেষ্টিং শুরু হয়েছে এবং জুনের ১৫ তারিখে হার্বেষ্টিং শুরু হবে। গুটি জাতের আম হার্বেষ্টিং বাজারজাত শুরু হয়েছে।

ইতোমধ্যে প্রায় ২০ মণ আম বিক্রি হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। প্রায় ৪শত গাছে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৫শ মণ। ১০-১২ লক্ষ টাকার আম বিক্রি হবে। উৎপাদিত এসব আম যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনীসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এসএ পরিবহন ও সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, হিলসডেল মাল্টি ফার্মে আম বাগানের পাশাপাশি রয়েছে পর্যটন ব্যবস্থা। এ মাল্টিফার্মের আরো এক নাম মধুরিমা রিসোর্ট। গাছগুলোতে থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা পাকা আমের গন্ধে ম ম করছে সমগ্র বাগান। আমের ভারে নুয়ে পড়েছে গাছের ডাল। বাগানে সারি সারি আম গাছের তলায় বেঞ্চে বসে পর্যটকদের আম খাওয়ার দৃশ্য চোখে পড়ে।

হিলসডেলের ম্যানেজার আশরাফুল ইসলাম বলেন, এ ফার্মে জৈব উপায়ে আম উৎপাদন করা হয়। এতিমধ্যে গুটি ও হাড়িভাঙ্গা জাতের আম বাজারজাত করছি। আম রুপালি কিছু দিনের মধ্যেই পাকতে শুরু করবে। বিগত বছরের তুলনায় শতকরা ২০ ভাগ ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে।

উদ্যোক্তা প্রবাসী মঈন উদ্দিন জানান, আমার বাগানে বিগত সময়ের তুলনায় এ বছর ভালো ফলন হয়েছে। কোনো ধরনের ফরমালিন বা কেমিকেল ব্যবহার না করায় এখানকার আমের বেশ চাহিদা রয়েছে। বেশির ভাগ আম অনলাইনে বিক্রি হয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, আমি প্রবাসে থাকলেও আমার মন পড়ে থাকে এই এই খামারে। ছুটি পেলেই আমি খামারে চলে আসি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, মীরসরাইয়ে বাণিজ্যিকভাবে ১৮০ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এই বছর ১হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হবে। বাজারমূল্য ১২০টাকা করে হলে প্রায় ১২কোটি টাকা মূল্যে আম বিক্রি হবে।

এই বছর অন্যন্য কৃষকের তুলনায় করেরহাটের হিলসডেল মাল্টিফার্মে আমের ভালো ফলন হয়েছে। আমরা আশা করছি উনি লাভবান হবেন।

Advertisement