Homeসব খবরক্রিকেট‘দলে ফিরতে কঠিন পরিশ্রম করে যাচ্ছি’

‘দলে ফিরতে কঠিন পরিশ্রম করে যাচ্ছি’

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এখন অনেক পরিণত। ভালো পারফর্ম ছাড়া দলে সুযোগ পাওয়া মুশকিল। চলতি প্রিমিয়ার লিগে ভালো করে যাচ্ছি। আরো বেশ কিছু ম্যাচ বাকি রয়েছে। আশা করছি, প্রিমিয়ার লিগের ফারফর্ম জাতীয় দলে ঢুকতে সহায়ক হবে।

ঈদ-পরবর্তী গতকাল রোববার (২৪ এপ্রিল) সাইফ উদ্দিন তার শ্বশুরবাড়িতে আসেন। সাহেরখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।

মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন সম্প্রতি বিয়ে করেছেন। তিনি মিরসরাই উপজেলার ১৬ নম্বর সাহেরখালী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড-পূর্ব সাহেরখালী গ্রামের কাজী রেফায়েত হোসেন ও সাহেদা চৌধুরীর কন্যা কাজী ফাতেমা তুজ জারার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

ঈদ-পরবর্তী তার শ্বশুরবাড়িতে একান্ত আলাপচারিতায় ক্রিকেট ও ক্রিকেটের বাইরে বিভিন্ন কথা উঠে আসে।

প্রশ্ন: আপনি মিরসরাইয়ের জামাই হিসেবে আজকে সংবর্ধিত হলেন, আপনার অনুভূতি কী?

সাইফুদ্দিন : আসলে অনুভূতি প্রকাশ করার মতো না (হাসি) একটু অন্য রকম, এর আগেও আসলে নানা কারণে অনেক সংবর্ধনা পেয়েছি। বিয়ের পর জামাই হিসেবে এই প্রথম। আসলে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। অবশ্যই ভালো লেগেছে।

প্রশ্ন: আপনি জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করলেন এবিষয়ে আপনার অনুভূতি কী? এবং সম্ভবত এই প্রথম আপনি শ্বশুরবাড়িতে এসেছেন, এবিষয়ে আপনি যদি কিছু বলতেন…

সাইফুদ্দিন : সত্যি মনোমুগ্ধকর! প্রত্যেকটা মানুষই শ্বশুরবাড়িতে আসা এটা একটা অন্য রকম অনুভূতি কাজ করে, আমিও ব্যতিক্রম নই। আর সত্যি বলতে এখানকার পরিবেশে খুবই মনোমুগ্ধকর।

প্রশ্ন: সামনে বিশ্বকাপ, এই বিশ্বকাপে আপনার পরিকল্পনা কী, এবং বিশ্বকাপে দলে ফেরার বিষয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?

সাইফুদ্দিন : অবশ্যই আপনারা জানেন যে সাদা বলে অনেক বেশি প্রতিযোগিতা, এই মুহূর্তে দলে সবাই পারফর্ম করছে, এই ক্ষেত্রে আমার কিছুটা চ্যালেঞ্জিং আমার জন্য। ইনশাআল্লাহ। একজন অলরাউন্ডার হিসেবে বাংলাদেশে সব সময় একটা স্পেস থাকে। ইনশা-আল্লাহ, এই জায়গাটা আমি ধরে রাখতে চাই। যেহেতু ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ চলছে, সেখানে নিজেকে আরো ছাড়িয়ে যেতে চাই, টপ শিকারিদের একজন হিসেবে থাকা আমার লক্ষ্য। যেহেতু আরো পাঁচটা ম্যাচ হাতে আছে আমি চেষ্টা করব আমার সেরাটা দেয়ার এবং বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নেয়ার।

প্রশ্ন: ঈদ আমাদের জীবনে অন্যরকম অনুভূতির বিষয়, এবার আপনি নতুন বিয়ে করেছেন, বিয়ের প্রথম ঈদ আপনি কিভাবে কাটিয়েছেন?

সাইফুদ্দিন : সত্যি বলতে ব্যতিক্রম কিছু না (হাসি) নরমালি… আগে হয়তো বা মা, ভাই ফ্যামিলির সবার সাথে ঈদ করতাম গ্রামের বাড়িতে যেয়ে, এই ঈদে যেহেতু ঘরে নতুন অতিথি এসেছে তো আলহামদুলিল্লাহ প্রত্যেকটা মানুষের জন্য একজন লাইফ পার্টনার সহধর্মিণী সে যদি সাপোর্টি হয় তা হলে তা হবে অন্যরকম। তবে যদি আরেকটু উপভোগ করতে পারতাম, কোথাও ঘুরতে যেতে পারতাম। যদিও আমাদের টাইট সিডিউল। ঈদের পর পরই আবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে বাকি ম্যাচগুলো হবে, তো সুযোগ নেই। ঢাকা ফিরতে হবে কর্মব্যস্ততার জন্য। ইনশা-আল্লাহ! ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শেষ হলে তখন হয়তোবা কোথাও ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ হবে।

প্রশ্ন: আপনি অনেক ব্যস্ত একজন মানুষ, একজন ব্যস্ত মানুষকে পেয়ে আপনার সহধর্মিণী কিভাবে এই বিষয়টা আপনাকে সাপোর্ট করে, যে খেলা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়?

সাইফুদ্দিন : আসলে তার খুব বেশি চাহিদা নেই, কোথাও ঘুরতে যাওয়া কিংবা কোথাও ঘুরতে যাওয়ার স্পেসেফিক কোনো চাহিদা নেই তার। এটা আসলে একজন ক্রিকেটারের জন্য বড় পাওয়া। সে নিজ থেকে কিছু বলেনি, সব আমার উপর ছেড়ে দিয়েছে। যখন আমি সময় পাবো তখনই যাবে। এটা আমার জন্য সব চেয়ে বড় সাপোর্টের।

প্রশ্ন: যারা আপনার মতো ক্রিকেটার হতে চায়, সাইফুদ্দিন হতে চায় তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী? মানে গ্রাম থেকে যেমন আপনি আজকের বক্তব্যেও (সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য) বললেন যে ক্রীড়াকে গুরুত্ব দেয়া। নতুন ক্রিকেটার হতে হলে নতুন ক্রীড়াবিদ হতে হলে কী কী করা উচিত আপনার পরামর্শ কী?

সাইফুদ্দিন : আপনি যদি দেখেন, আসলে আমাদের আগেও যারা ক্রিকেটার ছিলো তাদের মধ্যে অনেকে মধ্যবিত্ত পরিবার কিংবা গ্রাম থেকে উঠে এসেছে। গ্রামে ক্রিকেট খেলে উঠে এসেছে। ধনী ফ্যামিলি থেকে কিন্তু ওরকম খুব বেশি ক্রিকেটার উঠে আসেনি। যার কারণে একটা সুযোগ তো আছে। আমাদের বাংলাদেশে আনাচে কানাচে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে। ওরা সময় এবং সুযোগের অভাবে তার প্রতিভা বিকাশ করতে পারে না। এজন্য প্রতিটা স্কুলে যদি আপনার মনে করেন বার্ষিক কোনো টুর্নামেন্ট বা ক্রীড়ার আয়োজন করে তাহলে এখান থেকে কেউ না কেউ সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালের মতো কিংবা মাশরাফির মতো বের করা সম্ভব।

আমি সাইফুদ্দিন অনেক ছোট। আমার দেশের যারা লিজেন্ড ক্রিকেটার আমি তাদের কথায় বললাম। কারণ আপনি যদি দেখেন নড়াইল, মাগুরা এসব জায়গা থেকে যদি সাকিব, মাশরাফি ভাই উঠে আসতে পারে তাহলে ফেনী বা চিটাগাং এই দুটা জায়গার ছেলেরা অনেক প্রতিভাবান। এখানকার ছেলেরা অন্যন্য জেলার ছেলেদের থেকে অল্পতে অনেক বেশি ক্যাপচার করতে পারে। আমি মনে করি, এখানকার সুযোগ সুবিদা আমি মনে করি অনেক বেশি কম। স্কুল কিংবা পাড়া মহল্লার দায়িত্ববান ব্যক্তিরা যদি এদিকে একটু নজর দেন তাহলে হয়তো সামনে গর্ব করার মতো আরো অনেক তামিম, সাকিব, মাশরাফিকে খুঁজে পেতে পারে।

প্রশ্ন: জাতীয় দলে নিজের স্থান আবার ফিরে পেতে কি করছেন আপনি?

সাইফুদ্দিন : চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ। এই লীগে ঐতিহ্যবাহী টিম আবহনীর হয়ে খেলছি। আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো যাচ্ছে। বিপিএলটা যদিও মনমতো যায়নি। এখানে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ভালো যাচ্ছে। আমাদের লাস্ট ১১টি ম্যাচে আমরা ১০টিতে হয় পেয়েছি। আসরে দ্বিতীয় উইকেট শিকারি ছিলাম। ব্যাটিংয়েও টুকটাক রান পেয়েছি। আমাদের আরো পাঁচটি ম্যাচ বাকি আছে। সুপার লীগের বাকি ম্যাচগুলো আগামী ৫ মে থেকে আবারো শুরু হবে। ইনশাআল্লাহ আমি যদি ভালো করতে পারি, টপ ১ম অথবা ২য় এর মধ্যে থাকতে পারি।

প্রশ্ন: আপনার দলে ফেরার জন্য এই মুহূর্তে আপনার চ্যালেঞ্জ কী?

সাইফুদ্দিন : অবশ্যই পারফরম্যান্স। প্রত্যেকটা ক্রিকেটারকে দলে সুযোগ পাওয়ার চেয়ে জায়গাটা ধরে রাখার জন্য পারফরম্যান্সের কোনো বিকল্প নেই। এর আগে একটা সিরিজে আমি খারাপ করেছি, সে জন্য বাদ পড়েছি। তো জাতীয় দলে টিকে থাকতে হলে পারফরম্যান্সের কোনো বিকল্প নেই। ফিটনেস আর পারফরম্যান্স ধরে রাখতে হবে।

সূত্র: নয়া দিগন্ত।

Advertisement