Homeঅন্যান্যমরিচ-পান্তায় সেহরি-ইফতারি করছেন কড়াইল বস্তির বাসিন্দারা

মরিচ-পান্তায় সেহরি-ইফতারি করছেন কড়াইল বস্তির বাসিন্দারা

রাজধানীর কড়াইল বস্তি। আশপাশের ঘরের সবাই যখন ইফতার তৈরিতে ব্যস্ত। তখন ঘুরে ফিরে সময় কাটাচ্ছেন যমুনা বেগম। কারণ ইফতার তৈরির মতো কিছুই নেই তার ঘরে। ইফতারির যখন দুয়েক মিনিট বাকি তখন তিনি বের করলেন নিজের ইফতারি। আজানের শব্দ শুনেই শুরু করলেন গামলা ভর্তি পান্তাভাত আর কাঁচামরিচ গেলার চেষ্টা। যদিও তার মুখাবয়ব বলে দিচ্ছিল, চরম কষ্ট নিয়ে এই খাবার খাচ্ছেন তিনি।

যমুনা বেগমের অসুস্থ স্বামী রাজধানীর রাস্তায় ভিক্ষা করেন। আজও বেরিয়েছেন ভিক্ষার থালা নিয়ে। স্বামী ভিক্ষা করে ইফতারি নিয়ে আসবেন সেই আশায় এতক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন তিনি। কিন্তু ইফতারির আগ মুহূর্তেও স্বামী না ফেরায় ধরেই নিয়েছেন আজ ইফতারির ব্যবস্থা হয়নি। তবে ব্যবস্থা হবে এমন নিশ্চয়তা ছিলোও না। তাই আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলেন পান্তা ভাত নিয়ে। অনেক কষ্টে গলধঃকরণ করছিলেন সেই পান্তা ভাতই।

যদিও একটু পরে প্রতিবেদকের আনা সামান্য ইফতারে মুখে হাসি ফোটে তার। যুক্ত হন পাশের ঘরের অভুক্তরাও। সবাই মিলে আনন্দে গ্রহণ করেন ইফতার। যমুনা জানান, প্রতি বছর এভাবেই রমজান কাটে তাদের। মরিচ-পান্তায়ই চলে সেহরি-ইফতার।

ইফতার শেষে কথা বলে যখন বের হবো তখনি একটি পলিথিনভর্তি ইফতার নিয়ে ঘরে প্রবেশ যমুনা বেগমের বয়োবৃদ্ধ স্বামী কফিল উদ্দিনের। জানান, গাউসুল আজম মসজিদে মুসল্লিদের খাওয়ার পর এই ইফতার চেয়ে এনেছেন তিনি। দেরি হয়ে যাওয়ায় অপরাধী চেহারা নিয়ে ঘরে ফেরা কফিল উদ্দিন স্ত্রী-সন্তান ইতোমধ্যে প্রতিবেদকের আনা খাবার খেয়েছে শুনে তৃপ্তির সাথে ইফতার করেন নিজেও।

কোনোমতো ইফতারের ব্যবস্থা করলেও সেহরিতে কি খাবেন তা নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলেন কফিল উদ্দিন। অর্ধবেলা ভিক্ষা করে পেয়েছেন মাত্র ৬০ টাকা। দ্রব্যমূল্যে ঊর্ধ্বগতির বাজারে এ দিয়ে হবে না কিছুই। তাই আল্লাহ ভরসা বলেই চালিয়ে নিতে চান তিনি।

শুধু যে কফিল-যমুনার পরিবারে এমন সংকট তা নয়, রাজধানীর অভিযাতপাড়া গুলশান-বনানীর মাঝের এই বস্তিতে আরও অনেক ঘরেই দেখা গেছে একই অবস্থা। সংকটে থাকলেও সরকারি-বেসরকারি কোনো সুবিধাই কপালে জুটে না বলে দাবি এই নিম্নবিত্ত মানুষদের। এমন পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল নাগালে রাখার পাশাপাশি সংকট মোকাবিলায় সরকারসহ দেশের বিত্তবানদের বিশেষ সুদৃষ্টি কমনা করেন নিম্নবিত্ত মানুষেরা।

ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন:

সূত্র: বাংলাভিশন।

Advertisement