Homeঅন্যান্যখলিল মিয়া অপেক্ষায় থাকেন কবে আসবে শুক্রবার

খলিল মিয়া অপেক্ষায় থাকেন কবে আসবে শুক্রবার

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার সোনাকান্দর মৌজার গরীবপুরের নব্বই উর্ধ্ব খলিল মিয়া অপেক্ষায় থাকেন কবে আসবে শুক্রবার, মিলবে মাছ অথবা মাংস দিয়ে এক বেলা ভালো খাবার। সংসারে এক ছেলে, দুই মেয়ে থাকলেও ছেলে-মেয়েদের কাছে তার গুরুত্ব নেই। ফলে ভিক্ষাবৃত্তি পেশায় নিজেকে টিকিয়ে রেখেছেন। ঠিকভাবে চোখে দেখতে পান না, বয়স বেড়ে নানা অসুখে জর্জরিত থাকায় চলাফেরা করতেও সমস্যা।

তাই প্রায় প্রতিনিয়ত ২/১ বেলা না খেয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে হয়। খলিল মিয়ার মতো ভিক্ষুক রাবেয়া, ছকিনা, জমিলা, আয়নাল হক, মজিবর রহমানসহ শত শত নিরীহ অসহায় ছিন্নমুল মানুষ এই দিনটির অপেক্ষায় থাকেন। এখন প্রতি শুক্রবার তাদের কাছে ঈদের দিনের মত মনে হয়।

কয়েকমাস ধরে পীরগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় প্রতি শুক্রবার গরিব ছিন্নমূল মানুষের মেহমানখানার আয়োজন করা হয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষরা একবেলা পেট পুরে মাছ কিংবা মাংস দিয়ে দুপুরের আহার করতে আসেন। স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের সহায়তায় এসব খাবার বিতরণ করা হয়ে থাকে।

‘মানবতার-লড়াই’ নামক একটি অলাভজনক, ধর্ম নিরপেক্ষ, অরাজনৈতিক ও সামাজিক অংশগ্রহণমূলক সর্বজনিন প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। চলতি বছরের জুলাই মাসে শুরু করে প্রায় ১৩ সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার পেটপুরে ভালো খাবার পেয়েছে অসহায় ছিন্নমূল মানুষরা।

দিন যত গড়িয়ে যাচ্ছে ততই এক বেলা মাছ অথবা মাংস দিয়ে দুপুরের আহার সেরে নিতে পীরগঞ্জ ছাড়াও পার্শ¦বর্তি সাদুল্লাপুর, পলাশবাড়ি, নবাবগঞ্জ ও বিরামপুর থেকে আগত মানুষের ভীড় বাড়ছে।

বিনা পয়সায় ৬ থেকে ৭ শতাধিক খেটে খাওয়া অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষদের মাছ কিংবা মাংস দিয়ে এক বেলা আহারের ব্যবস্থা করছেন সংগঠনের সভাপতি আমাদের অধিকার সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাহমুদুর রহমান ডলার, সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহিনুর ইকবাল শ্যামল, শাহ অমিন শরীফ কাজল, রওশন মিয়া, আবু তালেব মিয়া, রাকিব প্রধান, আইটি কর্মী আবু রায়হান মন্ডল।

প্রত্যেক শুক্রবার সকাল থেকেই শুরু হয় ডাল-ভাতসহ মাছ অথবা মাংস রান্নার কাজ। একবেলা পেট পুরে ভালো খেতে পেয়ে খুশি এসব মানুষরা। শুরুতে কষ্ট হলেও যুব সমাজের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন অনেকেই।

প্রতি শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে পৌরসভার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে একে একে জড়ো হতে থাকেন, অপেক্ষা করতে থাকেন, ভালো করে এক বেলার খাবার খেতে আসা শত শত অসহায় নিরিহ হতদরিদ্র ছিন্নমূল এসব মানুষ।

আয়োজন কারীদের জন্য করছেন দু’হাত তুলে দোয়া। এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে অসহায় মানুষদের পাশে থাকার আশ্বাস পৌর মেয়র তাজিমুল ইসলাম শামীমসহ অনেকের। সমাজের সার্মথবান ও বিত্তবানরা এমন মহৎ কাজে এগিয়ে আসবেন এমন প্রত্যাশা সকলের।

Advertisement