Homeসব খবরবিনোদনমানবিকতা মনুষ্যত্বের অলঙ্কার : আসিফ আকবর

মানবিকতা মনুষ্যত্বের অলঙ্কার : আসিফ আকবর

শুক্রবার (২৭ জানুয়ারী) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে বিড়ালের সাথে তোলা নিজের একটি ছবি পোস্ট করেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাঝে মাঝে বিভিন্ন ধরণের গল্পও শেয়ার করেন আসিফ আকবর। এবার ক্যাপশনে তুলে ধরেন একটি গল্প।

আসিফ আকবর লিখেন, খুব ছোটবেলায় একটা কুকুরকে ঢিল মেরে ছিলাম, ইটটা মাথায় লাগায় কুকুরটা কিছুক্ষনের জন্য অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় পরেছিল। এদিকে ইফতারীর টাইম হয়ে যাচ্ছে, টিপু ভাইদের ফ্রিজে জমে থাকা বরফ নিয়ে বাসায় যেতে হবে। কুকুরটার জ্ঞান ফিরছেনা, চরম আত্মগ্লানিতে ভূগছি আর আল্লাহর কাছে দোয়া করছি এ যাত্রায় কুকুরটা যেন বেঁচে যায়। এবার বেঁচে গেলে আর কখনোই এদের মারবোনা।

এই সঙ্গীত শিল্পী লিখেন, রাতবিরেতে নিরাপত্তার কারনে পরবর্তীতে হাতে ইট নিয়ে ঘুরতাম ঠিকই, আশেপাশে ঢিল ছুড়তাম যেন সরাসরি গায়ে না লাগে। ঈশপের ছোট ছোট গল্পগুলো পড়ে শিশুমনে প্রানীর প্রতি মমত্ববোধ আরো বেড়েছে। তিনি লিখেন, আমার ছোট ছেলে রুদ্র নীলক্ষেতের জ্যামে গাড়ীতে বসে আছে, একজন স্টুডেন্ট এসে জানালায় নক করে এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার একটা কপি বিক্রি করতে চাচ্ছে। ছেলেটা যে দাম চেয়েছে, আট বছর বয়সী রুদ্র তার মা’কে সেটার ডাবল দাম দিতে বলেছে।

তিনি লিখেন, মানবিকতা মনুষ্যত্বের অলঙ্কার, আমি ছেলেদের ভিতর সেটা দেখেছি। খুব বৃষ্টিতে ভিজতে থাকা একটি বিপন্ন প্রায় বিড়াল ছানাকে সে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে এলো একদিন, যদিও বাসায় কুকুর বিড়ালের প্রবেশ ছিল নিষিদ্ধ। বিড়াল ছানাটা পরে নিওমোনিয়া হয়ে মারা গেল, ভার্সিটি পড়ুয়া রুদ্র’র কান্না দেখে আমি অবাক। সেটার অভাব পূরণ করতে আনা হলো আরেকটি বিড়ালছানা, সেই থেকে বিড়াল আসক্তি শুরু হলো পরিবারে।

বড় ছেলে রণ কিছুটা ইস্পাত কঠিন মানসিকতার উল্লেখ করে আসিফ লিখেন, একপর্যায়ে সে ঘুরে ঘুরে বিপন্ন ছানাদের উদ্ধার করা শুরু করলো, পরবর্তীতে দেখি সেগুলোকে ট্রেইন্ড করে বন্ধুদের কাছে মাইগ্রেট করছে। রণ কানাডা যাওয়ার আগে কিছু বিড়াল মাইগ্রেট করে যেতে পারেনি, এগুলো বাসায়ই থাকে। আমিও ছেলের মেমোরিজ হিসেবে ওদের যত্ন নেয়াটাকে প্রায়োরিটি দেই, এরা আবার রঙ্গনের খেলার সাথী। আমার মহল্লায় থাকে কুকুর টমি, কিছু অসভ্য মানুষ বাইরে থেকে এসে খামোখাই ওকে গাড়ী চাপা দিয়ে পা ভেঙ্গে দেয়, ওর বান্ধবীর লেজ কেটে দিয়েছে।

সবশেষে আসিফ লিখেন, অফিসের সামনে থাকে গর্ডন নামে একটা কুকুর, তাকেও অযথা অত্যাচার করে মানুষ। কালোবিড়াল দেখলে গাড়ীচাপা দিয়ে মেরে ফেলে কুসংস্কারাচ্ছন্ন বর্বর মানুষ। আর এভাবেই মানুষের প্রতি মানুষের হিংস্রতার হাতে খড়ি হয়, সেটার প্রভাব তো চোখের সামনেই। আমার কোলে বসে আছে এমিলি পুন্টি। গত শীতের শেষের দিকে পিচ্চি পুন্টি আমার গাড়ীর নীচে মিউমিউ করছিলো, এখন তো পুন্টিকে ছাড়া আমাদের চলেইনা। নিরীহ প্রানীর প্রতি নৃশংসতা বন্ধ করুন, আল্লাহ সৃষ্টির প্রতি রহম করুন, আল্লাহ নিশ্চয়ই আপনার প্রতি রহমত বর্ষণ করবেন। ভালবাসা অবিরাম….

Advertisement